সিলেট ২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৮ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গোলাপগঞ্জে বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে পারিবারিক কলহ রয়েছে বলে জানা গেছে। আর এই কলহ নিহত বৃদ্ধের দ্বিতীয় বিয়ে ও মালিকানাধীন সহায় সম্পত্তি নিয়েই। দ্বিতীয় বিয়ের মাত্র অর্ধমাসের মাথায় আপন ছেলে ও শালাদের হাতে নির্মমভাবে খুন হতে হয় হতভাগা তোতা মিয়া (৫৫)-কে। এদিকে স্বামীকে হারিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নববধূ (দ্বিতীয় স্ত্রী)।
শুক্রবার (২ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের পরগণা বাজারে আপন তিন ছেলে, দুই শালা ও অপর একজনের হাতে খুন হন তোতা মিয়া। তিনি পরগণা বাজার এলাকার মৃত আখমল আলীর ছেলে ও পরগণা বাজারস্থ ‘তোতা ম্যানশন’ নামীয় মার্কেটের স্বত্বাধিকারী। ঘটনার পর পরই তাৎক্ষণিক খুনের কারণ উদঘাটন করা না গেলেও প্রতিবেশি ও নিহতের স্বজনদের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ঘটনার সময় পরগণা বাজারে দাঁড়িয়ে ছিলেন তোতা মিয়া। কিছু বুঝে উঠার আগেই তার তিন ছেলে ও শালাসহ অপর একজন পেছন দিক থেকে দাঁ দিয়ে পিঠের মধ্যে কোপ দেয়। পরে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের চিৎকারে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা তাদের শনাক্ত করতে পারেন। উপস্থিত জনতা তোতা মিয়াকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের আপন ভাগ্নে নেওয়াজ উদ্দিন খাঁ জানান, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমার মামার সম্পত্তি নিয়ে তার সন্তানদের বিরোধ রয়েছে। মামার (তোতা মিয়ার) ভূ-সম্পত্তি ও পরগণা বাজারস্থ ‘তোতা ম্যানশন’ নামীয় মার্কট তাদের নামে লিখে দিতে বার বার তারা চাপ দিচ্ছিল। এরআগেও সম্পত্তির কারণে তারা তাদের পিতার উপর আক্রমণ করেছিল। পরবর্তীতে গ্রাম্য সালিশে তা সমাধান হয়। গত ৩ মাস আগে মামার এক মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ওনার ছেলেরা (হামলাকারীরা) তাদের মাকে নিয়ে নানা বাড়ি পরগনা কান্দগ্রামে চলে যায়। এসময় তিনি একা হয়ে যান।’
নেওয়াজ বলেন, ‘মামা বার বার ছেলেদেরকে বাড়িতে আসার কথা বললেও তারা বাড়িতে আসেনি। এরপর তিনি একা হয়ে যাওয়ায় গত ১৮ দিন পূর্বে আরও একটি বিয়ে করেন। এতে বাবার প্রতি সন্তানদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। মূলত, সম্পত্তি ও দ্বিতীয় বিয়ের কারণেই তারা মামাকে (নিজের বাবাকে) হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, আমার মামার তিন ছেলে মাছুম আহমদ (২৮), রাজিম (২৫), তামিম (২০), ওনার প্রথম স্ত্রীর দুই ভাই জামাল (৪৫), সেবুল (৪০) ও আলাল (৩০) নামে এরা কয়েকজন পরগণা বাজারে ওনাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওনার মৃত্যু হয়। এঘটনায় আমরা মামলা করব।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, মা-বাবার মধ্যে পারিবারিক টানাপোড়ন, সম্পত্তির জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। তবে পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd