দোয়ারায় যৌতুকের তাড়নায় স্বামীর ঘর ছাড়লেন আয়েশা

প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০২১

দোয়ারায় যৌতুকের তাড়নায় স্বামীর ঘর ছাড়লেন আয়েশা

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: যৌতুক নামের পাষাণ ব্যাধি কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আয়েশার মত নারীদের। মেহেদীর রং এখনও শুকায়নি। এর মাঝেই যৌতুকের তাড়নায় নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়েছে আয়েশাকে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ২২ দিন সংসার করার পর আয়শাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। অবশেষে নিরুপায় হয়ে অসহায় বাবার বাড়িতেই আশ্রয় নেয় আয়শা।

এমন ঘটনাটি ঘটেছে দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের করালী গ্রামের অজপাড়া গাঁয়ে।

Manual6 Ad Code

জানা গেছে- গেল ১২ এপ্রিল ২০২১ ইং উপজেলার করালী গ্রামের জমসিদ আলীর পুত্র মঈনুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয় একই গ্রামের আহাদ আলীর মেয়ে আয়েশার। বিয়ের সময় যৌতুকের দাবি না থাকলেও বিয়ে পরবর্তী যৌতুকের দাবিতে শুরু হয় নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় বিয়ের ২২ দিনের মাথায় ১ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়েছে আয়েশাকে।

Manual8 Ad Code

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ মে ২০২১ দিবাগত রাত আয়েশার শ্বশুর জমসিদ আলীর চাহিদা অনুযায়ী বাবার বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন আয়েশার স্বামী মঈনুল ও তার পরিবার। মা হারা আয়শা অসহায় দিন মজুরের কাজ করা পিতার কাছে ১ লাখ টাকা নেই জানালে সাথে সাথে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে গুরুতর আহত করা হয় আয়েশাকে। শুধু তাই নয়, শ্বশুর জমসিদ আলী এগিয়ে এসে তার ছেলে মঈনুলকে বলে ‘তর বউকে তালাক দিলে আরও ভালো জায়গায় বিয়ে করাতে পারব। নগদ টাকাও পাওয়া যাবে।’ এভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয় আয়শাকে।

এ ঘটনায় গত ১৯/০৫/২০২১ ইং সুনামগঞ্জ নারীও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে মঈনুল ইসলাম ও তার পিতা জমসিদ আলী দুজনকে আসামি করে আয়েশা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার কথা শুনে জমসিদ আলী তার ছেলে মঈনুলকে লুকিয়ে রাখছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

Manual1 Ad Code

এ বিষয় আয়েশার বৃদ্ধ দাদা উমর আলী (৭০) জানান, ‘জমসিদ আলী আমার পরিবারের লোকজনকে রাস্তা ঘাটে চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।’

মামলার ২ নং আসামি ও ছেলের বাবা জমসিদ আলী বলেন, ‘আমার ছেলে বাড়িতে নেই, যত টাকা খরচ হওয়ার হউক আমি এই মেয়েকে বাড়ির বউ হিসাবে মেনে নিব না। প্রয়োজন ৩০/৪০ হাজার টাকা দিয়ে সালিশের মাধ্যমে আপোষ করে নিব।’

অসহায় দিনমজুর পরিবারের মাতৃহীন আয়েশা তার সাথে ঘটে যাওয়া কথাগুলো এভাবেই জানান, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছিল সম্পর্কের মাধ্যমে। আমার মা নেই, আমার বাবা একজন অসহায় দিনমজুর। আমার বাবার পক্ষে যৌতুকের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আমার বিয়েটাই অভিশাপ। ২২ দিনের মাথায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি। আমার বাড়ির লোকজন রাস্তা ঘাটে বের হলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাদের আক্রমণ করে। আমি ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় আছি।’

এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নাজির আলম বলেন, ‘আদালতের কপি এখনও থানায় আসেনি। মামলার কপি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

May 2021
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..