সিলেট ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ও ১২ নং গোয়াইনঘাট সদর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন দুই তরুণ আলেম। তাঁদের প্রতীক খেজুরগাছ। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তরুণ এ আলেম বা মাওলানাদের নিয়ে পুরো উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা। চায়ের টেবিল থেকে পাড়ার অলিগলিতে চাউর হচ্ছে এবার খেজুরগাছ চমক দেখাতে পারে মর্মে। ২ নভেম্বর সিলেটের দু’টি উপজেলা, একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়নে স্থানীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ক্ষমতসীন দল আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও রয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী। বিএনপির অনেক প্রার্থী দলীয় পরিচয় ছাড়া নির্বাচন করছেন। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি বাঁছাইকে কেন্দ্র করে এসব এলাকায় বইছে নির্বাচনি হাওয়া।
২ নং পশ্চিম জাফলং ইউপি নির্বাচনে খেজুরগাছ প্রতীক নিয়ে জমিয়ত মনোনীত মাওলানা মুফতী আমীর আহমদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি একজন সুপরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তাঁর পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা। মাওলানা মুফতি আমীর আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের বুগইলকান্দি গ্রামে ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম ছিলেন সত্যিকার একজন দেশপ্রেমিক।
মুফতি আমির আহমদ, ১৯৯৬ ইং সনে মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা শামসুদ্দিন কাসেমী রহ. প্রতিষ্ঠিত রাজধানী ঢাকার জামিয়া আরজাবাদ থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। পরে ভারতের দারুল উলূম সাইলাম মাদরাজ থেকে ইফতা শেষ করেন। ভারতের মাদরাজ থেকে ইফতা শেষ করে দেশে ফিরে তিনি জৈন্তাপুরের জামিয়া দারুল উলুম হেমুসহ একাধিক মাদরাসায় শিক্ষক করেন। ২০১২ সালে নিজগ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন জামিয়া মাদানিয়া বুগইলকান্দি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বিগত ভয়াবহ বন্যাকালে মুফতি আমীর আহমদ ছিলেন জানতোড় একজন সেবক। নিজের ঘর বন্যায় ভাঙা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন মানুষের পাশে। মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত।
মুফতি আমীর আহমদ সম্পর্কে এ প্রতিবেদককে বলা হয় জনগণের ধারণা নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এবার বিজয়ের মালা পরবেন মুফতি আমির আহমদ। গত নির্বাচনেও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই করেছিলেন মাওলানা। দৈনিক জৈন্তা বার্তার এ প্রতিবেদকে মুফতি আমির আহমদ জানান- তিনি ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মান, জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, বাজেটের সুষম বন্ঠন ও জন হয়রানি বন্ধকরণসহ সর্বত্র ইসলামকে সমুন্নত করতে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন।
অপরদিকে ১২নং সদর ইউপিতে একইভাবে খেজুরগাছ প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন ডাক্তার মাওলানা আবুল খায়ের। তিনি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দীন ও মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি নেতৃত্বাধীন জমিয়ত মনোনীত প্রার্থী। মাওলানা আবুল খায়ের গোয়াইনঘাট সদর ইউপিতে প্রার্থী হওয়ায় পুরো উপজেলাজুড়ে তাঁর আলোচনা চলছে। মাওলানা আবুল খায়ের একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে পুরো ইউনিয়নজুড়ে একটা ভালো পরিচয় রয়েছে। তাঁর পিতার নাম- নূর উদ্দিন। সদর ইউপির স্থানীয় কালিজুরী পিরের বাজার প্রতিষ্ঠিত “জনতা ফার্মেসী” পরিচালনার মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিন থেকে ডাক্তার মাওলানা আবুল খায়ের এলাকার উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজ করে আসছেন। তিনি দারুল উলূম কানাইঘাট মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পাশ করেন। এ ছাড়াও তিনি বিগত বন্যা ও মহামারী করোনাকালে একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে অবিরাম ছুটে চলেছেন জনগণের পাশে।
ডাক্তার মাওলানা আবুল খায়ের এ প্রতিবেদককে জানান- সম্ভাবনাময় ইউনিয়নকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে, সুষ্ঠু সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে, তরুণ সমাজের সচ্ছ সুন্দর মানস বিকাশ ঘটাতে, নতুন ইউনিয়নকে চ্যালেঞ্জিংভাবে সমৃদ্ধ করে তুলতে ও নাগরিক অধিকার আদায়ের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য- সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার চার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ছিলেন ২৬ জন। তন্মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন ২৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তিনজন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ৩ নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন থেকে মাসুদ আলম, ১২ নং সদর ইউনিয়ন থেকে আরশ আলী কালা মিয়া ও নাছির উদ্দিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। উপজেলার চারটি ইউনিয়ন হচ্ছে, ২ নং পশ্চিম জাফল, ৩ নং পূর্ব জাফলং,১১ নং মধ্য জাফলং ও ১২ নং গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়ন। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত মাত্র ৪ জন নৌকার প্রার্থী হলেও প্রতিটি ইউপিতে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ছড়াছড়ি রয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন এরকম ৩ জন এবং দলের মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে বিদ্রোহী ৫ জন। জমিয়ত থেকে দুইজন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে দুইজন ও জাতীয় পার্টি থেকে একজন। অন্যান্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রার্থী না দিলেও বিএনপি সমর্থিতরা স্বতন্ত্রের ব্যানারে স্থাানীয় ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চার ইউনিয়নের ২৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৩ পদে ২৪৫ জন প্রার্থী ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd