হত্যার হুমকি দিয়ে বহু নারীকে ধর্ষণ করেছে মজনু

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২০

হত্যার হুমকি দিয়ে বহু নারীকে ধর্ষণ করেছে মজনু

Manual4 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার ভবঘুরে মজনু তার যৌনাচার নিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কাছে সে স্বীকার করেছে যে, ঢাবি ছাত্রীকে সে ধর্ষণ করেছে। হত্যার হুমকি দিয়ে আরও বহু নারীকে ধর্ষণ করেছে বলেও তথ্য দিয়েছে মজনু।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, দিনের বেশিরভাগ সময় রেলস্টেশনে ঘোরাঘুরি করলেও রাত হলে স্টেশনকেন্দ্রিক ভিক্ষুক, ভবঘুরে ও মানসিক প্রতিবন্ধী নারীদের টার্গেট করত মজনু। এক জায়গায় স্থির থাকত না সে। কখনও রেলস্টেশন, কখনও কুর্মিটোলার ঝোপের মধ্যে আবার কখনও কমলাপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন ঝোপের আড়ালে নিয়ে অসহায় নারীদের ধর্ষণ করে আসছিল সে। এ ছাড়া বিমানবন্দর সড়ক কেন্দ্রিক ফুটপাতের আশপাশেও নারীদের টার্গেট করে ঘুরে বেড়াত সে।

Manual7 Ad Code

তার এই ঘৃণ্য পরিকল্পনায় সহযোগিতা করত তার মতোই ভবঘুরে আরও বেশ কয়েকজন। তাদেরও ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে ডিবি।

Manual4 Ad Code

মজনু এখন সাত দিনের ডিবি হেফাজতে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, মজনু তার পাল্লায় পড়া নারীদের ধর্ষণে বাধা পেলে চরম মারধর করত সে।

ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে মজুন জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকেও ভবঘুরে ভেবে ধর্ষণ করে সে। এতে বাধা পেয়ে তার ওপরও শারীরিক নির্যাতন চালায়।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মজনু বলেছে, ধর্ষণের পর ওই তরুণীর কাছে সে ৫০০ টাকা দাবি করে। মেয়েটি তার ব্যাগে টাকা আছে জানালে মজনু অন্ধকারে ব্যাগ খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে ব্যাগ পাওয়ার পর ভেতরে টাকা খুঁজতে থাকে সে। আর এই ফাঁকে মেয়েটি ছুটে পালায় ঘটনাস্থল থেকে।

মজনুর স্বীকারোক্তির সূত্রে গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরও জানান, মজনু পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে ঝোঁপের আড়ালে নেয়ার সময় বাঁচার আকুতি জানায় ঢাবির ওই ছাত্রী। কিন্তু রাস্তায় চলাচলকারী দ্রুতগতির যানবাহনের শব্দে তা ঢাকা পড়ে যায়। এ সুযোগ নিয়ে মজনু আরও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। একসময় নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় নাটকীয় সংলাপ, অঙ্গভঙ্গি ও খিস্তি-খেউড় করতে থাকে। এতে ওই তরুণী হতবিহ্বল হয়ে পড়েন, হয়ে পড়েন চরম বিপর্যস্ত। এ পর্যায়ে কিছুটা সময় অচেতন ছিলেন তিনি। চেতনা ফিরে পাওয়ার পর বেহুঁশ হওয়ার ভান ধরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন। কিন্তু মজনুর ভয়ঙ্কর আচরণে সাহস হারিয়ে ফেলে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন ফের। পরে থাকে ধর্ষণ করা হয়।

Manual1 Ad Code

৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতাল এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন।

Manual2 Ad Code

জানা যায়, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শেওড়ায় বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি ভুল করে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর এক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেন।

রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে সেখান থেকে অটোরিকশায় করে বাসায় ফেরার পর রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওই ছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলায় মজনুকে মঙ্গলবার গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারের পর র্যা ব জানায়, মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। মজনু আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল ঘটনাস্থলে। ঢাবি ছাত্রীকে জোরপূর্বক সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায় সে। এর পর ঝোপের এক পাশে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। এর আগেও একই জায়গায় কয়েকজন নারীকে ধর্ষণ করে সে।

একই জায়গায় মজনু এ ধরনের অপরাধ করেছে। প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুকসহ বিভিন্ন নারীকে সে আটকে রেখে ধর্ষণ করত। তাদের হত্যার হুমকিও দিত। মজনু স্বীকার করেছে ঘটনার সময় সে একাই ছিল, ভিকটিমও তেমনই বলেছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..