সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০
জৈন্তাপুর প্রতিনিধি :: সিলেটের সীমান্ত উপজেলা গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও ভারতের মেঘালয় সীমান্ত চোরাকারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন রাতে সীমান্ত এলাকার চোরাই পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় গরু-মহিষ। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসেছে অবৈধ পশুহাট। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
অভিযোগে প্রকাশ, চোরাকারবারিদের সাথে প্রশাসন ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির কতিপয় সদস্যের সখ্যতা দেখা যায়। ৪৮বিজিবির প্রতাবপুর, সংগ্রাম, শ্রীপুর, মিলাটিলা, ডিবির হাওর ও ১৯ বিজিবি জৈন্তাপুর, লালাখাল ও সুরাইঘাট সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে অবৈধপথে আসা গরুসহ নানা পণ্য আটক করার কথা জানান। সম্প্রতি শ্রীপুর, মিনাটিলা, ডিবির হাওর, জৈন্তাপুর, লালাখাল সুরাইঘাট সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় গরু-মহিষ ও মাদক ছাড়াও নানা অবৈধ মালামাল প্রবেশ করছে দেদার। বাংলাদেশের জৈন্তাপুর-ভারতের মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় বিএসএফ ও বাংলাদেশের বিজিবির নজরদারি এড়িয়ে গরু চোরাকারবারি অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় কর্তব্যরত বিএসএফ ও বিজিবির সদস্যদের প্রত্যক্ষ ইশারায় সীমান্ত এলাকায় রাতের আঁধারে কিংবা দিনের আলোয় কারবার চলছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। অবৈধ গরু কারবারির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অবৈধভাবে আসা ভারতীয় গরু-মহিষের বাজার চলছে। এই বাজারে সকল ভারতীয় অবৈধ গরুর বৈধতা দিচ্ছে জৈন্তাপুরের একটি চক্র। বিনিময় তারা লাখ লাখ টাকা আদায় করছে।
সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা জানান, দিনের বেলায় সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে, জঙ্গলে এবং পাহাড় ও টিলার আড়ালে শত শত গরু-মহিষ বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকে। সন্ধ্যা রাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গোয়াইনঘাটের রাধাগর, জৈন্তাপুর উপজেলার আলুবাগান, শ্রীপুর, মিলাটিলা, ছাগল খাউরী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ডিবির হাওর, ডিবির হাওর (আসামপাড়া), ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী গৌরীশংকর, কমলাবাড়ী, গুয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, জালিয়াখলা, কালিঞ্জীবাড়ী, লালাখাল গ্রান্ড, লালাখাল চা-বাগান, আফিফানগর চা-বাগান, বাঘছড়া, জঙ্গিবিল, তুমইর, ইয়াংরাজা, বালিদাঁড়া, বাঘছড়া, সিঙ্গারীপাড়, সুরাইঘাট এলাকা দিয়ে গরু-মহিষ প্রবেশ করতে থাকে। তার মধ্যে আলুবাগান, শ্রীপুর, মিলাটিলা, ছাগল খাউরী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর হয়ে আসা গরু মহিষগুলো নলজুরী, আমবাড়ী, ঢুলটিরপাড় রোড দিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রবেশ করে। ডিবির হাওর, ডিবির হাওর (আসামপাড়া), ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী গৌরীশংকর, কমলাবাড়ী, গুয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, জালিয়াখলা, কালিঞ্জীবাড়ী দিয়ে আসা গরু-মহিষ উপজেলা সদরের পূর্ব বাজার ও দরবস্ত বাজার প্রবেশ করে। লালাখাল গ্রান্ড, লালাখাল চা-বাগান, আফিফানগর, বাঘছড়া, জঙ্গিবিল, তুমইর, ইয়াংরাজা, বালিদাড়া, বাঘছড়া, সিঙ্গারীপাড়, সুরাইঘাট রোড দিয়ে আসা গরুগুলো হরিপুর বাজারে প্রবেশ করে। ছোট-বড় পিকআপ ও ট্রাক দিয়ে সিলেট-তামাবিল হাইওয়ে দিয়ে জৈন্তাপুরের বিভিন্ন বাজারে বৈধতা করার জন্য নেওয়া হয়। সে খান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। জৈন্তাপুর থেকে শেরপুর পর্যন্ত সকল গরু নিয়ন্ত্রণ করেন বাজারের ইৎারাদাররা। তারা শেরপুর পর্যন্ত সকল থানা গুলোকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নেন। লাইনম্যানকে গরু-মহিষ প্রতি নির্ধারিত হারে চাঁদা টাকা পরিশোধ করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গরু-মহিষ পাচারের সুযোগ করে দেয়া হয়।
অনেক সময় এই অবৈধ গরু রাস্তায় মারা যায়। চোরাকারবারীরা মৃত গরুকে জবাই করে সিলেট নগরীতে পাচার করে। এত অপরাধের পর টনক লড়েনি প্রশাসনের।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd