জাফলংয়ে প্রবেশ ফি থেকে ব্যাংকে জমা ৪০ লাখ টাকা

প্রকাশিত: ৮:৩৭ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২২

জাফলংয়ে প্রবেশ ফি থেকে ব্যাংকে জমা ৪০ লাখ টাকা

Manual6 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় ভারতের খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। পাহাড়ের বুকে আছে নদী ও ঝরনা, যার পানিতেই তৈরি হয়েছে জাফলং। স্বচ্ছ পানির নিচে দেখা যায় নানা আকার ও রঙের পাথর। সীমান্তের ওপারে ডাউকি নদীর ওপর আছে ঝুলন্ত সেতু, যা দুটি পাহাড়কে যুক্ত করেছে। সারা বছরই দর্শনীয় এ স্থান দেখতে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

Manual3 Ad Code

এত বছর ধরে বিনামূল্যেই ঘুরতে পেরেছেন পর্যটকরা। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে জাফলংয়ে প্রবেশে চালু করা হয় ফি। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে জনপ্রতি এখন ১০ টাকা ফি দিয়ে টিকিকের মাধ্যমে পর্যটকদের প্রবেশ করতে হয় জাফলংয়ে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মাসে প্রবেশ ফি বাবদ ৪০ লাখ টাকা জমা হয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।

এদিকে, ফি চালুর পর থেকে অনেকেই এর সমালোচনা করেছেন। জাফলংয়ের টিকিট কাউন্টারে বৃহস্পতিবার (৫ মে) পর্যটকদের মারধরের ঘটনার পর আবারও টিকিটের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিক, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজিনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সচেতন সিলেটবাসী প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন। এটিকে অনেকে ‘প্রশাসনের চাঁদাবাজি’ বলেও মন্তব্য করেন।

আগে পর্যটকরা জাফলং জিরো পয়েন্টে যেতেন বল্লাঘাট এলাকা দিয়ে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন গুচ্ছগ্রাম এলাকা দিয়ে পর্যটক প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদের ওঠানামার সুবিধার জন্য বানানো হয়েছে সিঁড়ি। আর গুচ্ছগ্রামে বিজিবি ক্যাম্পের পাশেই বসানো হয়েছে টিকিট কাউন্টার।

Manual8 Ad Code

কাউন্টারের পাশে টানানো সাইনবোর্ডে লেখা, ‘জাফলং পর্যটন এলাকার উন্নয়ন ও পর্যটন সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা পর্যটন কমিটি ও উপজেলা পর্যটন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যটক প্রবেশে পর্যটকপ্রতি ১০ টাকা হারে ফি নির্ধারণ করা হলো।’

সাইন বোর্ডের নিচে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নাম আছে। তাদের একজন জেলা পর্যটন কমিটির; অন্যজন উপজেলা পর্যটন কমিটির সভাপতি।

Manual2 Ad Code

ফি নেওয়ার জন্য বসানো একাধিক টিকিট কাউন্টারে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান কিছু কর্মী। তারা প্রতিটি দর্শনার্থীর কাছ থেকে টাকা আদায় করেন।

প্রবেশ ফি চালুর বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘গত বছর জেলা পর্যটন কমিটির সভায় ফি চালুর সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এটি কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মীর মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ফি আদায় করে।’

Manual7 Ad Code

পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘১০ টাকার বিনিময়ে আমরা পর্যটকদের কয়েকটি সেবা দেই। পর্যটন এলাকায় ড্রেস চেঞ্জ করার রুম ও টয়লেট করা হয়েছে। পর্যটকরা এগুলো বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারেন। সেই সঙ্গে রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবস্থা। এ ছাড়া প্রবেশ ফি দিয়ে পর্যটন এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখারও কাজ করা হয়। টিকিট দেখালে পর্যটকরা সহজে ও নির্ধারিত দামে ফটোগ্রাফার, ট্যুর গাইড ও নৌকার মাঝি পান।’

তবে এসব সেবা নিয়ে নানা অভিযোগ ও অসন্তোষ আছে পর্যটকদের মধ্যে। পর্যটকদের অভিযোগ- চেঞ্জরুম আর টয়লেটের সংখ্যা খুব কম। এগুলো তেমন পরিষ্কারও নয়। আর ফ্রি ইন্টারনেট এতটাই স্লো যে ব্যবহার করা যায় না।

এ পর্যন্ত জমা হওয়া টাকার বিষয়ে ইউএনও তাহমিলুর রহমান জানান, ‘টিকিট ফি থেকে প্রতিদিন সমান টাকা ওঠে না। একেক দিন একেক রকম হয়। আমি দিনে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা আদায় হতে দেখেছি। উপজেলা পর্যটন কমিটি নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। এই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ ফি জমা হয়। ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করেন। এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকা জমা হয়েছে।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

May 2022
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..