নেতৃত্ব ছাড়াই চলছে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ

প্রকাশিত: ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা আলোচনা-সমালোচনা। একাধিকবার সংগঠনটির উপর স্থগিতাদেশ এবং সর্বশেষ বিলুপ্তির খড়গ। আর এবার সামনে এসেছে নেতৃত্ব শূন্যতা। এ সবকিছু পেছনে ঠেলে যেন কোমর সোজা করে দাঁড়াতেই পারছে না সিলেট জেলা ছাত্রলীগ। দীর্ঘ প্রায় তিন মাস থেকে কারো নেতৃত্ব ছাড়াই চলছে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ। বলতে গেলে গত ১৯ অক্টোবর কমিটি বিলুপ্তির পর থেকে অভিভাবকহীন হয়ে আছে সিলেটের বৃহত্তম এ ছাত্র সংগঠনটি। ফলে ঝিমিয়ে পড়েছে সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এমনকি কমিটি না থাকায় বিগত বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যানার হাতে দেখা যায়নি জেলা ছাত্রলীগের কোনো নেতাকে। তাছাড়া কার্যক্রম না থাকায় প্রকৃত ও ত্যাগী ছাত্রনেতাদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থা এড়াতে শীঘ্রই কমিটি করার তাগিদ দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও অন্যন্য সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

এ ব্যপারে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জগলু চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংগঠন, এ সংগঠনের কমিটি না থাকা মানে বড় ধরণের স্থবিরতা, সংগঠনের অচলাবস্থা। যতো দ্রুত সম্ভব জেলা ছাত্রলীগের একটি ভালো কমিটি দরকার বলে তিনি দাবি জানান। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর সিলেটে ছাত্রলীগকর্মী ওমর মিয়াদ হত্যাকা-ের ঘটনায় সংগঠনটির বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর ১৯ অক্টোবর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ। তাতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। ছাত্রলীগের ওই কঠিন সিদ্ধান্তের কারণ সরাসরি না জানলেও মিয়াদ হত্যাকা-ের কারণেই যে এ শাস্তি তা সহজেই আঁচ করা যায়। এদিকে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার পর নতুন কমিটির জন্য বিভিন্ন পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার আহ্বান করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ ঘোষণায় ২৫ অক্টোবরের মধ্যে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এই জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতেও বলা হয়।

বিভিন্ন সুত্র মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন পদের জন্য সিলেট থেকে অন্তত তিন শতাধিক জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়ে। সেই জীবনবৃত্তান্ত এখনো জমা কিন্তু আর আলোর মুখ দেখেনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগ। এ অবস্থায় নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা। এমন হতাশার স্বীকার না করলেও জেলা ছাত্রলীগ নেতা জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান জানান- কমিটি না থাকার কারণে নেতা-কর্মীরা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে। নেতৃত্ববিহীন ছাত্রলীগ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও তাতে স্বাভাবিক প্রাণ চাঞ্চল্য নেই। সংগঠনকে চাঙ্গা রাখতে তিনি জেলা কমিটি ঘোষণার অনুরোধ জানান। একই অভিমত ব্যক্ত করেন জেলা ছাত্রলীগ নেতা কামরান আহমদ খান। দলকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে নেতৃত্বের প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ব্যপারে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ বলেন, প্রায় তিন মাস ধরে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই। ফলে দলের দায়িত্ব কেউ নিতে চাচ্ছে না। এছাড়া সংগঠনের স্বাভাবিক কোনো কার্যক্রমও নেই। জেলা ছাত্রলীগের স্থবিরতা কাটাতে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে যত শীঘ্রই সম্ভব কমিটি ঘোষণার দাবি জানান। অনেক নেতার মুখেই যখন কমিটির দাবি তখন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, জেলা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকলেও সংগঠন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না। কারণ, উপজেলা পর্যায়ে ছাত্রলীগ বেশ সুসংহত। তিনি, ভালো করে যাচাই-বাছাই করে একটু সময় নিয়ে হলেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে ভালো একটি কমিটি দেয়ার আহ্বান জানান। এদিকে বিগত প্রায় আড়াই মাস থেকে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি না দেয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশার পাশাপাশি ক্ষোভও রয়েছে। তবে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় কেউই এ নিয়ে মুখ খুলছেন না। কমিটি তো নেই, কবে কমিটি দেয়া হবে এ বিষয়েও জানেন না কেউ।

এ ব্যপারে সাবেক ছাত্রনেতা ও ছাত্রলীগের অভিবাবক সংগঠন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, কমিটির শূন্যতা থাকলে সংগঠনে কিছুটা স্থবিরতা দেখা দে-ই। সময়মতো কমিটি দেওয়া সংগঠনের জন্যও ভালো। তবে কেন দেরি হচ্ছে এ ব্যপারেও তিনি অবগত নন বলে জানান। জেলা ছাত্রলীগের আরেক অভিভাবক সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, কমিটি থাকলে তো দল চাঙ্গা থাকে। এ ছাড়া কমিটি থাকা দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ব্যপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..