আমি বেঁচে গেলাম, পেছনে হেলিকপ্টারটি পুড়ছে

প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২০

আমি বেঁচে গেলাম, পেছনে হেলিকপ্টারটি পুড়ছে

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ক্যাপ্টেনসহ ২৩ জন যাত্রী মারা গেলেও বেঁচে যান তিনি। একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে বন্দি অবস্থায় টানা আট ঘণ্টা মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।

Manual8 Ad Code

এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে ময়মনসিংহে জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকাকালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের রোষানল থেকে রক্ষা করেন। আলোচ্য ব্যক্তিটি হলেন বর্তমান সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে লাইভে নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন ‘মন্ত্রীর মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে নিজ জীবনের রুদ্ধশ্বাস অভিযাত্রার কথা বলছিলেন এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক পার্থ সারথি দাস।

Manual1 Ad Code

বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তির দিনে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে। সারা বিশ্বের পর্যালোচকরা বলছেন, বাংলাদেশের এই এগিয়ে চলা বিস্ময়কর। আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ।

সারা দেশে সন্ধ্যার আগেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সড়কপথে চলাচল সম্ভব হচ্ছে। রেলপথ বিস্তৃত হচ্ছে। সেবা বাড়ছে আকাশপথেও। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই হাজার ডলার। প্রগতিশীলতার পথে, অসাম্প্রদায়িকতার পথে, একুশ শতকের উপযোগী হওয়ার পথে বাংলাদেশ এগোচ্ছে। ’

Manual6 Ad Code

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের এই উন্নয়নে অনুপ্রেরণা ও সাহসের উৎস বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ প্রায় খালি হাতে ভয়ংকর শাসকগোষ্ঠী, পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মহাসংগ্রামে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে চমকপ্রদভাবে। এখন উন্নয়ন ঘটছে আরো চমকপ্রদভাবে। সোয়া ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশ আরো সম্মানজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।

নিজের জীবনে ঘটা উল্লেখযোগ্য ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘১৯৬৬ সালে কেয়ার নামের একটি সংস্থায় কাজ করতাম। তারা আমাকে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় পাঠাতে চাইল হেলিকপ্টারে। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টায় ঢাকা থেকে রওনা হই। ২০ মিনিট পর ফরিদপুর শহরের আকাশে হেলিকপ্টারটি গেলে আমি দেখলাম ওলটপালট অবস্থা। কর্কশ শব্দ হচ্ছে। আমি হেলিকপ্টারের পেছনে বাঁ দিকে বসা ছিলাম। হেলিকপ্টারে ক্যাপ্টেনসহ আমরা ২৪ জন ছিলাম। কয়েক সেকেন্ড পর ঠাস করে শব্দ হলো। হেলিকপ্টার পড়ে গেল মাটিতে। মায়ের নাম স্মরণ করছিলাম, আল্লাহর নাম স্মরণ করছিলাম। আমি হেলিকপ্টারের ভেতর থেকে পা বের করে লাফ দিয়ে বের হই। দূরে কাঁচি হাতে দুজন কৃষক দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাত নেড়ে তাঁদের ইশারা করি। তাঁরা দৌড়ে এসে আমাকে পাঁজাকোলা করে ৩০০-৪০০ গজ দূরে নিয়ে যান। আমি বেঁচে গেলাম। আর পেছনে তাকিয়ে দেখলাম হেলিকপ্টারটি পুড়ছে, ধোঁয়া উড়ছে। ওঁরা সবাই হারিয়ে গেলেন চিরদিনের জন্য। ’

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..