কলেজ ছাত্রীকে হত্যা মামলায় প্রেমিকের মৃত্যুদন্ড

প্রকাশিত: ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২০

কলেজ ছাত্রীকে হত্যা মামলায় প্রেমিকের মৃত্যুদন্ড

Manual1 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বরগুনার আমতলীতে চাঞ্চল্যকর ফারিয়া ইসলাম মালা নামের এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের পর সাত টুকরা করার হত্যার দায়ে একজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে এ মামলার এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর আসমাীর সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। বরিবার বরগুনার নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, নিহত কলেজছাত্রী মালার মামাতো ভগ্নিপতি প্রেমিক আলমগীর হোসেন পলাশ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন পলাশের ভাগ্নি জামাই আমতলী পৌরসভার হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা আইনজীবী মাইনুল আহসান বিপ্লব। সাত বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন আইনজীবী মাইনুল আহসানের সহকারী রিয়াজ । একমাত্র নারী আসামি আইনজীবী মাইনুল আহসানের স্ত্রী ইমা রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। এ ছাড়াও একই আদেশে বিচারক মো. হাফিজুর রহমান মরদেহ লুকানো চেষ্টার অপরাধে আসামি বিপ্লব এবং পলাশের সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের মো. মান্নান খানের কন্যা মালা আকতারের সাথে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসোন্দা গ্রামের আবদুল লতিফ খানের ছেলে আলমগীর হোসেন পলাশ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের সাথে মন দেওয়া নেয়া চলছিল। মালা সম্পর্কে আলমগীর হোসেন পলাশের মামাতো শালি। সপ্তম শ্রেনীতে লেখাপড়া অবস্থায় পলাশের সাথে মালার সম্পর্ক হয়। মালা কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজে একাদ্বশ শ্রেনীতে লেখাপড়া করতো। ২০১৭ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় আলমগীর হোসেন পলাশ প্রেমিকা মালাকে নিয়ে আমতলী তার (পলাশ) আত্মীয় অ্যাডভোকেট মাইনুল আহসান বিপ্লবের বাসায় বেড়াতে আসে। তিন দিন ধরে পলাশ এ বাড়ীতে অবস্থান করে। ২৪ অক্টোবর মালা পলাশকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু পলাশ এতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি হয়। এক পর্যায় ওইদিন দুপুরে আলমগীর হোসেন পলাশ ও তার মামা ভাগ্নি জামাই আইজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লব মালা আকতারকে ধারালো অস্ত্র (বটি) দিয়ে কুপিয়ে মাথা, দু’হাত, দু’পা, গলার নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত দু’টুকরো মোট সাত টুকরো করে হত্যা করে ঘাতক পলাশ লাশ সাত টুকরো করে। পরে ওই বাসার বাথরুমের মধ্যে দুটি ড্রামে ভরে মরদেহ আটকে রাখে। ওইদিন পুলিশ ঘাতক পলাশকে গ্রেপ্তার করে। ২৫ অক্টোবর ঘাতক পলাশ মালাকে হত্যার কথা আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে বিপ্লব এবং পলাশের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন পুলিশ। ২০১৮ সালের ১৭ এপিল চার জনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম বাদল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ২৫ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রোববার রায় প্রদান করেন। এ চাঞ্চল্যকর মামলাটি দীর্ঘ আড়াই বছরের মধ্যে শেষ হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করায় সাধারণ মানুষের মাঝে সস্তি ফিরে এসেছে। এ রায়ের খবর আমতলীতে পৌঁছালে সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত এ রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।

Manual6 Ad Code

নিহত মালার মামা হাবিবুর রহমান খান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত এ রায় কার্যকরের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।

Manual4 Ad Code

বরগুনার নারী ও শিশু আদালতের সরকারি কৌসুলি পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, “মালা হত্যা মামলায় আসামি পলাশকে ধর্ষণ, হত্যা এবং লাশ গুম করার অপরাধে ফাঁসির আদেশের পাশাপাশি সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে বিচারক। অপর আসামি আইনজীবী বিপ্লবের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং লাশ গুমের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। আর মইনুল হোসেন সহকারী রিয়াজের বিরুদ্ধে লাশ গুমের সহায়তা করার অপরাধে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।এ মামলার মইনুল হোসেনর স্ত্রী ইমা রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

Manual5 Ad Code

আসামিপক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। তাই আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..