সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০১৯
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে টমটম ছিনতাই করতেই চালক সাইফুলকে ডেকে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামী কাজল দেবনাথ। ভাঙ্গারীর ট্রিপের কথা বলে নিয়ে এসে হ্যামার দিয়ে মাথায় আঘাত করে টমটমটি ট্রাকে করে নিয়ে যায় কাজল ও তার সহযোগিরা।
শুক্রবারসুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ রাগীব নুর’র কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্দিতে মুল আসামী এসব তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) মোঃ মাহ্মুদুল হাসান চৌধুরী।
গত বৃহস্পতিবার সিলেটের রশিদপুর এলাকার একটি ঝোপ থেকেনিখোঁজের ১১ দিন পর সাইদুল ইসলাম (১৭) নামের টমটম চালকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক ইউনিয়নের গোপাল দেবনাথের ছেলে কাজল দেবনাথকে আটক করে পুলিশ ।আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাজল হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেয় সে।
কাজালের দেয়া তথ্যমতে ভিকটিম টমটম চালক সাইদুল ইসলামের ব্যবহৃত ঙখঠওঙ খ-২২ মডেলের ওয়ালটন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। নাসিরনগর থানার ধরমন্ডল ইউনিয়নের কালীবাড়ী গ্রাম থেকে ছিনতাইকৃত টমটমটিও উদ্ধার করা হয়।
আদালতে স্বীকারোক্তিতে কাজল দেবনাথ জানায়,গত ১১ আগষ্ট ভোরে ভিকটিম সাইদুল ইসলামকে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে রাসেল মিয়া (ভুয়া ) নামে পরিচয় দিয়ে ফোন করে সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার বাগিচা বাজার হতে একটি ভাংগারীর ট্রিপ (মালামাল) জগন্নাথখপুর থানার ভবের বাজার নিয়ে আসার জন্য বলে। টমটম চালক সাইদুল ইসলাম তাদের কথামত জায়গায়আসলেভাংগারী ব্যবসায়ী শেখ বেলালের গোডাউনে আসারএকটি হ্যামার দিয়ে সাইদুলের মাথায় আঘাত করে কাজল। সাথে সাথে সাইদুল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করে গোডাউনেই টমটম চালক সাইদুলের মরদেহ লুকিয়ে রেখে ধৃুর্ত কাজল ও তার এক সহযোগী মিনি ট্রাকে করে টমটমটি নিয়ে যায়। ঘটনার দুইদিন পর পর ভাংগাড়ি ব্যবসায়ী কাজলকে ফোন করে বলে যদি তার গডাউন থেকে সাইদুলের মরদেহ সরানোর কথা বলে। কাজল তিন দিন পরে এসে টমটম চালক সাইদুলের মরদেহ গডাউন থেকে সরিয়ে পার্শ্ববর্তি খালে ফেলে দেয় ।
নিহত সাইদুল ইসলাম ঘটনার দিন বাসায় না ফেরায় ও তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার কারনে ওইদিনই নিহতের বড় ভাই রিয়াজুল হক জগন্নাথপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন । এর সুত্র ধরেই প্রথমে সন্দেহভাজন হিসেবে প্রযুক্তির সহায়তায় ২১ আগষ্ট সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার হাতিকুড়া গ্রামের গোপাল দেবনাথের ছেলে কাজল দেবনাথ (২৬) কে আটক করে পুলিশ।
আটককৃত কাজল দেবনাথকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর রশিদপুর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহত সাইদুল ইসলামের বড়ভাই মোঃ রিয়াজুল হক বাদী হয়ে চার জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের বাউরকাপন এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে সাইদুল ইসলাম। গত ১১ আগস্ট পূর্বপরিচিত রশিদপুর বাজারের নৈশপ্রহরী শরিফ মিয়ার ফোন পেয়ে টমটম গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন।
সাইদুলের বড় ভাই রিয়াজুল হক বলেন, সাইদুলকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দ্রæত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd