সিলেট ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গত চার মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে কর্তব্যরত নার্সরা। এ অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাড়ি থেকে টাকা এনে ভরণপোষণসহ তাদের আনুসাঙ্গিক খরচ চালাতে হচ্ছে। আয়-ব্যয়ের (ডিডিওশিপ) নিয়ন্ত্রক সংকটের কারণে তাদের বেতন না হওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে নার্সদের বেতন হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ভুক্তভোগী এক নার্স বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর থেকে কোভিড ওয়ার্ডে কাজ করছেন তিনি। পরিবারের বাকি সদস্যদের কাছ থেকে আলাদা থাকেন। কারণ নিজের অজান্তে বয়ে বেড়ানো করোনার জীবাণুতে যদি তার স্বজনরা সংক্রমিত হন।
বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের খরচ চালাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চাকরিতে যোগদানের পর থেকে এখনো বেতন, বোনাস কিছুই পাননি।
জানতে চাইলে সদর হাসপাতালের উপপরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘গত জুলাই থেকে বেতনের ডিডিওশিপের একটি সমস্যা হয়েছিল। শুধু কোভিড ইউনিটের না, সকল নার্স ও ডাক্তারদেরও এ সমস্যা হয়েছিল। এ সমস্যার কারণে আমার নিজেরও বেতন আটকে ছিল। গত কয়েকদিন আগে ৭৫ জন নার্সের বেতন ক্লিয়ার করা হয়েছে। বাকিদের খুব দ্রুত হয়ে যাবে। পুরাতন নার্সদের এক মাসের ও নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের চার মাসের বেতন বাকি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য কোনো জটিলতা না, কোডিংয়ের সমস্যার জন্য হয়নি। চিকিৎসকদের ডিডিওশিপের নিয়ন্ত্রণে আমি ছিলাম। কিন্তু নার্সের ডিডিওশিপের জন্য কেউ ছিলেন না। সে কারণে এ সমস্যা হয়েছে। এখন এ দায়িত্ব নিয়েছি। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এছাড়া ডিডিওশিপের ব্যাপারে হিসাব শাখার দাবির কারণেও কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার অঞ্জলী রায় চৌধুরী বলেন, ‘তারা (নার্স) যোগদানের পর বেতনের জন্য আমাদের যে ফাইলগুলো প্রসেসিং করে ট্রেজারিতে দিতে হয়, বিভিন্ন কারণে তা দিতে দেরি হয়ে গেছে। তারা নিজেরা প্রসেস করে পাঠাতে একটু সময় লেগেছে। ৮১ জনের ফাইল তো, এগুলো প্রসেসিং করতে একটু সময় লাগছে। আমাদের হেড ক্লার্ক আজকে ট্রেজারি অফিসে গেছেন, তিনি বিষয়টি দেখভাল করছেন, সমাধানের চেষ্টা করছেন।’
কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাজ শুরু গেছে, আগামীকাল থেকে সদর হাসপাতালের ফাইলগুলো ধরতে বলা হয়েছে। এর পর মেডিকেল কলেজগুলোর ফাইল ধরা হবে। আমাদের দায়িত্বে দুই রকমের ফাইল আছে। সব কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে তাদের বেতন পেতে প্রায় এক মাস সময় লাগবে।’
সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আইসিও-এইচডিও রেডজোন ইয়োলো জোন ও আইসোলেশনসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন করোনারোগী ভর্তি থাকেন। এছাড়া হাসপাতালে অন্যান্য বিভাগ মিলিয়ে রোগী ভর্তি থাকেন ৪০০-৪৫০ জন। এসব রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন।
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে করোনা চিকিৎসার জন্য ২০০০ চিকিৎসক ও ৫০৫৪ নার্স নিয়োগ প্রদান করে সরকার। ১৩ মে দেশের অন্যন্য হাসপাতালের মতো কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে করোনা মোকাবিলায় নার্সরা যোগদান করেন। তাদের বেতন-ভাতা সংকট না হওয়ার জন্য স্ব স্ব অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে নার্সিং অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের বেতন-ভাতা পেয়েছেন। তবে গত চার মাস ধরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সদের বেতন-ভাতা হয়নি। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল, সাতক্ষীরা মেডিকেল, বরিশাল মেডিকেল ও শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজেও বেতন-ভাতা এখনো হয়নি বলে জানা গেছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd