গাজীপুরে ছেলের বন্ধুর সাথে যা করল এই মহিলা। এলাকা জুড়ে তোলপাড

প্রকাশিত: ২:০১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭


Manual8 Ad Code

ক্রাইম ডেস্ক : বয়স্ক স্বামীর সাথে বাসর হওয়ার পর আমি যা দেখে অজ্ঞান হয়ে যাই! অতঃপর
আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমি ক্লাস ৭ এ ছিলাম। খুব ছোট বলতে গেলে। বিয়েটা কী বুঝতাম না। স্বাভাবিকভাবেই আমার বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু বিয়ের পর বুঝতে পারলাম একজন বয়স্ক লোকের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। তার বয়স ৩৬ বছর আর আমার ১৪।
সবাই খুব অত্যাচার করতো, মারতো, বকা দিত। আম্মুকে আর পরিবারকে অনেক মিস করতাম। এমনকি বিয়ের পর আমাকে বাড়িতেও আসতে দেয়নি। খুব ছোট ছিলাম তাই খুব একটা ঘরের কাজ পারতাম না। আমার স্বামী যিনি ছিলেন তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার পর আমি প্রায় ৫দিন কোমায় ছিলাম। কিন্তু যখন জ্ঞান ফিরে তখন শুনি আমার শ্বশুরবাড়ির কেউ আমাকে দেখতে আসেনি, এমনকি আমার স্বামীও না।
আমার সব বই পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিলো। আর ছোটবেলা থেকে আমার কবিতা, ছোট গল্প আর যা মনে আসতো তা কবিতার ভাষায় লেখার অভ্যাস ছিলো। আমার উপর যেসব অত্যাচার হত তা আমার মাথায় সবসময় ঘুরতো। তাই একদিন বিকেলে অবসর সময়ে আমি এসব লিখছিলাম আমার কবিতার খাতায়। আমার ননদ যিনি ছিলো, উনি দেখে ফেলেছিলো যে আমি কী সব লিখছি। উনি ভেবেছিলেন যে আমি উনাদের নিয়ে বিচার দিয়ে বাড়িতে চিঠি লিখছি। এই কথা আমার স্বামী জানার পর আমাকে অনেক মারধর করে। তখন আমি প্রেগন্যান্ট ছিলাম ৩ মাসের।
অত্যাচারের কারণে আমার প্রচুর ব্লিডিং হয়। পরে বুঝতে পারি যে বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। এর কিছুদিন পর আমার ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার কাকা আর গ্রামের মেম্বার মিলে ডিভোর্সটা করায়। ডিভোর্সের পর আমি আমার পড়া শুরু করতে চাই কিন্তু কেউ আমাকে সাহস দিচ্ছিলো না। আমার খুব কষ্ট লাগতো এই ভেবে যে আমি তো পালাইনি, এমনকি খারাপ কোন কাজ করিনি, শুধু পরিবার যা চেয়েছে তাই করেছি। তাহলে কেন আমাকে এত বদনাম পেতে হচ্ছে। আমি অনেক কষ্ট করে সবাইকে অনুরোধ করে ক্লাস ৮-এ ভর্তি হই। আমি আমার শ্বশুরবাড়ি ৬ মাস ছিলাম তাই ক্লাস সেভেনের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে হয়েছিলো। আমার মা বাবা, নানু, নানা সবাই প্রচুর উৎসাহ দিয়েছিলো। কিন্তু আমার ছোট কাকা কাকি প্রচন্ড মানসিক অত্যাচার করেছিলো।
এখন আমি মেডিকেলে পড়ছি। অনেক যুদ্ধ করেছি, এখনও করছি কিন্তু মনের ভেতর কোথাও যেন একটা কষ্ট থেকেই গেছে। মা সারাদিন বকে কারণ আমি দেখতে অতটা সুন্দর নই এবং কোন বিয়ের প্রপোজাল আসেনা, যার কারণে দিনরাত আমি কথা শুনতে হয়। আমার কোন অধিকার নেই এই পরিবারে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করার। আমার ছোট যে বোন, ও খুব সুন্দর। ও এখন মাত্র ক্লাস ৭-এ পড়ে। ওর সাথেও আমার পরিবার ঠিক একই কাজ করতে চাইছে যেই জঘন্য কাজ ওরা আমার সাথেও করেছিলো। ঐ কাজটা আমি করতে দেইনি যার কারণে এখন মানসিক কষ্ট আমাকে প্রতিদিন পেতে হচ্ছে। আমি প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণা অনুভব করছি। আমি এটা থেকে বেরোতে চাই।
আমার কী করা উচিত? আমি স্বাভাবিক জীবন চাই। আমি চাইনা কেউ বলুন যে- দেখো একবার বিয়ে হয়েছে। ডিভোর্স প্রাপ্ত মেয়ে। একে কেউ বিয়ে করবেনা।”
পরামর্শ:
সত্যি কথা বলি আপু, তোমার আমার পরামর্শের কোন প্রয়োজন নেই। তুই এখন আর ভিকটিম নও, তুমি সারভাইভার! মেডিকেল সায়েন্সে পড়ছো, নিঃসন্দেহে
তুমি অত্যন্ত মেধাবী একটি মেয়ে। আমি কী বলছি বুঝতে তোমার একটুও অসুবিধা হবার কথা নয়।
তুমি যা করেছো নিজের জীবনের সাথে, একেবারে ঠিক কাজ করেছো। একটি বাচ্চা মেয়েকে কতটা অত্যাচার করা হলে যৌন সম্পর্কের পর সে কোমায় চলে যেতে পারে, এই ব্যাপারটি কল্পনা করেও আমি শিউড়ে উঠছি। তোমার ভাগ্য আসলেই ভালো যে সেই জানোয়ারের সাথে বেশিদিন সংসার করতে হয়নি তোমাকে। কত মেয়ে উপায় না পেয়ে দিনের পর দিন এমন জানোয়ারের সাথে সংসার করে যাচ্ছে, তাঁদের লালসার শিকার হচ্ছে। আল্লাহ তোমাকে বাঁচিয়েছেন, তুমি মুক্তি পেয়ে গিয়েছ।
লেখাপড়া শুরু করে যে তুমি এতদূর এসেছো, এটা বিশাল প্রশংসনীয় ব্যাপার। বিশেষ করে তোমার পরিবারের মানসিকতা যেখানে এত প্রাচীন, সেখানে তোমার এই চেষ্টা অবিস্মরণীয়। কিছু মনে করো না আপু, তোমার পরিবার আসলেই প্রাচীন মানসিকতার অধিকারী। পাশ করে বের হবার পর একজন ডাক্তার হবে তুমি, কজন হতে পারে এটা? সেই ডাক্তার মেয়ের পরিচয় কিনা তাঁরা নির্ধারণ করতে চায় কেবল বিয়ে দিয়ে!! ক্লাস সেভেনের ছোট্ট মেয়েগুলিকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয়। ছি ছি!
শোন আপু, বিয়েটাই মানুষের জীবনের শেষ কথা নয়। একমাত্র সত্যও নয়। বিয়ে একটা চয়েস, চাপিয়ে দেয়া কোন সিদ্ধান্ত নয়। হওয়া উচিত না। আমি মনে করি না এখনই তোমার বিয়ে করা উচিত বা বিয়ে করাটাই তোমার জন্য ভালো হবে। সত্যি বলতে কি, হবে না। জীবনে অনেক বড় একটা সুযোগ পেয়েছ তুমি বড় হবার, সেটা কাজে লাগাও। মন দিয়ে লেখাপড়া শেষ করো, দাঁতে দাঁত চেপে। একজন সফল চিকিৎসক হয়ে যাবার পর আসলে তোমার জীবনের কোন সমস্যাই আর সমস্যা থাকবে না। পরিবার তখন তোমাকে সমীহ করে চলবে, বিয়ের জন্য খোঁটা দেবে না কেউ। যদি বিয়ে করতে চাও আবার, সুপাত্রের কোন অভাবও হবে না।
একটি জিনিস মনে রাখবে, ডিভোর্স কোন পাপ নয়। ডিভোর্স জীবনে হতেই পারে। কেউ তোমাকে ডিভোর্সি বললেই সেটা গালি হয়ে যায় না। বিয়ের মত ডিভোর্সও মানব সম্পর্কের খুবই পরিচত একটা অধ্যায়। তুমি লোকটাকে ডিভোর্স দিয়েছ, দিয়ে ভালো করেছ। এই কথাটা আগে নিজের মনে গ্রহন করে নাও। তুমি নিজে ডিভোর্সি মানুষকে অচ্ছুৎ ভাবা বন্ধ করো। দেখবে অন্য কারো কথা গায়ে লাগছে না।
ছোট বোনের জন্য তুমি যা করেছো, সেটা একদম পারফেক্ট একটি উদ্যোগ। নিজের বড় বোন হবার কর্তব্য আসলেই তুমি পালন করেছো। এখন তোমার সবচাইতে বড় কাজ নিজের বোনটিকে দেখেশুনে রাখা, যেন তাঁর সাথেও এই অন্যায় হতে না পারে। বোনটিকে উন্নত মানসিকতার একজন মেয়ে হিসাবে গড়ে তোলাও তোমারই কর্তব্য। বোনের দিকে তাকিয়ে হলেও দাঁতে দাঁত চেপে নিজের ক্যারিয়ার গোছাও। এই নরক যন্ত্রণা থেকে বের হবার জন্য তোমার পেশাই তোমার একমাত্র পথ। নিজের পেশায় সফল হলে এই সমাজ তোমাকে উঠতে বসতে সালাম ঠুকবে।
আরেকটি কথা আপু, নিন্দুকের কাজই নিন্দা করা। কেউ কিছু বললে আসলে তাঁর নিজের মুখটাই নষ্ট হয়, তোমার কিছু হয় না। তাই একটু কষ্ট করে হলেও কারো কথা পাত্তা না দেয়ার অভ্যাসটা করে ফেলো। কে কী বলল, তাতে কিছুই যায় আসে না। কারণ বিপদে তাঁরা কেউ তোমাকে বাঁচাতে আসবে না।

Manual8 Ad Code

 

Manual7 Ad Code

 

বি: দ্র : ই্উটিউব থেকে প্রকাশিত সকল ভিডিওর দায় সম্পুর্ন ই্উটিউব চ্যানেল এর ।
ভিডিওটি সব লিখার নিচে
এর সাথে আমরা কোন ভাবে সংশ্লিষ্ট নয় এবং আমাদের পেইজ কোন প্রকার দায় নিবেনা।
ভিডিওটির উপর কারও আপত্তি থাকলে তা অপসারন করা হবে। প্রতিদিন ঘটে যাওয়া নানা রকম ঘটনা আপনাদের মাঝে তুলে ধরা এবং সামাজিক সচেতনতা আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ।

– সংগ্রহিত

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..