সিলেট ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০
কে.এ.রাহাত :: দেশের বিভিন্ন অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র লীগ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলন। এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির ছন্দের পতন হচ্ছে গোয়াইনঘাট উপজেলা শাখায়।
গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্র লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলে বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে উপজেলা ছাত্র লীগের কার্যক্রম। ফলে তৃণমূলের হাজার হাজার নেতাকর্মী ঠিকানা বিহীন পথে হাঁটছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই শাহজাহান সিদ্দিক সাবুলকে সভাপতি ও আশরাফ জামিল লায়েককে সাধারণ সম্পাদক করে গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী।
৩১ জুলাই (সোমবার) রাত ৯ টায় জেলা ঘোষিত গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। ওইদিন গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে অনুমোদিত কমিটির বিরুদ্ধে মিছিল করে ছাত্রলীগের কমিটিকে অবৈধ ও পকেট কমিটি আখ্যা দেয় ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। সে সময়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ’র নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সভায় নেতাকর্মীরা নবগঠিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত এবং অবৈধ ঘোষণা করে, প্রকৃত ছাত্রদের দিয়ে পুনরায় নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবি তুলেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ওইদিন জেলা ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তৃণমূল ও ত্যাগী নেতাদের নিয়ে ছাত্রলীগের উপজেলা এবং কলেজ শাখার পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেন।
এ.কে.এম জাকারিয়াকে সভাপতি ও আব্দুল মনসুর ডালিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি এবং আয়নুল হককে সভাপতি ও গোলাম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ ছাত্র লীগের কমিটি ঘোষণা করেন। সে সময়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জেলা কমিটির উপর অভিযোগ তুলে বলেন, জেলা নেতাদের মোটা অংকের বখরা দিয়ে জামাত শিবির পরিবারের সদস্যদের দিয়ে গোয়াইনঘাটে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে দীর্ঘ ৬ মাস অপেক্ষা করে দাম কষাকষির বিনিময়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের তৃণমূলের মেধাবী পরিশ্রমী এবং ত্যাগী ছাত্রলীগ কর্মীদের বাদ দিয়ে অছাত্র, বিবাহিত, বিতর্কিত পরিবারের, ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাদের দিয়ে অবৈধ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, যাহা গোয়াইনঘাটে সর্বস্তরের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে।
জেলা ঘোষিত গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা পাল্টা কমিটি ঘোষণা করায় জেলা ছাত্রলীগ অনুমোদিত কমিটি পড়ে বিপাকে। তৃণমূল ছাত্র লীগের স্ব-ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দের প্রভাবের কারণে অনুমোদিত কমিটি আজ পর্যন্ত গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরতে পারেনি। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এমনকি ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় ঘোষিত নানা কর্মসূচীর একটিতেও উপজেলা ছাত্র লীগের ব্যনারে অংশগ্রহণ করেননি।
দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোষিত কর্মসূচি, জাতীয় দিবস গুলোতে ওদের সাথে দেখা মেলেনি। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচিতে জেলা অনুমোদিত গোয়াইনঘাট ছাত্র লীগের ব্যানারে আজ পর্যন্ত অংশগ্রহণ সম্ভব হয়নি। ছাত্র লীগের অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও যথাযথ কার্যক্রম বাস্তবায়িত করতে হলে গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্র লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। বিবাদ ছাত্র লীগের উভয় কমিটির নেতৃবৃন্দের এক প্লাটফর্মে বসিয়ে ছাত্র লীগের ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd