সিলেট ৮ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রজব, ১৪৪২ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:০৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
Sharing is caring!
সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার লামা চন্দরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই বিতর্কিত সহকারী শিক্ষিকা নার্গিস বাহার এর বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার গোলাপগঞ্জের চন্দরপুর গ্রামের মৃত মুক্তাদির আলীর পুত্র ছয়ফুল আলম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালত, সিলেটে এ মামলা দায়ের করেন। গোলাপগঞ্জ সি.আর. মামলা নং- ২৮৬/২০১৭ইংরেজি। ছয়ফুল আলম তার তৃতীয় শ্রেণি পড়–য়া ছাত্র সোহাগকে বিদ্যালয়ে অমানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে এ মামলায় দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, একই উপজেলার লামা চন্দরপুর গ্রামের মাহমুদুর রহমানের পুত্র নিজাম উদ্দিন, মৃত রকিব আলী পুত্র সামছুর রহমান, মো. ছোবহান লেংরা’র পুত্র রেজা, মাহমুদুর রহমানের পুত্র সেলিম উদ্দিন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, চন্দরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মো. সোহাগ। গত ৩ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সোহাগকে সামান্য পড়ার ভুলের কারনে বেধরক মারধর করেন শিক্ষিকা নার্গিস। তার হাত, পা, ঘাড়ে বেত্রাঘাত সহ অমানসিক নির্যাতন করেন। নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে দৌড়ে স্কুল থেকে বাহির হতে চাইলে মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা তাকে টানাহেচরা করে। এসময় নার্গিস আক্তার সোহাগকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে গেইটে প্রচন্ড আঘাত করলে তার ডান হাতের দুটি আঙ্গুলে রক্তাক্ত জখম হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, শিক্ষিকা নার্গিসের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলা রয়েছে। মামলা নং-১৫০/১৬ জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে বিচারাধীন আছে।
এব্যাপারে মামলার বাদী ছয়ফুল আলম বলেন, তিনি অত্র স্কুলের ম্যানেজিং কমেটির একজন সদস্য। ঘটনার ব্যাপারে তিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুর রাহমানের কাছে গেলে প্রথমে তিনি উপযুক্ত বিচার করে দিবে বলে আমাকে আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কোন বিচার না করে শামসুর রহমান তার লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী অস্ত্রবাজ নিজাম, সেলিম ও রেজাকে দিয়ে ছয়ফুল আলমকে প্রান নাশের হূমকি দিতে থাকে এবং তার বাচ্ছাকে স্কুলে না যাওয়ার জন্য সরাসরি নিষেধ করতে থাকে। লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা এলাকার চিহ্নিত অস্ত্রবাজ। তাদের বিরুদ্ধে সিলেট জর্জকোর্টে ৭৯/২০০২ অস্ত্র আইনের, ১৯-এর(ক)ও(চ) ধারায় একটি অস্ত্র-মামলা বিচারাধীন আছে। ২ নং আসামী ‘নিজাম, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত মদতদাতা।
বাদী সাইফুল ইসলাম আরোও বলেন, শিক্ষিকা নার্গিস বহিরাগত লোক ‘নিজামের’ সাথে প্রতিনিয়ত অফিস রুমে বা স্কুলের ছাদের উপরে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিতে থাকেন। অপরদিকে ক্লাসের বাচ্চারা পড়াশুনা বন্ধ করে হৈ-হুল্লোড়, মারামারি করে সময় কাটিয়ে যখন তখন বাড়িতে চলে যায়। এব্যাপারে তিনি নার্গিস বাহারকে বিভিন্ন প্রতিবাদ করলে নার্গিস ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে এ নির্যাতন করেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষিকা নার্গিস ও নিজামের বিরুদ্ধে সিলেট জর্জ কোর্টে ১৫০/১৭ নং-এ আরেকটি শিশু নির্যাতন মামলা বর্তমানে বিচারাধীন আছে। প্রায় দেড় বছর পূর্বে একই শিক্ষিকা নার্গিস অত্র এলাকার জনৈক ইসলাম উদ্দিনের মেয়ে শিশু ‘নাসিমা’কে ডান চোখে আঘাত করার কারনে উল্লেখিত শিক্ষিকা নার্গিস ও নিজাম সহ চার (৪) জনের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন আইনে উক্ত মামলাটি রুজু করা হয়েছিলো। তখন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানাও জারি হয়েছিলো।
মামলার এডভোকেট খায়রুল আলম খোকন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষিকা নার্গিস বাহারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, মামলা একটি কেন আরো ২/৪টি মামলা হলেও আমি প্রস্তুত আছি।
………………………..
Design and developed by best-bd