কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষ: পুরুষশূন্য হাসনাবাদ গ্রাম, মামলা করারও লোক মিলছে না

প্রকাশিত: ৮:১৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০২৩

কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষ: পুরুষশূন্য হাসনাবাদ গ্রাম, মামলা করারও লোক মিলছে না

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ মসজিদে কাঁঠাল নিলামকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে চারজন নিহত হওয়ার পর দুই পক্ষের পুরুষেরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন। মামলা করার লোক নেই, তাই ঘটনার দুই দিন পরও মামলা হয়নি। পুলিশ মামলা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় যাননি।

এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বুধবার বলেন, ‘এখনো মামলা হয়নি। বলা যায়, পুলিশ অভিযোগ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু দুই পক্ষের লোকজনই পলাতক। আমরা চেষ্টা করছি। আসলে অভিযোগকারী পাওয়া যাচ্ছে না।’ তবে এ বিষয়ে পুলিশ আজকেই একটা সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক হাসনাবাদ গ্রামের এবাদুল হকসহ আটজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আরও কয়েকজন আটক আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

হাসনাবাদ ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে দুই পক্ষ এবং তাদের সমর্থক পরিবারগুলোর পুরুষেরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন বাড়িতে শুধু নারী ও শিশুরা আছে। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের লাশ গতকাল মঙ্গলবার দাফন করেছেন আশপাশের গ্রামের লোকজন।

Manual6 Ad Code

হাসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মকসুদ আলীর স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, তাঁর স্বামী ও দুই ছেলে ঘটনার পর থেকে বাড়িছাড়া। তাঁরা কোথায় আছেন রাজিয়া জানেন না।

Manual4 Ad Code

পাশের জামলাবাজ গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ আহমদ বলেন, ‘পুরো গ্রামই এখন নীরব। মনে হয় কোনো মানুষ নাই। বাড়িঘর খালি। তবে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে।’

গত সোমবার সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে মালদর আলী ও দ্বীন ইসলাম পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন নিহত হন। আহত হন ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হাসনাবাদ গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪০), বাবুল মিয়া (৫০), শাহজাহান মিয়া (৫০) ও মোখলেছুর রহমান (৬২)। এর মধ্যে দ্বীন ইসলাম পক্ষের লোক নজরুল ও বাবুল। আর মালদর মিয়া পক্ষের লোক শাহজাহান ও মোখলেছ।

Manual1 Ad Code

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর একজনের দান করা একটি কাঁঠাল নিলামে বিক্রি হয়। ২৫০ টাকা সর্বোচ্চ দরে এটি কেনেন মালদর আলীর পক্ষের খসরু মিয়া। পর মুহূর্তেই দ্বীন ইসলামের পক্ষের আবদুল বাহার সবাইকে থামিয়ে দেন। তার দাবি, নিলাম ডাক নিচুস্বরে বলায় তিনি শুনতে পারেননি। তিনি কাঁঠালটি আরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে আগ্রহী। তাই আবার নিলাম ডাকের দাবি করেন তিনি। এ নিয়ে খসরু ও বাহারের মধ্যে একপর্যায়ে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে মুরব্বিরা তাঁদের শান্ত করে বিদায় করে দেন।

এরপর এ নিয়ে গ্রামের দ্বীন ইসলাম ও মালদর আলীর পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো ঝগড়ায় না জড়ানোর জন্য দুই পক্ষকেই অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। সোমবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে চারজনের মৃত্যু হয়।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..