এসআই আকবরের সিম কার্ডে লুকিয়ে আছে অনেক তথ্য!

প্রকাশিত: ৬:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০২০

এসআই আকবরের সিম কার্ডে লুকিয়ে আছে অনেক তথ্য!

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মাত্র দশ হাজার টাকার জন্য পুলিশ রায়হান উদ্দিনকে (৩০) হত্যা করেছে, এমন কথা মানতে নারাজ তার মা সালমা বেগম। তিনি মনে করেন, এ হত্যার পেছনে কোনো বড় গ্যাং জড়িত।

Manual8 Ad Code

একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করেও তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন। বলেছেন, ছেলের জন্য ১০ হাজার কেন, ৫০ হাজার চাইলেও দিতাম। রায়হানকে হত্যার আলামত যারা নষ্ট করেছেন তাদের গ্রেফতারের দাবিও জানান সালমা বেগম।

পলাতক থাকার দীর্ঘ ২৮ দিন পর গত ১০ নভেম্বর গ্রেফতার হয়েছেন রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবর। ওইদিন অবাঙালি খাসিয়ারা আকবরকে সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তে বাংলাদেশি জনতার কাছে হস্তান্তর করে। পরে বাংলাদেশি আব্দুর রহিমসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় তাকে কৌশলে গ্রেফতার দেখায় জেলা পুলিশ।

বরখাস্তকৃত এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা কারা? এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা রয়ে গেছে। অধরা রয়ে গেছে তাকে সহায়তাকারী আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ অন্যরা। যদিও সেসব তথ্য উদঘাটনে চেষ্টা করে যাচ্ছে তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

Manual1 Ad Code

সম্প্রতি ভারইরাল হওয়া আরেকটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে ভারতীয় খাসিয়ারা আকবরকে আটক করে বাংলাদেশে পাঠানোর দাবি করেছেন। তাদের দাবি, খাসিয়া হেড ম্যান সোফডিনের কথায় তারা আকবরকে আটক করেন। এরপর সেফোডিনের কথামতো তাকে সিলেটের কানাইঘাট ডোনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি আব্দুর রহিমের কাছে হস্তান্তর করেন।

এসআই আকবরের হেফাজত থেকে ব্যবহৃত বাংলাদেশি সিম কার্ড, ৩টি ভারতীয় সিম কার্ড, একটি মোবাইল ফোন, এক নারীর ৩টি ছবি ও আকবরের একটি ছবি রেখে দেওয়ার বিষয়টি তথ্য-প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে তারা।

নিহত রায়হানের পরিবারের দাবি, ভারতীয় খাসিয়াদের হাতে থাকা সিম কার্ডে আকবরকে সহায়তাকারীদের তথ্য প্রমাণ মিলতে পারে। তাই সেসব সিম উদ্ধারের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালিদ উজ জামান বলেন, “রায়হান হত্যাকাণ্ডের পর আমরাও বলেছি আকবরকে আমাদের প্রয়োজন। রিমাণ্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তবে তদন্তে সহায়ক কোনো আলামত পেলে আমরা জব্দ করবো। যদি আকবরের ব্যবহৃত সিম পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আরো তথ্য-প্রমাণ মিলতে পারে। আমরা সেই চেষ্টায় রয়েছি।”

আকবরকে গ্রেফতার করার দিন সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ। সাংবাদিকরা জানতে চান, কেউ আকবরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কি না? তিনি বলেন, “কেউ হস্তান্তর করেনি। অবশ্য আমরা পুলিশের সকল কাজে জনগণের সহযোগিতা নিই। আকবরকে গ্রেফতার করতে আমাদের কিছু বন্ধু সহযোগিতা করেছেন। ”

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ভারতের খাসিয়ারা আকবরকে আটক করেছে- এমন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ভিডিও করা হয়নি। ওই ভিডিও কে, কোথায় করেছে তা আমাদের জানা নেই। এরকম কিছু দেখিনি। তবে তাকে জেলা পুলিশের কানাইঘাট থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ”

গত ১১ অক্টোবর ভোর রাতে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

‘রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন’ বলে পুলিশ দাবি করলেও পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল, পুলিশই আকবরকে ধরে নিয়ে যায় ফাঁড়িতে এবং সেখানে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনের ফলে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পায়। ঘটনায় জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। ঘটনার পর অন্য ছয়জন পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আকবর পলাতক ছিলেন।

Manual1 Ad Code

গত শনিবার (১৪ নভেম্বর) নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়াস্থ নিহতের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে রায়হানের মা সালমা বেগম দাবি করেন, ঘটনার দিন তার ছেলের পরনের টি-শার্ট ও প্যান্ট নীল রঙের ছিল। কিন্তু হাসপাতালে দেখা গেছে তার পরনে লাল রংয়ের একটি শার্ট। প্যান্টও বদলানো হয়েছে। যেটা তার শরীরের চেয়েও অনেক ছোট ছিল। এটা কারা করেছে, তা তিনি জানেন না। এছাড়া রায়হানের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। যারা আলামত নষ্ট করেছেন, গ্রেফতার দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি আকবরকে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার দাবি জানান।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2020
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..