ভারতীয় চোরাই মহিষ নিয়ে নাটকীয়তা, সিলেটে তোলপাড়

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২১

ভারতীয় চোরাই মহিষ নিয়ে নাটকীয়তা, সিলেটে তোলপাড়

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ‘বোঙার’ মহিষ নিয়ে সিলেটে তোলপাড় চলছে। এক সপ্তাহ ধরে হচ্ছে নানা নাটকীয়তা। চোরাই পথে আনা ১০টি মহিষ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় অবশেষে পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে। ঘটনাটি নিয়ে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলায় চলছে জল্পনা। তবে জকিগঞ্জের সোনাসার গ্রামের মাছুম আহমদ দাবি করেছেন- মহিষগুলো তিনি স্থানীয় কালীগঞ্জ বাজার থেকে কিনেছেন। এগুলো বোঙার মহিষ না। সিলেটের কানাইঘাটের সড়কের বাজার। এক নামেই এই বাজারকে চিনেন পশু ব্যবসায়ীরা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা মহিষ কিনতে ছুটে আসেন ওই বাজারে।
এলাকার মানুষের দাবি- এই বাজার হচ্ছে ‘বোঙার বাজার’। বাজারে বিক্রীত ৮০ ভাগ পশুই হচ্ছে সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরাই পথে আসা।

Manual5 Ad Code

স্থানীয় চোরাকারবারিদের ছত্রছায়ায় এই বাজার গড়ে তোলা হয়েছে। কানাইঘাটের লোভাছড়া বড়গ্রাম এলাকার বোঙারী সুলতান মিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে আনা ১০টি মহিষ গত ২রা এপ্রিল সড়কের বাজারে বিক্রির জন্য তোলেন। ওই পশু তিনি ১৪ লাখ টাকা মূল্যে কানাইঘাটের দর্পণ নগর পশ্চিম গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসানের কাছে বিক্রি করে দেন। সুলতান মিয়া জানান, ‘একই সময় জকিগঞ্জের সোনাসার গ্রামের মনসুর আহমদ ওই মহিষগুলো ৭ লাখ টাকা দাম করেছিলেন। কিন্তু তার কাছে তিনি বিক্রি করেননি। বেশি দাম পাওয়ায় আবুল হাসানের কাছে বিক্রি করে দেন। এ কারণে মহিষ বিক্রির পর মনসুর, গিয়াস সহ বাজারের সিন্ডিকেটরা মিলে মহিষগুলোকে ‘চোরাই’ মহিষ আখ্যায়িত করেন। তারা জকিগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারের রসিদ দেখিয়ে মহিষগুলোকে মাসুমের দাবি করে কানাইঘাট থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু আমার বিক্রি করা মহিষের রসিদ থাকায় পুলিশ বিষয়টি বুঝতে পেরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমঝোতার সময় দেয়। কিন্তু বাজারের সিন্ডিকেটরা কোনো কিছুরই পরোয়া করেনি। তারা উল্টো পুলিশকে ব্যবহার করে মহিষগুলো চোরাই মহিষ হিসেবে চিহ্নিত করে।

পশুর ক্রেতা কানাইঘাটের ব্যবসায়ী আবুল হাসান জানিয়েছেন- তিনি স্থানীয় সড়কের বাজার থেকে গত ২রা এপ্রিল মহিষগুলো ক্রয় করেছেন। বাজার কর্তৃপক্ষের পক্ষে সাহাব উদ্দিন ও মুসলিম নিজে দাঁড়িয়ে মহিষ ক্রয়ের সময় তাকে রসিদও দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে চোরাই মহিষ দাবি করে কানাইঘাট থানার এসআই ময়নুল তার কাছ থেকে রসিদ সহ মহিষগুলো নিয়ে যান। এখনো তার ক্রয় করা মহিষ কিংবা টাকা ফেরত পাননি বলে জানান। এদিকে সুলতান মিয়ার নামে রসিদ চুরি ও প্রতারণার অভিযোগ করেছেন বাজারের ইজারাদার জয়নাল আবেদীন। তিনি দাবি করেছেন রাতের আঁধারে জোরপূর্বক রসিদগুলো তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Manual6 Ad Code

এ ব্যাপারে তিনি মামলা করেছেন দাবি করলেও পুলিশের কাছে মামলার কোনো তথ্য নেই। জয়নাল এ ব্যাপারে মিডিয়ার সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে বিষয়টি তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন বলে মন্তব্য করেছেন। বাজার সংশ্লিষ্ট স্থানীয় ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন- ওই ১০ মহিষের সঙ্গে বাজারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। মহিষগুলো বাজারে তোলা হয়নি।

Manual6 Ad Code

আবুল হাসানের অভিযোগও সত্য নয়। রসিদ চুরির দায়ে বাজার কর্তৃপক্ষ সুলতানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এর বাইরে ঘটনার সঙ্গে বাজারের কিংবা তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান। এদিকে জকিগঞ্জের সোনাসার গ্রামের মাসুম আহমদ স্থানীয় কালিগঞ্জ বাজারের রসিদ দেখিয়ে ১০টি মহিষ চুরির অভিযোগ এনে কানাইঘাট থানায় মামলা করেছেন। মামলায় সুলতান মিয়া সহ কয়েকজনকে আসামি করেছেন। ওই মহিষগুলো তিনি গত ২৭শে মার্চ কালীগঞ্জ বাজার থেকে কিনেছেন বলে দাবি করেন।

Manual1 Ad Code

এজাহার দাখিলের ৫ তিন পর গত ৯ই এপ্রিল পুলিশ তার মামলা গ্রহণ করেছে। মাসুম জানিয়েছেন, আগে থেকেই পরিচিত সুলতান সহ তিনজনের কাছে তিনি মহিষগুলো দেখাশোনা করার জন্য রেখেছিলেন। কিন্তু সুলতান তার ১০টি মহিষ গোপনে বিক্রি করে দিয়েছে। এ কারণে তিনি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান। প্রথম পর্যায়ে পুলিশ তার মামলা গ্রহণ না করলেও পরবর্তীতে করেছে বলে জানান তিনি।

কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) জাহেদুল হক জানিয়েছেন, মাসুমের দায়ের করা এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এখন তদন্ত করা হবে আসলে মহিষগুলো কার। তিনি জানান, বিষয়টি যেহেতু ব্যবসায়ীদের এ কারণে ঘটনাটির মিটমাট করতে ব্যবসায়ীদের সময় দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা ঘটনা শেষ করেননি। এখন পুলিশ তদন্ত করে ঘটনাটির ইতি ঘটাবে বলে জানান তিনি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

May 2021
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..