যেভাবে ফেসবুক ও ইউটিউবে নজরদারি করবে সরকার

প্রকাশিত: ৪:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০১৮

যেভাবে ফেসবুক ও ইউটিউবে নজরদারি করবে সরকার

Manual7 Ad Code
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : নভেম্বর থেকে ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগল নিয়ন্ত্রণ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। গত শনিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ ঘোষণা দেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা আর পিছিয়ে নেই, অনেক দূর এগিয়েছি। ফেসবুক একসময় আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত না করলেও, এখন শুনছে। আমাদের দেশীয় আইনকানুন অনুযায়ীই তারা চলবে। আগামী মাস থেকে ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগল নিয়ন্ত্রণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এই মাসেই সব ধরনের ডিভাইস আসবে। এর মাধ্যমে নির্বাচনকে ঘিরে অপপ্রচার, গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব।

Manual8 Ad Code

ফেসবুক বা ইউটিউবের মত সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত যে কোন কনটেন্ট যদি বাংলাদেশ সরকারের কাছে দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে হয়, তাহলে সরকার চাইলেই সেগুলো প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।

তিনি জানান, এসব প্রযুক্তির মধ্যে হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার দুটোই থাকতে পারে এবং খুব শিগগিরই এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি করা হবে।

যেভাবে নজরদারি করা হবে

এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে ফেসবুক বা ইউটিউবের কনটেন্টের ওপর নজর রাখা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে আয়ারল্যান্ডে সোশ্যাল মিডিয়া গবেষক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড হেলথ গ্রুপের তথ্য প্রযুক্তিবিদ ড. নাসিম মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার চাইলে দুইভাবে এসব কন্টেন্টের ওপর নজর রাখতে পারবে।

প্রথমত, ফেসবুক বা গুগলের মত বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকার তথ্য চাওয়ার মাধ্যমে। অনেক দেশই তাদের প্রয়োজনে ফেসবুক বা গুগলের কাছে তথ্য চেয়ে থাকে।

দ্বিতীয়ত, পরোক্ষভাবে নজরদারি করা, যেমন বিশেষজ্ঞ বা পারদর্শী কারও মাধ্যমে পুরো ফেসবুক নেটওয়ার্ককে মনিটর করা।

এ ধরনের কাজের জন্য আলাদা কোম্পানি আছে। যারা আপনার হয়ে ফেসবুক বা গুগলের ওপর নজরদারি করতে পারে।

যদি ক্ষতিকর কোন শব্দ বা মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে চলে যায় তখন এই কোম্পানিগুলো আপনাকে সে বিষয়ে দ্রুত জানাতে পারবে।

তবে তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী যেটা বলছেন, সরকার কিছু প্রযুক্তি আনতে যাচ্ছে, যেটা থেকে জানা যাবে যে, কোথায়, কী ধরনের ভিডিও আপলোড হয়েছে, কারা এসবের পেছনে জড়িত।

Manual6 Ad Code

সুনির্দিষ্টভাবে এই ধরনের নজরদারি করার কোন প্রযুক্তি নেই বলে জানান ড. নাসিম মাহমুদ।

তার মতে, এ ব্যাপারে পারদর্শী কাউকে নিয়োগ দেয়া যায়, যার কাজ হবে প্রতিনিয়ত ওই মাধ্যমগুলোকে মনিটর করা।

তবে মানুষের কাজটি এখন একটি সফটওয়্যার দিয়েই করা সম্ভব।

Manual4 Ad Code

সফটওয়্যারে যদি নির্দিষ্ট কোন শব্দ বাছাই করে দেয়া হয়, তাহলে কেউ সেই শব্দ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সফটওয়্যারটি বিস্তারিত তথ্যসহ আপনাকে একটা ইমেইল পাঠিয়ে দেবে।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট শব্দের সাথে নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির নাম এসেছে কিনা এবং সেটা ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক কিনা এ ধরনের কাজগুলো সেই সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা যায়।

কেউ যদি অন্য কোন দেশে বসেও এমন কাজ করে থাকে তাহলেও সেই সফটওয়্যারটি দিয়ে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।

অনেকেই তাদের পেশাগত প্রয়োজনে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকেন।

Manual2 Ad Code

বিতর্কিত তথ্যগুলো কি মুছে দেয়া যাবে?

ওই সফটওয়্যার ক্ষতিকর কন্টেন্ট সনাক্ত করতে পারলেও সেগুলো আর মুছে দিতে পারে না।

এ বিষয়ে ড. নাসিম বলেন, যেটা একবার পোস্ট করা হয়ে যায় সেটা চাইলেই ডিলিট করা সম্ভব না।

তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ সরকার যেটা করতে পারেন সেটা হল, তারা সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চাইতে পারেন।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই ফেসবুকের কাছে তাদের ব্যবহারকারীদের তালিকা দিয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়।

এ বছর হয়ত ১০০ মানুষের তথ্য চেয়েছে, সামনের বছরে হয়তো এক হাজার মানুষের তথ্য চাইতে পারবে।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে?

এখানে কি তাহলে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা বা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা থাকছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. নাসিম বলেন, এটি ব্যাপকভাবে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে।

তিনি বলেন, আপনি যদি আগে থেকেই জানেন যে আপনি মুখ খুললে, আপনাকে খুঁজে বের করে জিজ্ঞেসাবাদ করা সম্ভব। তাহলে এই মুখ খোলার হার অনেক কমে যাবে।

ড. নাসিমের মতে, যারা মূলধারার গণমাধ্যমের কাছে তাদের মনের কথাগুলো বলার সুযোগ পান না তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারস্থ হন।

এখন যদি এই সামাজিক মাধ্যমের ওপর সরকার রীতিমত ঘোষণা দিয়ে সফটওয়্যারের সাহায্যে, বিশেষায়িত হার্ডওয়্যার দিয়ে বা শক্তিশালী কোন সার্ভার ব্যবহার করে সবার নেটওয়ার্কে প্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে সাধারণ মানুষ কথা বলা থেকে বিরত থাকবে বলে জানান ড. নাসিম মাহমুদ।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2018
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..