পেঁয়াজের লাগামহীন ছুট, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়

প্রকাশিত: ৪:২৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০১৭

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম। গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

Manual2 Ad Code

মৌসুমের শুরতে পেঁয়াজের দামের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পরেছে সাধারন মানুষ। গত বছর এই সময়ে প্রতি কেজি পিঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। এছাড়া গত বছরের তুলনায় পিঁয়াজের উত্পাদন ও আমদানি দুটোই বেড়েছে। তাহলে কেন বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম?

Manual8 Ad Code

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে পিঁয়াজের সরবরাহ কম। বিশেষ করে ভারত পিঁয়াজের রফতানি মূল্য বৃদ্ধি করায় দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির বাজারে রীতিমতো ‘আগুন’ লেগেছে। দুই সপ্তাহ আগে হঠাত্ করেই পিঁয়াজের রফতানি মূল্য এক লাফে টন প্রতি ৩৫২ ডলার বাড়িয়েছে ভারত। এর প্রভাবেই পিঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা। তবে কিছু কিছু স্থানে এখনও ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ।

শুক্রবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ঢাকার বাজারে বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৮৫-৯৫ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে ৩৯ শতাংশ বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী লোকমান বলেন, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। মজুদ প্রায় ফুরিয়ে আসায় দাম বাড়ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ভারতে দাম বাড়ার কারণে।

Manual1 Ad Code

বাজার কোর্টে আসা এক  ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম যেন লাগামহীন ঘোড়া। ছুটছে তো ছুটছেই। আভাবে চলতে থাকলে পেঁয়াজ ছাড়াই  তরকারি রান্না কোর্টে হবে।

দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর সূত্র জানায়, প্রতি টন পিঁয়াজের রফতানি মূল্য আড়াই’শ ডলার থেকে কয়েক দফা বাড়িয়ে গত ২৩ নভেম্বর ৫শ ডলার থেকে ৮৫২ ডলার নির্ধারণ করে ভারতের কৃষিজাত কাঁচা পণ্যের মূল্য নির্ধারণী সংস্থা (ন্যাফেড)। গত অক্টোবর মাসে প্রতি টন পিঁয়াজের রফতানি মূল্য ২৫০ ডলার থেকে সাড়ে ৩শ ডলার নির্ধারণ করে। এরপর দফায় দফায় তা বাড়িয়ে ৫শ ডলার নির্ধারণ করেছিল ভারত। এরপর গত ২৩ নভেম্বর এক লাফে ৩৫২ ডলার বাড়িয়ে প্রতি টন পিঁয়াজের রফতানি মূল্য নির্ধারণ করেছে ৮৫২ ডলার। এরপর থেকেই পিঁয়াজের বাজারে রীতিমতো ‘আগুন’ লেগেছে।

কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার লোভই দায়ী। ভারত থেকে আমদানি স্বাভাবিক থাকায় গত মাসে পেঁয়াজের দাম এক দফা বাড়ার পর আবার কমতে শুরু করে।

কিন্তু হঠাৎ করে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। এ সুযোগ নিতে অনেক আমদানিকারক কম দামে পেঁয়াজ কিনেও সেগুলো বাংলাদেশে আনছেন না। এ কারণে বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।

Manual5 Ad Code

তিনি জানান, সরকারের নজরদারির কারণে এখন ওই পেঁয়াজ খালাস শুরু হয়েছে। ওই পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। এজন্য ১-২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে বছরে ২২ থেকে ২৪ লাখ টন পিঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টন পিঁয়াজ উত্পাদিত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার টন বেশি। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আলোচ্য সময়ে দেশে ১০ লাখ ৪১ হাজার টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার টন বেশি। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে পিঁয়াজের যোগান এসেছে ২৯ লাখ টন। যা চাহিদার চেয়ে ৭ লাখ টন বেশি। তারপরও বাড়ছে পিঁয়াজের দাম।

এদিকে পিয়েজের দাম বাড়লেও কমেছে কিছু কিছু সবজির দাম। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, শালগম, পাকা ও কাঁচা টমেটো সবকিছুর পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে এবং দামও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

প্রতি কেজি পাকা টমেটো ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০-৪০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শালগম কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

গরুর মাংসের কেজি ৪৩০ টাকা, খাসির মাংস ৬০০-৬৫০টাকা ব্রয়লার মুরগি স্থান ভেদে ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রায় সব ধরনের মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..