অসহায় হকার্সদের সাথে সিসিকের কেমন নিষ্ঠুরতা!

প্রকাশিত: ১১:১৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২০

অসহায় হকার্সদের সাথে সিসিকের কেমন নিষ্ঠুরতা!

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেট নগরীর ফুটাপাতে ব্যবসা না করলেই হতদরিদ্রদের বিকল্প পথ ছিলো ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা। অনেক হাকার সকাল বেলা ভ্যান চালায় আর বিকাল হলেই মালামাল নিয়ে রাস্তায় বিক্রি করার জন্য বের হয়। কিন্তু সেই আয়ের পথ বন্ধ করে দিলো সিসিক কর্তৃপক্ষ। নগরীতে অবৈধভাবে বসা হকারদের উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় কড়া অভিযান চালানো হলেও। বহাল তবিয়তে লালধীঘির পারের ফুটপাট। লালধীঘির পার এলাকায় এক হকার্সলীগ নেতার নেতৃত্বে ও সিসিক কর্মচারীদের ম্যানেজ করে ওই এলাকায় এখন ফুটপাট জমজমাট। বন্দরবাজার হকার্স মূক্ত হলেও জিন্দাবাজার থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত হকার্সরা ঠিকই ব্যবসা করছে।

গত রোববার রাতে বন্দর বাজার এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন সিটি কর্পোরশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় হকারদের মারধর করে তাদের কাছ থেকে বিক্রির মালামালসহ ২৭টি ভ্যানগাড়ি আটক করা হয়। মালামালের মধ্যে ছিল বিভিন্ন জাতের সবজি, মাছ, ফল, কাপড় ও নানান নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। ওই দিন রাতেই আটক মালামালগুলো নিলামে বিক্রি করেন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান। নিলামের ক্রেতাও ছিলেন হকারর। নিলাম করে এসব মালামাল প্রায় ২৮ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এরমধ্যে ২৫ টুকরি মাছ ৪০০০ টাকা, ১ ভ্যান কাপড় ২৫৫০ টাকা, ৮ ভ্যান বিভিন্ন জাতের ফল ৫০০০ টাকা, ২৭ ভ্যান বিভিন্ন জাতের সবজি ১৫০০০ টাকা, বরই বিজ ১৫০০ টাকা এবং মুলা ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

Manual7 Ad Code

কিন্তু জব্দ করা এসব ভ্যানগাড়ি ফেরত না দিয়ে গত সোমবার সকালে নগরভবনে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সকালে নগরভবনের সামনের জায়গায় বুল ড্রোজার দিয়ে ভ্যানগাড়ি গুলো গুড়িয়ে দেয়া হয়।

Manual7 Ad Code

নগরীর ছড়ার পারের এক ভ্যান চালক কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি প্রতিদিন আমার ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হই। যে কাজ পাই সেই কাজই করি। ফুটপাতের এই এক ব্যবসায়ীর পেঁয়াজ নিয়ে বের হয়ে হয়ে ছিলাম। সুরমা পয়েন্টে যাওয়ার পর সিটি কর্পোরশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমার ভ্যানটি নিয়ে যায়।অনেক চেষ্টা করেও ভ্যান ফিরে পাইনি। সর্বশেষ ভেঙে দেওয়া হয়। এখন আমি আমার পরিবার নিয়ে দুইদিন থেকে না খেয়ে আছি।আল্লাহ মেয়রকে যে এভাবে একদি কাধায়। আমার বাচ্চাদের বদদোয়া পড়বে উনার উপর।

Manual8 Ad Code

এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র তৌফিক বকস লিপন বলেন, অভিযানে আটককৃত যে কোনো কিছু বিক্রী করতে হয় নিলামে। তাছাড়া, হকার অভিযানের নামে আটককৃত পণ্য হকারদের কাছে প্রকাশ্যে বিক্রি করা সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাত মুক্ত আন্দোলনের অঙ্গিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করলো। তিনি বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা কার নির্দেশে প্রকাশ্যে নিলাম ছাড়া এটি বিক্রি করেছেন- এই বিষয়টি আমার জানা নেই।

Manual1 Ad Code

এ বিষয়ে অভিযানকারী কর্মকর্তা হানিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা ফুটপাতে অবৈধ হকার হটাতে চাই। সেই লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন নিয়মিত অভিযান করে থাকে। এরই অংশ হিসেবে ফুটপাতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ হকারদের পণ্য আটক করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, এই পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে হকারদের সংশোধন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

হাকারদের এত নির্যাতনের পর ফুটপাত ছাড়াতে পারেনি সিসিক কর্তৃপক্ষ। কারণ তাদের ঘরে খাবার নেই। তাই তারা মারধর খেয়েও পরিবারের মুখে খাবার তোলে দেওয়ার জন্য বেহায়ার মতো ফুটপাতে বসতে হয়। কিন্তু সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হাকার্সদের আস্বাশ দিয়ে আসছেন তাদের পূর্ণ্যভাসন দিবেন। সেই লক্ষে হকার্স মার্কেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের পূর্ণ্যভাসনের কোন ব্যবসা হয়নি। উল্টো তাদের উপর নির্যাতন। নগরীর সচেতন মহল জানতে চায় এই নির্যাতনের শেষ কোথায়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..