লোভাছড়া কোয়ারীতে চলছে ধ্বংসলীলা: বসতবাড়ি হুমকির মুখে

প্রকাশিত: ৭:১০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯

লোভাছড়া কোয়ারীতে চলছে ধ্বংসলীলা: বসতবাড়ি হুমকির মুখে

স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া কোয়ারীতে অবৈধভাবে পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করে পূর্বের নিয়ন্ত্রণকারীরা সেখানে রামরাজত্ব কায়েম করেছে। থানা পুলিশ আদায় করছে লক্ষ লক্ষ টাকা। পাথর খেকো প্রভাবশালী চক্রটি থানা পুলিশের হাত মিলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে পাথর কোয়ারীতে ধ্বংসলীলা। শতাধিক ক্সেভেটর, ফেলোডার দিয়ে পাথর তোলার নামে বিশাল বিশাল গভীর গর্ত তৈরী করা হয়েছে। শত শত শেলো মেশিন, বোমা মেশিনের সাহায্যে পরিবেশ বিধ্বংস করে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে।

সরেজমিনে কোয়ারী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লোভা নদীর ভালুকমারার চর, সাউদগ্রাম, বাংলো টিলা, কান্দলা, তেরহালি, বাজেখেল ও মেছারচর এলাকা হল পাথর উত্তোলনের মূল স্পট। এ স্পটগুলোতেই অপ্রতিরোধ্যভাবে চলছে স্কেভেটর, ফলোডার দিয়ে শেলো মেশিনের সাহায্যে ১০০-১৫০ ফুট গর্ত করে পাথর উত্তোলন। এতে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার ও মসজিদ হুমকির মুখে রয়েছে।

আর সকল ধ্বংসলীলা নিয়ন্ত্রন করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও কানাইঘাট থানা পুলিশের লোকজন। লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ থানা পুলিশের সাথে বৈঠক করে স্কেভেটর, ফলোডার দিয়ে পাথর উত্তোলনের অনুমতি নেয়। যার ফলে সমিতির লোকজনের মাধ্যমে থানা পুলিশ লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করছেন।

থানার দুই পুলিশ সদস্য এএসআই বেলাল ও এএসআই ওদুদ প্রতিদিন পাথর কোয়ারী এলাকায় মহড়া দিতে থাকেন। মাসে প্রতি স্কেভেটর থেকে ৩০ হাজার এবং ফলোডার থেকে ২০ হাজার টাকা থানায় দেওয়ার কথা বলেন। এর মধ্যে যারা টাকা দেন তারাই গাড়ি চালান। আর কেউ টাকা না দিলে সাথে সাথে গাড়ি বন্ধ করেন এএসআই বেলাল ও এএসআই ওদুদ।

গতকাল বুধাবার বিকালে থানার এএসআই বেলাল বিজিবি ছাউনির নিকট টাকা না দেওয়ায় একটি এক্সেভেটর বন্ধ করে দেন। যদি চলে তাহলে তাদের টাকা দিয়ে চালাতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এ পাথর কোয়ারী নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নাজিম উদ্দিন, তমিজ উদ্দিন মেম্বার, আলমাছ উদ্দিন, আহাদ হোসেন, হাজী বিলাল আহমদ, গিয়াস উদ্দিন, ফখরুল আলম, শফিকুর রহমান মেনন, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সাউদগ্রামের হাজী কামাল উদ্দিন, মাতাই মিয়া, সিরাজ উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন, মুহিবুর রহমান, কান্দলা গ্রামের আব্দুল্লাহ চৌধুরী, সোহেল চৌধুরী, ইসলাম উদ্দিন, নজরুল মিয়া, বাজেখেল গ্রামের শামসুদ্দিন, ডাউকেরগুল গ্রামের তাহের, শাহাবুদ্দিন। এরা হলেন কোয়ারীর হর্তা-কর্তা।

কানাইঘাট থানার এএসআই ওদুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্রাইম সিলেটকে বলেন, আমি টাকা নিয়েছি এটার কি প্রমাণ আপনাদের কাছে আছে আগে বলেন। আমি কোন টাকা আদায় করছি না।

এএসআই বেলালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা উত্তোলন করি না এবং যারা এই বস বলছে তা সম্পর্ণ মিথ্যা। বিজিবি ছাউনির নিকট এক্সেভেটর বন্ধ করার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সমিতির একটা মাসিক ফ্রি আছে এগুলা ছাড়া আর কোন টাকার খবর আমি জানিনা। থানা পুলিশকে টাকা দেওয়া হয় কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2019
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..