জাফলং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব : প্রশাসন নিরব?

প্রকাশিত: ১:৩৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২২

জাফলং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব : প্রশাসন নিরব?

Manual8 Ad Code

ক্রাইম প্রতিবেদক :: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের জিরো পয়েন্ট পর্যটক কেন্দ্রকে ইসিএ ঘোষণা করাতে এলাকার ‌সকল পাথর কোয়ারি বন্ধের ঘোষণা হয়। কিন্তু চুর শুনে না ধর্মের বুলি। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে দিবালোকে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে স্থানীয় একটি কতিপয় অসাধু পাথর খেকু চক্র‌। স্থানীয় এলাকার সচেতন মহলের অভিযোগ এই চক্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের দহরম-মহরম মাধ্যমে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ড। যার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসছে না তাদের এই অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের হরিলুটের দৃশ্য। নিরব ভূমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন।

Manual1 Ad Code

এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে টিম উঠে আসতে থাকে বহু অজানা তথ্য। অবৈধভাবে প্রতিনিয়ত পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছেন জাফলং শান্তিনগর এলাকার ছাত্তার মিয়া, হেনরি লামিন‌, বকুল ও জাফলং নবম খণ্ড এলাকার রফিক। জাফলং এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের নেপথ্যের মূল নায়ক হচ্ছেন এই চার জন।

Manual3 Ad Code

তাদের ইশারায় ইসিএ এলাকায় পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এই এলাকায় মাঝে-মধ্যে লোক দেখানোর জন্য প্রশাসনের ঘোরাফেরা করতে দেখা গেলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে অবৈধভাবে এই পাথর উত্তোলন কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। বরং ইসিএ এলাকার বাহিরে কিছু এলাকায় দু-একটি গর্ত করে পাথর উত্তোলন করলে এই সমস্ত এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের ঘোরাফেরা মধ্যে নজরে পড়ার মতো হলেও কোন এক রহস্যের মায়াজালে আটকে থাকার কারণে এসব তাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। আর স্থানীয়ভাবে এই পাথর খেকু চক্র প্রভাবশালী হওয়াতে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না। কিন্তু এ ব্যাপারে এই পাথর খেকু চক্রের কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা বলেন- আমরা তো ইসিএ এলাকা থেকে ৩শ থেকে ৫শ গজ বাহিরে আছি। কিন্তু ইসিএ কথাটির মূল সারমর্ম কি এটাও তারা অনেকেই জানেন না। তবে ইসিএ এর অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় ইসিএ বলতে ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়াকে বুঝায়। যার পরিশুদ্ধ বাংলা অর্থ আমরা খুঁজে পাই পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা। স্থানীয় পূর্ব জাফলং এলাকায় ইসিএ জনু লাল নীল এবং সবুজ রঙে বেষ্টিত খুঁটি দ্বারা আবর্তিত। এসব চিহ্নিত করে এলাকায় কিন্তু এর বাইরেও।

Manual8 Ad Code

কিন্তু কোন এক অদৃশ্য মায়াজালে আটকে পড়ায় এই এলাকা এগুলো এখন না কি আইনের চোখে ইসিএ এলাকার বাহিরে পড়ে যায়। এ ব্যাপার নিয়ে সচেতন মহলে ক্ষোভের ঝড় বইছে রীতিমতো।

Manual3 Ad Code

সরকার বাহাদুর যেখানে জাফলং এলাকাকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে পর্যটকদের অবিচল ঘোরাফেরার স্বার্থে জাফলং এলাকায় নদী পথে ১৫,৯৩ বর্গকিলোমিটার জায়গাকে ইসিএ বলে ঘোষণা করেছেন ও লাল, নীল, সবুজ রঙের পিলার দিয়ে ইসিএ এলাকাকে নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতো পর্যটকদেরও অবাধ বিচরণে এই এলাকাকে পর্যটকমুখী করবার হুকুম থাকলেও সে জায়গায় প্রশাসন কর্তৃক ঘুরাফেরা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু ইসিএ এলাকার বাহিরেও প্রশাসনের এমন নজরদারি করায় শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজির পথ বন্ধ করার শামিল হয়ে পড়েছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিলুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- আমরা ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়াকে সমুন্নত রাখতে বিভিন্ন সময় অভিযানে পরিচালনা করি। আর যদি কেউ অবৈধ পাথর উত্তোলন করে থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি সাংবাদিকদের আশ্বাস প্রদান করেন।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার‌ অফিসার ইনচার্জ পরিমল চন্দ্র দেব‌ সাংবাদিকদের জানান- পুলিশ প্রশাসন সর্বদাই ইসিএ এলাকাকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ইসিএ এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের সংবাদ পেলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা বন্ধ করে দেই। অভিযান হলে কিছুদিন বন্ধ রাখলেও পরবর্তীতে ফের পাথর উত্তোলন শুরু করে এই চক্র। যেহেতু বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

March 2022
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..