সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার জানাইয়া গ্রামের আশিক আলীর স্ত্রী রাহেলা বেগম (৪৫) ও মনোয়ারা বেগম (৩৮)। তারা স্বামীর জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে বিরোধ চালিয়ে আসছে। এই দ্বন্দের জের ধরে গত বছর দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম থানায় একটি অভিযোগ করেন সেই অভিযোগ তদন্তে করতে গিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রতাহার হয়েছিলেন থানার এসআই কামরুজ্জামান।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ ডিসেম্বর মনোয়ারার স্বামী তুচ্ছ কারণে তর মেয়েকে মারধর করেন। প্রতিবাদ করলে তিনি মনোয়ারাকে মারধোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন। মনোয়ারার সৎ ছেলে ইমামুল ও তার বোনেরাও এ সময় তার স্বামীকে সহযোগিতা করেন। প্রাণে মারার হুমকি দিলে তিনি থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। সে দিনই তদন্তে আসেন থানার এসআই আব্দুল লতিফ। তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন।
এরপর গত ৮ডিসেম্বর রোববার বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এসআই আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ এনে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে একটি সাজানো মিথ্যা অভিযোগ দেন রাহেলা বেগম (৪৫)। ওই অভিযোগ দায়েরের পর গত ১০ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিক ও কয়েকটি নামসর্বস্ব অনলাইন পত্রিকায় মনোয়ারা ও আমার মেয়ের চরিত্র হনন করে এসআই লতিফের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। মনোয়ারা এই সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবানও জানান। কিন্তু কিছুতেই এসআই লতিফের শেষ রক্ষা হয়নি।
মনোয়ারা বলেন, তাদের অপকর্মের নেপথ্যে আছে তথাকথিত সাংবাদিক, রামধানা গ্রামের রইছ আলীর ছেলে আক্তার আহমদ সাহেদ। সেই এসব মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে। জুবেদার সাথে দীর্ঘদিন ধরে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই সে তাদের পক্ষ হয়ে কাজ করে। তার ভয়ে থানা পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে চায়না।
আশিক আলীর স্ত্রীর ঝগড়ার বিষয় তদন্ত করতে থানার পুলিশ সদস্যদের মিথ্যা অপবাদ নিয়ে থানা থেকে প্রতাহার হতে হচ্ছে। যেমনটা ঘটে ছিলো গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর আশিক আলীর মেয়ের মিথ্যা অভিযোগে এসআই কামরুজ্জামানের ন্যায়। ঠিক তেমনি হয়েছে এসআই আব্দুল লতিফের। শুক্রবার (১৩ ডিম্বের) দুপুরে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশে বিশ্বনাথ থানার এসআই আব্দুল লতিফকে সিলেট পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়। কি দোষ ছিলো এই পুলিশের এসআই আব্দুল লতিফের। তার দোষ একটাই সে সঠিক তদন্ত করেছে। তার তদন্তে ছিলো না কোন ভুল। তাদের কথমতো রাজি হয়নি এই পুলিশের এসআই। বিদায় মিথ্যা অপবাদ নিয়ে বিশ্বনাথ থানা থেকে প্রতাহার হতে হয়েছে তার।
পুলিশ সুপারের নিকট বিশ্বনাথের স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি এই ঘটনাটি সঠিক তদন্ত করে ওই ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলূক শাস্তির ব্যাবস্থা করা হোক। যাতে এই দুই পুলিশ সদস্যের মতো মিথ্যা অপবাদ নিয়ে থানা থেকে আর কেউ প্রতাহার না হয়।
প্রসঙ্গ: বিয়ের সময় স্বামীর দেয়া জমি ফিরিয়ে নিতে সৎপুত্র, কন্যা ও স্বামীর অসহনীয় নির্যাতনে নিজের জীবন অতিষ্ঠ বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্বনাথ থানার জানাইয়া গ্রামের আশিক আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৩৮)। তাদের এসব কাজে ইন্ধন দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন তথা কথিত সাংবাদিক, রামধানা গ্রামের রইছ আলীর ছেলে দৈনিক মানবজমিন ও দৈনিক শ্যামল সিলেট পত্রিকার বিশ্বনাথ প্রতিনিধি আক্তার আহমদ সাহেদ।
এই কথিত সাংবাদিকের ভয়ে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় তিনি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকায় তার কিশোরী মেয়ের চরিত্র হনন করে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। গত (১২ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মনোয়ারা বলেন, জুবেদারা তাদের হাতে সাংবাদিক রয়েছে, মেরে ফেললেও কেউ কিছু করতে পারবেনা ইত্যাদি বলে হুমকি ধমকি দেয়। তাদের অপরাধ তদন্ত করতে গেলে তারা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের নামে ধর্ষণের হুমকি, ইয়াবা দিয়ে ধরিয়ে থানায় নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে আক্তার সংবাদ প্রকাশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের হয়রানি করে। এমন অপবাদ দিয়ে এর আগে তারা কামরুজ্জামান নামক একজন এসআইকে গত বছর ক্লোজড করিয়েছিল। এবারও তারা এসআই আব্দুল লতিফকে জড়িয়ে এমন অপবাদ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, জানাইয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আশিক আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী তিনি। তার প্রথম পক্ষের তিন মেয়ে, দুই ছেলে। আর আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বিয়ের সময় স্বামী আমাকে ৮ শতক জমি দিয়েছিলেন। সেই জমিটুকু কেড়ে নেয়ার জন্য সৎ ছেলে ইমামুল নানা চক্রান্তে লিপ্ত। তারা আমাকে ও আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করেছে।
পুলিশের কাছে যাওয়ার অপরাধে পরদিন ৫ ডিসেম্বর সৎ ছেলে ইমামুলের নেতৃত্বে তার মা রাহেলা বেগম (৪৫), ভাই সাইফুল ইসলাম (১৯) ও তিন বোন জুবেদা (২৪) সাহেদা (২২) ও মাজেদা বেগম (১৮) আমি ও আমার মেয়ের উপর হামলা চালায়। এসময় ইমামুল আমার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতে উদ্যত হয়। সাইফুল আমার গলার ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। তার মা ও বোনেরা আমার ঘরের ড্রয়ারে রাখা আরো ৭ ভরি স্বর্ণের গহনা, নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে। কোনমতে প্রাণে বেঁচে গেলেও আমি ও আমার মেয়ে মারাত্মক আহত হই। থানায় মামলাদায়েরর জন্য গেলে ওসি মামলা না নিয়ে কোর্টে মামলা করতে বলেন।
মনোয়ারা বলেন, এসময় থানার ওসি বলেছেন, থানায় মামলা নিলে তারা পুলিশের চাকরি খেয়ে ফেলে। আমি মেয়েকে বাঁচাতে হাসপাতালে যাই। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ৮ ডিসেম্বর সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাদায়ের (নম্বর-৪১১/২০১৯) করি।
তিনি বলেন, আমার নামে দেয়া জায়গা ৮ শতক জমির দলিল স্বামী ও সৎ ছেলে নিয়ে গেছে। সৎ ছেলে ইমামুল চরিত্রহীন লম্পট। তার লাম্পট্য ও নির্যাতনের কারণে তার স্ত্রী এখন বাপের বাড়ি থাকছে। তাছাড়া সে এতই লম্পট যে, একাধিকবার আমার মেয়ে ও তার সৎ বোনের ইজ্জত লুন্ঠনের চেষ্টা করেছে। তিনি আক্তার ইমামুলের ব্যাপারে দ্রæত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করতে সিলেটের পুলিশ প্রশাসকসহ আইনশৃঙখলা বাহিনীর প্রতি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহনের আহŸান জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd