সিসিকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিনব্রিজের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন

প্রকাশিত: ১১:৫০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১

সিসিকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিনব্রিজের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘদিন পর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন এই সেতুর সংস্কার কাজ করবে এবার রেলওয়ে বিভাগ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এই সেতু সংস্কারের জন্য গত জুনে রেলওয়ে বিভাগকে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। তবে টেন্ডার না হওয়া ও নদীতে পানি বেশি থাকার কারণে ব্রিজের মূল সংস্কার কাজ রেলওয়ে দুমাস পরে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্রিজটি ১৯৭৭ সালে রেলওয়ে প্রথমদফা সংস্কার করেছিল। এবার সংস্কারকাজ শুরু হলে এটিই হবে মুক্তিযুদ্ধের পর রেলওয়ের মাধ্যমে কিনব্রিজের দ্বিতীয়দফা সংস্কার।

এদিকে, সিসিকের নির্দেশনা অমান্য করে ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতু দিয়ে অবাদে চলাচল করছে সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ নানা ধরণের ভারি যানবাহন। ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে এসব ভারি যানবাহন চলাচল করলেও অদৃশ্য কারণে তারা থাকছে নির্বিকার।

সরেজমিনে কিনব্রিজ এলাকায় গেলে দেখা যায়, ব্রিজের দুই ফটকের উপর ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সিসিকের দুটি সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে। সাইনবোর্ড ঝুলানো থাকলেও দিন কিংবা রাত কোন বাঁধা ছাড়াই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে সব ধরণের ভারি যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধাধু ট্রাফিক পুলিশকে বখরা দিয়ে এ ব্রিজ দিয়ে নিয়মিত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করে থাকে। এবিষয়ে, দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশদের জিজ্ঞেস করা হলেও কোন সুদুত্তর দিতে পারছেন না তারা।

জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে লোহার কাঠামোয় ব্রিজটি দৃষ্টিনন্দন ধনুক আকৃতিতে নির্মাণ করেছিল রেলওয়ে বিভাগ। একটানা দুই বছর নির্মাণকাজ শেষে ১৯৩৬ সালে ব্রিজটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল কিনের নামে এই সেতুর নামকরণ হয় ‘কিনব্রিজ’। আট দশকের বেশি সময় ধরে সচল ব্রিজটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং সিলেট অঞ্চলে সুরমা নদীর ওপর প্রথম ব্রিজ। দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৫০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট।

বর্তমানে কিনব্রিজটির মূল কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দেখভাল করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ। ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে পড়লে দুই দিকে লোহার বেষ্টনী দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল সিটি করপোরেশন। এসময় ব্রিজের দক্ষিণ পারের মানুষের অব্যাহত দাবীর মুখে ৫২ দিন বন্ধ থাকার পর শুধুমাত্র রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়েছিলো সিসিক। এরপর কে বা কারা লোহার বেষ্টনি খুলে নিলে সব ধরণের গাড়ি চলাচল শুরু করে ঝুকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে। সিসি কতৃপক্ষও অজ্ঞাত কারণে থাকে নিরব।

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, সর্বশেষ সংস্কারকাজ শেষে কিনব্রিজকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ফুটওভার ব্রিজে (পদচারী-সেতু) রূপান্তর করার জন্য একটি প্রস্তাব ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সওজকে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি কিনব্রিজটি আবার যান চলাচলের ঝুঁকির মুখে পড়ায় গত ২৯ জুলাই ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে ব্রিজের প্রবেশ মুখে সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, তৃতীয় দফা সংস্কারের দুই বছরের মাথায় ভারী যানবাহন চলাচলে ফের ঝুঁকি দেখা দেওয়ায় রিকশা-ভ্যান-মোটরসাইকেল ছাড়া বাকি সব ধরনের যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে।

নিষেধ থাকা সত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে কীভাবে ভারী যানবাহন করে জানতে চাইলে এবিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের দৈনিক সিলেট এক্সপ্রেসকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি বলে দিচ্ছি যাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2021
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..