সবার ভালোবাসায় বাচতে চায় সাংবাদিক ইকবাল মনসুর

প্রকাশিত: ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০১৮

সিলেটে বিপিএলের খেলা চলছে। সারা সিলেটবাসী মত্ত ক্রিকেট উন্মাদনায়। সিলেটে যে কোনো বড় ইভেন্ট মানেই ইকবাল মনসুরের আবশ্যিক উপস্থিতি। আলোকচিত্রী সাংবাদিক তিনি। পেশার খাতিরেই তাকে যেতে সব অনুষ্ঠানে। বড় আয়োজনে তো উপস্থিত হতেই হয়। কিন্তু বিপিএলের মাঠে অনুপস্থিত ইকবাল মনসুর।
কিভাবে মাঠে যাবেন?- তখন তিনি যে জ্বরে কাবু হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী। বিপিএল চলাকালনীন সময়েই, মানে গত নভেম্বরের শুরুতে খুব জ্বর হয় তাঁর। প্রথমে স্বভাবসুলভ পাত্তা দেননি। ভেবেছেন সামান্য জ্বর- দু’দিন পরেই সেরে যাবে। বাসায় বসেই সেরে উঠার অপেক্ষায় থাকেন।
কিন্তু এ জ্বর বড় নাছোড়বান্দা। ছাড়তে চায় না। স্বজনরা পীড়াপীড়ি করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান তাকে। ডাক্তার ওষুধ দেন। তবু ছাড়ে না। একদিন কয়েকজন সহকর্মী জোড় করেই ইকবাল মনসুরকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরপর এই টেস্ট সেই টেস্ট কত টেস্ট হলো। ওসমানী হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলো। ঢাকায় গিয়েও বিভিন্ন টেস্ট করিয়ে ধরা পড়লো যকৃতের (লিভার) সংক্রমন। দেশের চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলেন দ্রæত দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার। স্বজন-সহকর্মীরা ভারতের দিলøীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করান মনসুরকে। সেখানকার চিকিৎসকরা দ্রæত রিভার ট্রান্সপ্লান্টের। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্যখানে। ইকবাল মনসুরের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
এতো টাকা কোথায় পাবেন মনসুর? মা-বোনদের নিয়ে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। চাকুরীর বেতনে সংসারের খরচ চালিয়ে আর সঞ্চয়ের সুযোগ কই?
সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এলেন বন্ধু আর সহকর্মীরা। তারা পাশে দাঁড়ালেন প্রিয় সহকর্মী ইকবাল মনসুরের। ইকবাল মনসুরের চিকিৎসা সহায়তার জন্য ‘ইকবাল মনসুর ট্রিটমেন্ট ফান্ড’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই নামে একটি ব্যাংক হিসেবও খোলা হয়। ব্যাংক হিসেব নং- ৪১৪৪১০১০৩৯৫৯১, পূবালী ব্যাংক।
দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করছেন ইকবাল মনুসর। ছিলেন বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি। সাংবাদিক হিসেবে সিলেটের বহু মানুষেরই পরিচিত তিনি। কিন্তু মনসুরের যারা সহকর্মী-বন্ধু-স্বজন; তারা চেনের ব্যক্তি মনসুরও। যিনি বিশাল হৃদয়ের অধিকারী। সদা হাসিমুখ। কারো বিপদ শুনলেই যিনি সবার আগে ছুটে যান। মধ্যরাতেও কারো প্রয়োজনে হাজির তিনি।
সেই ইকবাল মনসুর এখন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে শুয়ে আছেন বিছানায়। সিলেট-ঢাকা-মেঘালয়-দিল্লী ঘুরে বেড়াচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। যিনি অন্যের বিপদে ছুটে যান সবার আগে তাঁর এই দুর্দিনে কি এগিয়ে আসবো না আমরা?
কবি নাজিম হিকমত লিখেছিলেন- ‘দুঃসময় থেকে সুসময়ে মানুষ পৌঁছে দেবে মানুষকে/ আমাদের ছেলেটা নিরাময় হয়ে উঠবে।’
আমরাও বিশ^াস করি, দুঃসময় থেকে ইকবাল মনসুরকে পৌঁছে দেবেন তাঁর কাছের মানুষেরা। আমাদের ভাইটা সুস্থ হয়ে উঠবে।
আমাদের সকলের সহযোগীতা, একটু সাহায্য আর শুভকামনায় আবার কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসবেন ইকবাল মনসুর। ক্যামেরা নিয়ে দৌড়ে বেড়াবেন পুরো সিলেট। সকলের সুসময়ে-দুঃসময়ে। হাসি ফুটবে তার পরিবারের মুখে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..