কোম্পানীগঞ্জের ধলাই ব্রীজ ও সাদাপাথরে হরিলুট : চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ৯:৫৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০২২

কোম্পানীগঞ্জের ধলাই ব্রীজ ও সাদাপাথরে হরিলুট : চাঁদাবাজি

Manual1 Ad Code

কোম্পানীগঞ্জ সংবাদদাতা :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সর্ববৃহৎ ধলাই ব্রীজের নীচ থেকে অবাধে পাথর ও চিপ তুলছে সংঘবদ্ধ একটি পাথরখেকো চক্র। সাধারণ বারকি শ্রমিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। চাঁদার বিনিময়ে সেই শ্রমিকরা ব্রীজের মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে পাথর ও চিপ তুলছে অবাঁধে। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে ব্রীজটি। যে কোনো সময় দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে ধলাই পূর্ব পাড়ের দুইটি ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ধলাই ব্রীজ। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার প্রশ্রয়ে একটি চাঁদাবাজ চক্র দীর্ঘদিন যাবত ব্রীজের নীচ থেকে পাথর ও চিপ উত্তোলন করিয়ে আসছে।

Manual6 Ad Code

স্থানীয় সংবাদসূত্র জানায়, কোম্পানীগঞ্জ থানার ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাড়ির এক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ। পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে সেই চক্রটি বারকি নৌকাপ্রতি ৫০-২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকে। ভোলাগঞ্জের আশেপাশের কয়েকটি ভাইব্রেটার ও ক্রাশার মিলে এসব চুরাই পাথর ক্রয় করে থাকে। সে সময় পুলিশের নাম উল্লেখ করে প্রতি নৌকা থেকে ৫০-২০০ টাকা আদায় করেন ভাইব্রেটর ও ক্রাশার মালিক পক্ষরা। ভোর পাঁচটা থেকে সকাল এগারটা পর্যন্ত চলে এ তান্ডব।

Manual7 Ad Code

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন শ্রমিক জানান, সারাদিন বালু থেকে চালনি দিয়ে ৫/৬ শত টাকার চিপ বের করতে পারি। সেই চিপ ভাইব্রেটরের কাছে বিক্রয় করতে গেলে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে ৫০ টাকা চাঁদা নিয়ে যায় থানা পুলিশের কথিত লাইনম্যান ফয়জুর। তিনি আরও জানান, শরীর খাটিয়ে সারাদিন কাজ করে পাই ৫/৬ শত টাকা। আর তারা ঘাটে বসে প্রতিদিন চাঁদা পায় হাজার হাজার টাকা। আরেকজন শ্রমিক জানান, ফয়জুর ছাড়াও এরশাদ আলী নামে আরেকজন আছে যিনি ১০ নং এলাকায় থানা পুলিশের নামে চাঁদা তুলেন। এ প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সেই তথ্য।

Manual5 Ad Code

জানা যায়, প্রতিদিন ২শতাধিক বারকি নৌকা থেকে ৫০-২০০ শত টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে সেই লুটেরা চাদাবাজ চক্র। এভাবে প্রতিদিন প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে আদায় করছেন ফয়জুর ও এরশাদ আলী নামের দুই চাঁদাবাজ।

সূত্রে জানা যায়, বারকি নৌকা থেকে চাঁদা আদায়ের পাশাপাশি ভোলাগঞ্জ কাস্টমস ঘাট থেকে ১০ নং এলাকার মধ্যে স্থাপিত প্রতিটি ভাইব্রেটর থেকেও প্রতিদিন ১ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে ফয়জুর রহমান ও এরশাদ আলী। প্রায় ১২ টি ভাইব্রেটর থেকে প্রতিদিন ১২ হাজার টাকা চাঁদা তুলে সেই চক্রটি।

Manual4 Ad Code

ভাইব্রেটর মালিক পক্ষের একজন ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, বারকিওয়ালারা প্রায় সময় পাথর নিয়ে আসে। যদিও পাথর উত্তোলন অবৈধ কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা সেসব পাথর ক্রয় করি। তাই নিজেদের বাঁচাতে পুলিশের লাইনম্যানদের চাঁদাও দিতে হয়। তিনি আরও জানান, যারা পাথর ক্রয় করেন সবাই চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করে। চাঁদা দিলে হয়রানি হওয়ার ভয় থাকেনা।

এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বরে সংবাদ প্রকাশের পূর্ব মুহুর্তে চাঁদাবাজ এরশাদ আলী প্রতিবেদকের কাছে ছুটে আসেন। এরশাদ আলী এ প্রতিবেদককে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে এএসআই মুখলেছুর রহমানের তথ্য প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। এ সময় এরশাদ আলীকে ভাইব্রেটর ও বারকি নৌকা থেকে চাঁদায়ের বিষয়ের জানতে চাইলে তিনি অকপটে তা স্বীকার করে প্রতিবেদককে জানান, আমরা ভাইব্রেটরে ব্যবসা করি। দিনশেষে পুলিশের টাকা গুলো কালেকশন করে ফাঁড়িতে দিয়ে আসি। এর বাইরে কিছুই করিনা। আমরা কোনো পুলিশের লাইনম্যান না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..