ডিআইজি মিজানকে নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়!

প্রকাশিত: ১১:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০১৮

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : অস্ত্রের মুখে তরুণীকে উঠিয়ে নিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে বিয়েতে রাজি করার ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ভার্চুয়াল জগতে বইছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। যুগান্তরের অনুসন্ধানী রিপোর্টটি গত তিন দিনে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। তার এ কুকীর্তির বিষয় জানাজানি হওয়ার পর ভার্চুয়ালবাসী তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন। বাহিনীকে কলংকিত করার কারণে বেশির ভাগ মানুষ বিভিন্ন অপকর্মের হোতা ডিআইজি মিজানের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন। এছাড়া রসালো ও তীর্যক মন্তব্যও করেছেন অনেকেই। ফেসবুকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নামে নানা অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগী অনেক পাঠক।

মোহাম্মদ মহি নামের একজন লেখেন, এই ডিআইজিকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হোক, এরা দেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি পুলিশ বাহিনীর জন্যও ক্ষতিকর।

চট্টগ্রামের বাসিন্দা আবু তালেব হায়দার বলেন, ‘সাহসী নিউজ করার জন্য যুগান্তর পত্রিকাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর পাপীরা কোনো দল কিংবা মতের হয় না। পাপীদের কোনো জাত-ধর্ম নেই। সুতরাং কেউ যদি পুলিশ বাহিনী আর কোনো রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ করে যারা বলে তারা আসলে পুরাই বলদ।’

সিলেট ল’ কলেজের ছাত্র হেলাল আহমেদ বলেন, খারাপ লোকের কোনো পেশাজীবী পরিচয় নেই। বিচার হবে ব্যক্তির। তবে পেশার ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য স্বাভাবিক অপরাধীর চেয়ে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।

কবিরুল সাগর নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, ‘কারো ব্যক্তিগত অপ্রত্যাশিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী কখনোই বহন করে না, করবেও না। ঐতিহাসিক পুলিশ সপ্তাহকে সামনে রেখে নাটকীয় ঘটনার প্রচার ও প্রসার একপ্রকার ষড়যন্ত্রের নীলনকশা কিনা আমার জানা নেই। তবুও গৌরবোজ্জ্বল বাহিনীর লক্ষাধিক সদস্য ইমেজ সংকটের আশংকায় মন ভারাক্রান্ত। আশা করছি,অবিলম্বে সত্য প্রকাশিত হবে,আর আমরাও অপবাদ থেকে অবমুক্তি পাব। প্রতিদিন জনগণের সেবক হয়ে রাষ্ট্রীয় পোশাকটা গায়ে জড়াই বলেই পুলিশের অসম্মানে অন্তর কাঁপে।

সাজু আহমেদ লেখেন, আমার মনে হয় সরকার পুলিশ বাহিনীকে একটু বেশি ক্ষমতা দিয়েছে। যার কারণে কিছু কিছু সদস্য বড় বড় অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

আল আমিন নামের একজন লেখেন, কারো ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীকে দায়ী করা যাবে না। তবে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনাটির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দায়িত্বও সংশ্লিষ্টদের।

সাইদুর রহমান বলেন, ডিআইজি মিজানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া খুবই জরুরি। না হলে পুলিশের অব্যাহত দুর্নাম আরও পোক্ত হবে।

ডিআইজি মিজানুর রহমানকে বিকলাঙ্গ ও বিকৃত নপুংসক আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সৈয়দ আতিকুল আলম জুয়েল বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে চাকরি করার কোনো অধিকার এদের থাকবার কথা নয়।

সৈকত আহমেদ লেখেন, বিএনপিকে কোণঠাসা করতে গিয়ে সরকার অতিরিক্ত পুলিশনির্ভর হয়ে পড়েছে আর পুলিশ ও চোখ বন্ধ করে সেই সুযোগ নিয়ে নিয়মের বাইরে গিয়ে অপরাধ করছে ও করাচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র অপরাধে নিমজ্জিত সেখানে আমরা সাধারণ মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছি।

হালিম ভূঁইয়া নামের একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, এসব ডিএমপি কমিশনারগুলো পুরোপুরি বদরুল কোটায় নিয়োগ পাওয়া, তাই কাজগুলোও বদরুল-তুফানদের (ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতার মতো) হবেই এটা স্বাভাবিক।।

নূর মাক্কাহ আলম নামের একজন লেখেন, সত্য কথা বলেছেন। দলীয়ভাবে ও মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে এসব অমানুষের চাকর বানানোর সময় মেধা আর যোগ্যতাকে পরিহাস করা হয়েছে। আজ তাই অনেক প্রশাসনিক পদের মানুষ নামের এই কলংকগুলো মাদক, নারী, গুম, খুন, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণসহ সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

জাহাঙ্গীর জুয়েল নামের একজন লেখেন, এটা নিয়ে একটা সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অভিযোগ। একজন এই মাপের অফিসার এতটা কাণ্ডজ্ঞানহীন হতে পারেন? দুঃখজনক। সত্যিটা জনসম্মুখে প্রকাশ করা উচিত।

রিজাউল ইসলাম খান নামের একজন লেখেন, তালি এক হাতে বাজে না। ডিআইজি বলেই আপনি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলেন। অতিরিক্ত সুবিধা নেয়ার জন্য। আর এখন সব দোষ নন্দঘোষের। ডিআইজি… পুলিশের একটি সম্মানজনক পদবি। কাজটা করার আগে একটুও ভাবল না পুলিশের সম্মানের কথা।

পাপল নামের একজন রসাত্মকভাবে লেখেন, ব্যাটা অতিরিক্ত পদবির কারণে একটু অতিরিক্তই করে ফেলেছে।

মিজান মজুমদার নামের একজন লেখেন, এসব দেখে এখন আর অবাক হই না। পুলিশ মানুষ খুন করে, ধর্ষণে লিপ্ত হয়, নিরীহ মানুষের পকেটে মাদক ঢুকিয়ে টাকা কামায়। এটা তাদের জন্য খুবই স্বাভাবিক।

ডিআইজি কাণ্ডে বিস্ময় প্রকাশ করে বাদল নাবিল করিম প্রশ্ন করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে বাড়ি বসেই তথাকথিত ভদ্রলোকদের ভেতরের সব তথ্য এখন বিশ্ববাসী জানতে পারছে। সরকারি বাহিনী পুলিশও এ তথ্যের বাইরে নেই। এই পোস্টটি এখন ভাইরাল। পুলিশের একাত্তরের অর্জন এখন কোন অবস্থানে? পুলিশের অনৈতিক আচরণের কারণে এবার নির্বাচনেও ভোটের প্রভাব থাকবে বলে মনে হয়।

প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম লেখেন, এ কোন দেশে আমরা বাস করছি। পুলিশ যা ইচ্ছা তাই করছে; বলার কেউ নেই? নিজেদের বউ-বাচ্চা বিদেশে রেখে দেশে অন্যের বউ মেয়ে নিয়ে তামাশা করে। কী করে এত সাহস পায়?

শাহরিয়ার চৌধুরী নামের একজন লেখেন, ওনার নামে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা হওয়া উচিত। চরিত্রের সার্টিফিকেটে লাল দাগ হওয়াতে চাকরিচ্যুত করা অনেক জরুরি।

নাহিদ নামের একজন লেখেন, কোনো কিছুতেই লাভ নেই, এরা পুলিশ, এদের কিছুই হবে না। খুব বেশি হলে কয়েক দিন পত্রিকা গরম খবর হবে…..

নূর হোসেন নামের একজন লেখেন, আরে এটা তো আগের চাইতে ভালো খবর, জোরপূর্বক বিয়ে করছে রেপ (ধর্ষণ) করে যে ছেড়ে দেয়নি তার জন্য দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া উচিত, বদরল, তুফানদের ভাই হিসাবে অনেক ভালো কাম করছে।

বুরহান উদ্দিন নামের একজন লেখেন, কথায় নয় সত্যিকারে দেশে আইনের শাসন থাকলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীকে শাস্তি দেয়া হোক।

সুমন লেখেন, এটা (জোর করে বিয়ে) যদি সাধারণ একজন মানুষ করত তাহলে তাকে কম করে হলেও পুলিশকে ২ লাখ টাকা দেয়া লাগত! তারপরও সে জামিন পেত কিনা জানি না।

সুজন ফারুক নামে এক চলচ্চিত্রকর্মী বলেন, ছি ছি ছি একজন পুলিশ কমিশনার হয়ে এই ধরনের নোংরা কাজ কীভাবে করল সে? এর বিচার কি বাংলার মানুষ দেখবে? নাকি আড়াল হয়ে যাবে? এ দেশের মানুষ আর কি দেখবে, তা আল্লাহই জানে। আমরা সারা বাংলার মানুষ এর বিচার চাই এবং তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হোক।

আবদুল কাদেরের মন্তব্য, এই আইন রক্ষাকারী বাহিনী যদি আইন ধ্বংসের কাজে লিপ্ত হয়, তখন সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?

জনপ্রিয় অনলাইন এক্টিভিস্ট ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য রসালো ভাষায় লেখেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত একটি বিবাহ করিতে গিয়া অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করিতেই পারেন, এই নিয়া ফেসবুকে অতিরিক্ত হইচই করার কী আছে বুঝি না। এই জন্যই গুরুজনরা বলেন, অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..