ব্রিজের নিচে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছে : প্রশাসন কি নজর দেবে?

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮

ব্রিজের নিচে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছে : প্রশাসন কি নজর দেবে?

Manual6 Ad Code

জাবেদ এমরান :: সিলেটে আসা ভিআইপিদের বিশ্রামেরস্থল সিলেট সার্কিট হাউজ সড়ক সংলগ্ন ক্বিন ব্রিজের নিচে প্রকাশ্যে চলছে মাদক কেনাবেচা ও সেবন। দিনের আলোয় দল বেঁধে গাঁজা সেবন চললেও আঁধার নামলে ইয়াবাসেবীদের ঢল নামে। দেখা মেলে সাজসজ্জায় পরিপাটি নানা বয়সি দেহপসারণীর। রাত বাড়ার সাথে সাথে খদ্দরদের বারে ভীড়। এরা অধিকাংশ নিন্ম শ্রেণীর পুরুষ ও উঠতি বয়সি যুবক। অনেকে ব্রিজের নিচে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠে।

Manual8 Ad Code

সার্কিট হাউজকে ঘিরে প্রশাসনের বড়কর্তাব্যক্তিদের সর্বক্ষণ ক্বিন ব্রিজ সংলগ্ন সড়ক ব্যবহার করলেও তাদের চোখ এ সব এড়িয়ে যায়। আর মাত্র কয়েকশত ফুট দুরে সিলেট মেট্রোপলিটনের সবচেয়ে বড় থানা কোতয়ালী অবস্থিত। উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের অবাধ বিচরণ থাকে সর্বক্ষণ। থানা পুলিশ কোন এক রহস্যের কারনে দেখে না দেখার ভান করে এসব এড়িয়ে চলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, আলী আমজদের ঘড়ি ঘরের সামনে সারাদিন দীর্ঘ লাইন বেঁধে রিকসা নিয়ে চালকরা বসে থাকে। এখান থেকে কোন যাত্রীবহন না করে দিনের পর দিন কেন তারা বসে থাকে? এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজতে চলে দীর্ঘ অনুসন্ধান। সূত্রমতে এসব রিকসা চালকরা মূলত গাঁজা ব্যবসায়ি।

রিকসা চালকের আড়ালে তারা কাষ্ট ঘরের সুইপার পট্রি থেকে কেউ বা আবার দক্ষিণ সুরমার মেতরপট্রি থেকে পাইকারী গাঁজার পোতলা কিনে গভীর রাত পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করে। পাশাপাশি আরো একটি দল ফেরী করে ইয়াবা বিক্রি করে। তার মধ্যে রিকসায় বসে গাঁজা বিক্রি করে সুমন-১, সুমন-২, সেলিম, বিল্লাল, ইয়াসিনসহ অনেকে। আর পথশিশু সিয়াম, রিপন ও বুদু’র সাথে আরো কিছু লোক দীর্ঘদিন থেকে ইয়াবা বিক্রি করে যাচ্ছে। ষাটোর্ধ ব্যাক্তি বুদু ব্রিজের নিচের স্পটের ইয়াবার ডিলার। সে দীর্ঘকাল থেকে মাদক কেনাবেচার সাথে জরিত রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। থানা পুলিশের দু-এক ব্যাক্তিকে ম্যানেজ করে না কি চলছে অবৈধ যতকাজ।

গতকাল ঘুরে আরো দেখা যায়, ব্রিজের নিচে দুপুরে দল বেঁধে প্রকাশ্যে গাঁজার আসর বসিয়ে চলে গাঁজা সেবন। নি¤œশ্রেণীর এসব মাদকসেবী নির্ভয়ে গল্প করতে করতে গাঁজা সেবন করছিলো। সন্ধা নামলে নদীর পার জোরে বসে গাঁজার সাথে ইয়াবা সেবনেরও আসর। হাতের কাছে সহজে মাদক পাওয়ায় ও সেবনের নিরাপদ স্থান হওয়ায় ভদ্রলোকের কাপড় পরা মাদকসেবীরা গভীর রাত পর্যন্ত ভীড় জমান। আঁধারে বেঁড়ে যায় দেহপসারণীদের আনাগুনা। অনেকে আবার ব্রিজের নিচের গোড়ার অন্ধকারে, নদীর পারের আলোবিহীন স্থানে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয় বলে সূত্র জানায়।

Manual1 Ad Code

ব্রিটিশ আমলে তৈরি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ক্বিন ব্রিজ, সিলেটের দীর্ঘতম সুরমা নদী, জমিদার আলী আমজদ খানের ঘড়ি, পীর হাবিবুর রহমান লাইব্রেরী, সারদা হল, দৃষ্টিনন্দন সিলেট সার্কিট হাউস ও সুরমার পারকে ঘিরে লেগে থাকতো দিন রাত পর্যটকদের ভীড়। এখন সেই ভীড় আর নেই। দিনের বেলা গাঁজার ধোঁয়া আর বিশ্রী দুর্গন্ধে পথচারী ও পর্যটকরা নাক-মুখ চেপে চলাচল করতে দেখা যায়। সার্কিট হাউজের সামনে দৃষ্টিনন্দন নদীর পারে সময় কাটানোর জন্য আসা সাধারণ মানুষের সংখ্যা মাদকসেবী ও অপরাধীরাদের কারনে কমে গেছে বলে জানা যায়।

ক্বিন ব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তোলছিলেন সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থী দর্শনার্থী। কথা হয় তাদের সাথে। মাঝে মধ্যে নাক চেপে ধরে তারা জানান, এখানের ছবি তোলে অনেককে ফেসবুকে দিতে দেখে কাজের ফাঁকে কয়েক বন্ধু আসছি ঘুরতে, ছবি তোলতে। চারপাশে বিশ্রী দুর্গন্ধে আন ইজি ফিল করছি। ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বাক্ষী আলী আমজদের ঘড়ি ঘর, একাত্তরের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তের পর পুনরায় সংস্কার করে চালু হওয়া ক্বিন ব্রিজের এসব এলাকা এখন খারাপলোকে ভরে গেছে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ইতিহাসের স্বাক্ষী এসব স্থাপনা হারাচ্ছে আপন জৌলুষ। সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্যকে বাঁচাতে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে বিনোদনপ্রেমীরা আহবান জানান।

Manual4 Ad Code

এ সব বিষয় নিয়ে গতকাল সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘুষের সাথে তার অফিসে কথা হয়। তিনি এ প্রতিবেদকে সামনে রাখে সাথে সাথে মাদকের স্পর্টের বিরুদ্ধে ব্যবসা নিতে কঠোর নির্দেশ দেন। এখন অপেক্ষায় থেকে দেখার বিষয় কাজের কাজ কতটুকু হয়।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2018
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

সর্বশেষ খবর

………………………..