সিলেট ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হাতে অস্ত্র, মুখে মাদক নিয়ে নানা ভঙ্গিমার ছবি। আর এই ছবির ছড়াছড়ি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম শ্রাবণ। বয়স ১৮। অস্ত্র ও মাদক নিয়ে নানা বিকৃত ভঙ্গিমায় ছবি ছড়িয়ে দেয়া তরুণ বয়সের কে এই শ্রাবণ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অস্ত্র হাতে ছবিগুলোর সূত্র ধরে গোয়েন্দা বাহিনী নিয়ে অনুসন্ধানে নামে র্যাব।
এক পর্যায়ে পাওয়া গেল, শ্রাবণের সন্ধান। দুরন্ত তরুণ ছেলেটির পেছনে কয়েকদিন ছোটাছুটি করে অবশেষে গ্রেফতার করা হলো তাকে। তবে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এলো নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।
র্যাবের অনুসন্ধানে জানা গেল, শ্রাবণ নামের দৃশ্যমান দুরন্ত তরুণ মূলত নারী। ভয়ংকর অপরাধীদের একটি গ্যাংয়ের দুর্ধর্ষ তরুণী সদস্য তিনি। যে কয়জন বন্ধু মিলে এক সাথে থাকেন, তারা সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে গ্যাং লিডার ছাড়া আর কেউ জানে না যে শ্রাবণ একজন ভিন্ন লিঙ্গের মানুষ। একজন তরুণী। আর এই গ্যাংটি ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরণের অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। শ্রাবণ হচ্ছে এই ভয়ংকর গ্যাংয়ের বিশেষ আকর্ষণ।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বুধবার গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কেওঢালা এলাকা থেকে শ্রাবণসহ এই গ্যাংয়ের পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের একটি দল।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুইটি চাইনিজ কুড়াল, ২টি স্টিলের চাকু, স্টিলের তৈরি ২টি ছুরি, ১টি রামদা, ১টি তরবারি, ১টি পিস্তলের কভার, ১টি হাসুয়া এবং ৩০০ পিস ইয়াবা।
আটককৃত অপর চারজন হলেন, গ্যাং লিডার আমিনুল ইসলাম ওরফে শাহিন (৩৭), সাদেক হোসেন (৩০), ইয়াছিন আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ (২২) ও আশিকুর রহমান শিকদার ওরফে শাকিব (২২)।
বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সন্ত্রাসী আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাংচক্র মদনপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করে আসছিল এবং তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
র্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, আটককৃতরা দুর্ধর্ষ পেশাদার সন্ত্রাসী, অপহরণকারী ও চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সংঘবদ্ধভাবে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। তাদের এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ বেশ কিছু ছবি পাওয়ার পর দীর্ঘদিন যাবৎ গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে এই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রকে শনাক্ত করে র্যাব। এর পরেই অভিযানে নেমে পাঁচজনকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়।
জসিম উদ্দিন আরও জানান, ছবিতে প্রদর্শিত শ্রাবণের হাতের অস্ত্রটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে শ্রাবণকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd