পর্যটন কেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি এখন ধূলোর রাজ্য

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০১৮

Manual1 Ad Code

রাশেদ আহমদ : অপার সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি প্রকৃতি কন্যা দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র জাফলং ও ব্যবসায়ী কেন্দ্রস্থল বিছনাকান্দি। প্রকৃতি কন্যা নামে আদৃত এই পর্যটন কেন্দ্রের সবটুকু সীমানাজুড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। চির সবুজ আকাশ ছোঁয়া এ পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে চলছে অবিরাম ঝর্ণাধারা। ঝর্ণার স্বচ্ছ জলরাশি আর পাহাড়ী সৌন্দর্য্যর সাথে জুড়ে আছে উপজাতি খাসিয়া সম্প্রদায়ের কমলা বাগান, সারীবদ্ধ সুপারী গাছের গাঁ জড়িয়ে থাকা পান গাছ, পাতাল ভূমি থেকে ৫/৬ ফুট উঁচুতে নির্মিত খাসিয়া সম্প্রদায়ের বসত ঘর, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলের অতলে ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির পাথর এবং জাফলংয়ের মানুষের সহজাত বন্ধুতা এর সবকিছুই আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।

Manual5 Ad Code

প্রকৃতির এ রূপ দেখতে তাই সব সময়ই জাফলং আসেন সৌন্দর্য্য প্রেমীরা। তাই এসব নৈস্বর্গিক সোন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে পর্যটন কেন্দ্র জাফলং। সরকারও এখান থেকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আদায় করেন প্রতিবছর। কিন্তু এরপরও এই অপার সৌন্দর্য্যরে যাতায়তের রাস্তাটি বেহাল অবস্থা পর্যটন কেন্দ্র সম্পর্কে রাষ্ট্রের অনুদার ও আন্তরিক মনোভাবের পরিচয় বহন করে। কিন্তু জাফলংয়ের তামাবিল শুল্ক ষ্টেশন-বল্লাঘাট এলাকা এখন ধূলোর রাজ্য পরিনিত হয়েছে। অপর দিকে ব্যবসায়ী কেন্দ্রস্থল ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত উপজেলার এক নং রুস্তমপুর ইউনিয়নের পিরের বাজার থেকে বিসনাকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৭ কি.মি. এলাকায় শুধু ধূল আর ধূলের রাজ্য পরিণিত হয়েছে। যার দরুণ এই সকল রাস্তা দিয়ে যাতায়তের ক্ষেত্রে পর্যটকসহ স্থানীয় এলাকবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কে ধূলো বালির উৎস হিসেবে সড়েজমিন জাফলং ও রুস্তমপুরের এলাকা পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, তামাবিল শুল্ক ষ্টেশনের আশপাশ এলাকায় মহাসড়কের পাশে অপরিকল্পিত ভাবে ডাম্পিং স্থাপন করে ভারত থেকে এলসির মাধ্যেমে আমদানীকৃত পাথর রাখা হয়। এরপর সেখান থেকে বিভিন্ন ক্রাশার মিলে পাথরগুলো সরবরাহ করা হয়। এতে করে পাথর লোড-আনলোড করার সময় গুড়া বা ডাস্ট এর সৃষ্টি হয়। আবার নলজুরি, গুচ্ছগ্রাম, ১নং আপ মোহাম্মদপুর এলাকায় মহাসড়কের দুপাশে স্থাপিত ছোট ছোট ক্রাশার মেশিন গুলো থেকে পাথর ভাঙ্গার সময় ডাস্ট উড়ে এসে রাস্তায় পড়ছে। মামার বাজার ও বল্লাঘাট এলাকাতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। ধূলা-বালি সৃষ্টি রোধে ক্রাশার মেশিন গুলোতে পাথর ভাঙ্গার সময় পানি ব্যবহার করার কথা থাকলেও এ নিয়ম মানছেনা কেউ। এদিকে রুস্তমপুরের পিরের বাজার থেকে লামার বাজার, হাদারপার পর্যন্ত অপরিকল্পিত ভাবে গরে তুলেছে ক্রাশার মিল। এইসব ক্রাশার মিলের ডাষ্ট ও রাস্তার ধূলোর কারণেই জন সাধারণকে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। ফলে প্রতিনিয়তই এসব এলাকায় যাতায়তকারী মানুষজন এবং মিলগুলোতে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীরা শ্বাসকষ্ট, হাঁপানী, কাশি এবং সিলোকোসির মতো ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

Manual5 Ad Code

বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারীর একাদিক ব্যবসায়ী ক্ষোভের সাথে বলেন এলাকায় ব্যবসা করতে এসেছি সুস্থ কিন্তু ধূলের কারণে ফিরতে হবে অসুস্থ হয়ে। পর্যটন কেন্দ্র জাফলং বেড়াতে আসা পর্যটকদের সাথে আলাপকালে তারা এই প্রতিনিধিকে জানান এই প্রথম জাফলং বেড়াতে এসে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আমরা মুগ্ধ ও বিমোহিত। তবে ডিজিটাল সরকারের আমলে এখানে যে ধূলোবালির ছড়াছড়ি তা দেখে মনে খুবই কষ্ট পেয়েছি। বেবে পাইনা অপার সৌন্দর্য্যরে লীলা ভূমি জাফলংয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক আসলেও জাফলংয়ের রাস্তাঘাট ও পরিবেশের দিকে সরকারের কোন সুনজর নেই দেখে সত্তি মনে খুব কষ্ট পেয়েছি।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা সাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ভাঙ্গা পাথরের ডাস্ট বা ধূলো বালি জনস্বাস্থ্যর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পাথর ভাঙ্গার ডাস্ট বা ধূলোবালি নাক মুখ দিয়ে মানুষের দেহে প্রবেশ করে প্রথমে শ্বাসকষ্ট, কাশি, এলার্জি, ব্রঙ্কাইটিস, এ্যাজমা সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..