গোলাপগঞ্জে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০

গোলাপগঞ্জে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি :: সিলেটের সালাম মকবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু কৃপাময় চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে নিজ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফছানা বেগম প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ধোঁকাবাজির অভিযোগ এনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করেন ও অনুলিপি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বরাবর প্রেরণ করেন। অভিযোগের আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর আহাম্মদ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে জবাব প্রদানের জন্য নোটিশ জারী করেন।

নোটিশে তিনি উল্লেখ করেছেন, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলাধীন সালাম মকবুল উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১২/০৬/২০১০ তারিখে বিধি মোতাবেক সমাজ বিজ্ঞান পদে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক আফছানা বেগমকে এমপিও ভুক্তির পদক্ষেপ গ্রহণ না করে গত ০১/১১/২০১৪ তারিখে সমাজ বিজ্ঞান পদে নিয়োগপ্রাপ্ত আবুল হোসেনকে তৎকালীন সময়ে এমপিও ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমিক স্তর এমপি ভুক্ত হলে উল্লিখিত শিক্ষককে এমপিও ভুক্ত করা হবে মর্মে আশ্বাস দেওয়া হয়। বর্ণিত অবস্থার প্রেক্ষিতে সমাজ বিজ্ঞান পদে নিয়োগপ্রাপ্ত জেষ্ঠতম শিক্ষক আফছানা বেগম এর এমপিও ভুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ না করে আবুল হোসেনকে কেন এমপিও ভুক্ত করা হলো এ বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য বলা হলো।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, আমি গোলাপগঞ্জ উপজেলাধীন বাঘা ইউনিয়নের সালাম মকবুল উচ্চ বিদ্যালয়ে বিগত ১০ এপ্রিল ২০০৭ তারিখ থেকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। শিক্ষক অবস্থায় আমি বি.এড ও এন.টি.আর.সি.এ কর্তৃক সমাজ বিজ্ঞান পদে নিবন্ধিত হই। ২০১০ সালের ২৯ মার্চ দৈনিক সিলেটের ডাক ও একই বছরের ১৮ এপ্রিল দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় অত্র বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আমি যথানিয়মে ৬ জুন ২০১০ তারিখে অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করি ও নির্বাহী বোর্ডের সুপারিশের আলোকে এবং ম্যানেজিং কমিটির বিগত ১২ জুন ২০১০ তারিখের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে আমি একই বছরের ১৩ জুন উক্ত পদে যোগদান করে অধ্যাবদি কর্মরত আছি।

বিগত ২০১৪ সালে সমাজ বিজ্ঞানের অপর শিক্ষক ওয়াজির আহমদ যুক্তরাজ্যে স্থায়ী অভিবাসী হিসেবে দেশত্যাগ করলে উক্ত পদ শূন্য হয়। শূন্য পদের বিপরীতে প্রধান শিক্ষক উক্ত পদ পূরনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চিন্তা ভাবনা করেন। আমি প্রধান শিক্ষকের শরণাপন্ন হই এবং আমাকে উক্ত পদে বিগত নিয়োগের আলোকে নিয়োগ দেওয়ার অনুরোধ করি। তিনি আমার প্রস্তাবের পরপরই ঠালবাহানা শুরু করেন এবং আমাকে বলেন যে যেহেতু বিগত ২০১০ সালে আপনাকে সরকারি বিধি মোতাবেক শূণ্য পদে নিয়োগ দেওয়া আছে এবং বিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞানের ৩টি পদ রয়েছে। ভবিষ্যতে বিদ্যালয় মাধ্যমিক স্থরে এমপিওভুক্ত হলে আপনি অবশ্যই এমপিওভুক্ত হবেন। তিনি আমার কথার কর্ণপাত না করে আবুল হোসেন নামীয় এক শিক্ষককে বিগত ০১.১১.২০১৪ তারিখে সমাজ বিজ্ঞান পদে নিয়োগ প্রদান করেন।

চলতি বছরে সরকার কর্তৃক ঘোষিত মাধ্যমিক এমপিওভুক্তিতে সালাম মকবুল উচ্চ বিদ্যালয় তালিকাভুক্ত হয়। আমি যথারীতি সমাজ বিজ্ঞান পদে এমপিওভুক্তির আবেদন করলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস হইতে আমার আবেদন ফেরত আসে। জেলা অফিস থেকে প্রেরিত ফেরতের বিবরণে জানাযায় উক্ত পদে আবুল হোসেন নামীয় শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন বিধায় আমার আবেদন ফেরতের কারণ। আমি তাৎক্ষনিক প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি পুনরায় নানা ঠালবাহানা শুরু করেন। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আমার নিয়োগের বিষয়ে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করলে তিনি নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ শুরু করেন।

জানাযায়, সালাম মকবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সাথে বিভিন্ন সময় নানা রকমের প্রতারণা করেন। তিনি উৎকোচের বিনিময়ে নানা সময় খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণসহ নানা দুর্ব্যবহার করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তিনি শিক্ষকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। তার প্রভাব পড়ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের উপর। বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুস্থ পরিবেশের স্বার্থে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা উচিত।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2020
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..