পরকীয়ার জেরে ৪০ হাজার টাকার বিনিময় সুমনা হিজড়াকে হত্যা

প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০

পরকীয়ার জেরে ৪০ হাজার টাকার বিনিময় সুমনা হিজড়াকে হত্যা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিরাজগঞ্জ শহরে বসতঘরে তৃতীয় লিঙ্গের সুমনা খুনের সঙ্গে জড়িত ৭ আসামীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন।

মামলার আসামীরা হলেন, শহরের একডালা এলাকার তৃতীয় লিঙ্গের শাওন (২৫) ও তার স্বামী শোভন (২৫), একই এলাকার আবদুল আজিজের স্ত্রী শিমু খাতুন, পাশ্ববর্তী কোলগয়লা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে জেমস্ (১৯), নুর আমিনের ছেলে ইমন (২০), আক্তার হোসেনের ছেলে সাজু (২০), বাদশা মিয়ার ছেলে লিটন (৩০)। এদের মধ্যে আদালতে জবানবন্দি দেন শাওন (তৃতীয় লিঙ্গ) ও তার স্বামী শোভন ।

গত শুক্রবার রাতে নিজ বসতঘরে শহরের গয়লা মধ্যপাড়া মহল্লার আমজাদ হোসেন খানের সন্তান তৃতীয় লিঙ্গের সুমন ওরফে সুমনাকে (৪০) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। শনিবার দুপুরে ঘরের ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক নুরুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের পর শনিবার রাতে নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এরপর অভিযানে নামে পুলিশ। মঙ্গলবার শহরের কালিবাড়ি এলাকা থেকে সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে জেমস্, ইমন, সাজু ও লিটনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর বুধবার ঢাকার আশুলিয়া উপজেলার জিরাবো এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামী শাওন (তৃতীয় লিঙ্গ) ও তার স্বামী শোভনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে, শহরের একডালা এলাকার শিমু খাতুন একইদিনে গ্রেপ্তার হন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শাওন (তৃতীয় লিঙ্গ) ও তার স্বামী শোভনকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হলে গোপন কক্ষে প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবাবনন্দির বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, শোভন তৃতীয় লিঙ্গের শাওনকে বিয়ে করে সংসার করছিলো। কিন্তু নিহত সুমনা (তৃতীয় লিঙ্গ) চাইতো শাওনকে ছেড়ে শোভন তাকে বিয়ে করুক। এ নিয়ে এই ৩ জনের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিলো। অপরদিকে, সুদ হিসাবে শিমুকে ২ লাখ টাকা দিয়েছিলো নিহত সুমনা (তৃতীয় লিঙ্গ)। ওই টাকা নিয়ে শিমু ও সুমনার মধ্যে দ্বন্ধ চলছিলো। এই মনোমালিন্য ও দ্বন্ধকে পুজি করে শিমু। সে শোভনকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে সুমনাকে হত্যার প্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি হয়ে শোভন ও শাওন (তৃতীয় লিঙ্গ) সহ ৭ জন এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।

কারাগারে থাকা জেমস্, ইমন, সাজু, লিটন ও শিমুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে শুনানি হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া শুধুমাত্র কোলগয়লা গ্রামের শিফাত (২০) পলাতক রয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম।

হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের মা নুরজাহান বাদী হয়ে শাওন ও শোভনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জেমস্, ইমন, সাজু, লিটনকে সন্দেহভাজন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিলো। শুক্রবার হত্যাকাণ্ডের রাতে এরা সবাই সুমনার দাওয়াতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলো বলে বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..