সিলেটে ৪৫০ কোটি টাকার মামলায় কার এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন সাংবাদিক বুলবুল

প্রকাশিত: ৩:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০১৯

সিলেটে ৪৫০ কোটি টাকার মামলায় কার এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন সাংবাদিক বুলবুল

Manual6 Ad Code

সিলেট আদালতে দায়ের করা ৪৫০ কোটি পাঁচার মামলার গতিপথ কোন দিকে। দুই বার ব্যার্থ হওয়াসহ অতিউৎসাহী হয়ে মামলা দায়েরের পিছনে কার এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন সিলেটের প্রভাবশালী দাবীধার সাংবাদিক মঈনুল হক বুলবুল। কত টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তদের বিপক্ষ গ্রæপের সাথে গোপন চুক্তি হয়েছে জানতে চলছে গোপন অনুসন্ধান। কেনই বা আদালতের আদেশ বিকৃতি করে মিডিয়ার প্রচার করলেন এ মিডিয়াকর্মী কাম আইনজীবি। তিনি কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন এজেন্সির এজেন্ট হয়ে দুই সময়ে দুটি ভিন্ন এজাহারে পাচারের মামলাটি আদালতে দায়ের করলেন এমন প্রশ্ন এখন গোটা সুশিল সমাজে। যেহেতু সেই সাংবাদিক বাদী বুলবুল নিজের সোস্যাল মিডিয়ায় বলতেছেন মামলায় ৮নং অভিযুক্ত ওসি আব্দুল আহাদ তার বন্ধু আর তিনি কোন অপরাধের সাথে জড়িত নয়। দায়িত্ব অবহেলার জন্য তিনি এ মামলায় তাকে আসামী করেছেন। তাহলে মামলা পরবর্তী সময়ে একমাত্র ওসির ছবি দিয়ে মিডিয়ায় সংবাদটি প্রচারে কারা অর্থের যোগান দিয়েছে একজন সাংবাদিক হিসাবে সে প্রশ্নের উত্তরটিও তিনি ভাল বলতে পারবেন। মামলায় ওসিকে জড়িয়ে অতিউৎসাহী মুলক সংবাদ প্রচারের কারণ কি?

Manual2 Ad Code

তবে গত কয়দিন থেকে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সোস্যাল মিডিয়ার বদৌলতে সাংবাদিক ও আইনজীবি ময়নুল হক বুলবুল এবং ওসি আহাদের বন্ধুত্বর সম্পর্কের বিষয়টি কারো চোখ এড়িয়ে যায়নি। দায়িত্ব পালনে ওসি অবহেলা করলে তিনি তখনই বিষয়টি তার উর্ধ্বতন অফিসারদের অবহিত করতে পারতেন। নাকি এ পর্যন্ত বলার ক্ষমতা রাখেন না প্রভাবশালী এ সাংবাদিক। গতকাল মামলার বাদী হয়ে তিনি নিজেই ফেইসবুকে ষ্ট্যটাস দিয়েছেন ওসি আহাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অপরাধের অভিযোগ তিনি করেননি, করেছেন দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ।এই অভিযুক্ত ওসির সাফল্যে কয়েকদিন আগে বাদী আত্মতৃপ্তির ঢেকোর তুলে ছিলেন, যাহা আজ মিডিয়ায় ভাইরাল। কিন্তু উক্ত মামলার দায়ের পরবর্তী সময়ে বাদীর বরাত দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রেসরিলিজ পাঠানো হয়েছে অভিযোগের ৮নং বাদী ওসি আব্দুল আহাদকে ফলাও করে। সংবাদগুলোর শিরোনাম দেখে মনে হয়েছে ওসি নিজেই ৪৫০ কোটি টাকা পাচার করেছেন। টাকার গন্ধ পেয়েও মিডিয়ার কারিগররা বিষয়টি তিল থেকে তাল বানিয়ে হুমড়ি খেয়ে প্রচার করতে পারেন এটাই কি প্রমান করেনি মামলার এজাহারটি না জেনে। আদালতের আদেশটি নিজে না পড়ে অন্যর ধারা প্ররোচিত হয়ে আদালতের আদেশ বিকৃত করে সংবাদ প্রচার কি হলুদ সাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়েনা।

মামলার বাদী সাংবাদিক ও আইনজীবি ময়নুল হক বুলবুলের বাড়ি কানাইঘাট উপজেলায়। তিনি উপজেলার বাইয়পুর (লক্ষিপুর) গ্রামের মৃত শফিকুল হকের ছেলে। চাকরি করেন বিএনপির ঘরোনার একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের সিলেট বুরোচীফ হিসাবে। সেই চ্যানেলে তিনি চাকরি নিয়ে পেয়ে ছিলেন বিএনপির প্রভাবশালী হাফডজন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পালাতক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীর আর্শিবাদে। যাহা সিলেট মিডিয়ার সর্বজনবিধিত। কয়েক দিন আগে তিনি নিজে একটি প্রতারনা মামলায় গ্রেফতার হয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। ওসমানীনগর থানার একটি প্রতারণা মামলা সিআইডিতে তদন্তাধিন রয়েছে। এ সময় তার গ্রেফতার নিয়ে মিডিয়ায় কম আলোচনা হয়নি। এক সময়ের বিএনপির ঘরোনার সাংবাদিক হিসাবে পরিচিত বুলবুলের মামলার অভিযুক্তরা একজন পরে সবাই স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীকে। কেউ-কেউ জনপ্রতিনিধি আবার কেউ সরকারি চাকরি করেন।

অনুসন্ধান মতে, বর্তমানে কানাইঘাট থানায় আওয়ামী লীগের বলয় রয়েছে দুটি। একটি বলয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক সাতবাক ইউপির সাবেক মোস্তাক আহমদ পলাশ। অপর বলয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী। বাদী সাংবাদিকের ধহরম-মহরম সম্পর্ক মোস্তাক আহমদ পলাশ বলয়ের সাথে। মামলার অভিযুক্ত আসামী সবাই মুমিন চৌধুরী বলয়ের নেতাকর্মী। বিষয়টি কানাইঘাট উপজেলার সকল মিডিয়াকর্মী থেকে রাজনৈতীক নেতাকর্মীদের কাছেও স্পষ্ট। তাহলে কি মামলার পিছনে রাজনৈতীক দুষ্ট চক্রের কোন ইন্দন থাকতে পারে, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জোর দাবী উঠেছে।

Manual2 Ad Code

কানাইঘাটের সড়কের বাজারের আবদুল গফুর ওয়াকফ স্ট্রেটের একটি গরুর বাজার নিয়ে মামলাটি দায়ের করতে কয়েক দিন থেকে চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন বুলবুল। কিন্তু বিধিবাম তার আগে তিনিই প্রতারনা মামলায় গ্রেফতার হন। এর আগে ৫/৯/২০১৯ ইং আদালতে উক্ত মামলাটি একবার শুনানি করে ব্যর্থ হন তিনি। সেই এজাহারে উক্ত মামলার ২নং আসামী ছিলেন কানাইঘাট থানার ওসি তদন্ত আনোয়ার জাহিদ। কিন্তু ১০/১০/২০১৯ ইং তারিখের দায়ের করা মামলার এজাহারে ওসি তদন্ত আনোয়ার জাহিদের নাম নেই। বাহ কি চমৎকার বাদীর লিলা-খেলা।

Manual8 Ad Code

সর্বশেষ সূত্র জানিয়েছে, মামলা শুনানীকালে বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি দুদুকে দেওয়া হয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাদী জানান বিষয়টি দুদুক কার্যালয়ে জমা দিলে দুদুক কর্তৃপক্ষ বিষয়টির ব্যাপারে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। বাদীর উক্ত জবানবন্দির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দুদুক কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩০ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। তবে বাদী মামলায় উল্লেখ করেছেন তিনি ১৮ আগষ্ট দুদুক সিলেট কার্যালয়ে গেলে তারা অভিযোগ নেয়নি। কিন্তু দুদক অফিসে কার কাছে গিয়ে ছিলেন সেটা তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেন নি। দুদুক সূত্র বলছে দুদুক কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে গেলে সুনির্দিষ্ট প্রমানাধি নিয়ে তদন্তে মাঠে নামে। কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে হলে অভিযোগে উল্লেখিত ঘটনার যতেষ্ট্য প্রমান চায়। তাহলে অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তে নামে দুদুক। কিন্তু আইনজীবি সাংবাদিকের বেলায় এমনটি হলো হলো কেন, দুদক এতো বড় একটি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পেয়েও গ্রহণ করলোনা। ঐ দিনই অতি উৎসাহী মিডিয়াওলারা মামলার আদেশের কোন কপি না দেখে আদালতের আদেশ বিকৃতি করে সংবাদ প্রকাশ করে কি বুঝাতে চাইলেন। আদালতের সূত্র দিয়ে বিকৃতি সংবাদ প্রকাশ করাটা কি এটা কি আদালত অবমাননার শামিল নয়।
সার সংক্ষেপ হচ্ছে, গত ১ আগস্ট কানাইঘাটের সড়কের বাজারে আবদুল গফুর ওয়াকফ স্ট্রেটের কোরবানির পশুর হাটে গরু কিনতে গেলে পুলিশের লাইনের (ঘুষ) নামে তার কাছে ৮শত টাকা ঘুষ দাবি করে কয়েকজন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে বিষয়টি তখনকার ওসি মো.আবদুল আহাদকে জানালে তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এ থেকে বাদী অনুমান করেন বাজারের ব্যবসায়ীদের মদদ দিচ্ছেন ওসি। বাদী অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, ঘুষ আদায়ের মাধ্যমে ভারতীয় চোরাই ও চোরাচালানের গবাদি পশুর হাট বসিয়ে রাষ্ট্রের কোটি-কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির দেওয়া হয়েছে। হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। তখন পুলিশ লাইনের কথা বলে ৪ কোটি টাকা ঘুষ আদায় করে বাজারে জড়িত লোকজন।

বাদী মামলায় টাকা পাচারের সময়টা ১ ফেব্রæয়ারী থেকে ১ অক্টোবর ( চলতি মাস) উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ওসি আব্দুল আহাদ কানাইঘাট থেকে গোয়াইনঘাট বদলী হয়েছেন ২ আগষ্ট। দুই মাসের বেশী সময় পার হয়ে গেছে। কানাইঘাট থানায় ওসি সামছুদৌহা আছেন ২মাস থেকে। বাদীর আর্জি অনুযায়ী সেই সময়ে ভারতীয় গরু দেশে এসেছে, তাহলে দুই মাসের পাচারের জন্য জড়িত হিসাবে মামলায় আসামী দোহা হবেন না কেন? যেহেতু বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন ১/৮/২০১৯ ইং হতে অদ্য ১০/১০/২০১৯ ইং পর্যন্ত ঘটনার সময়। মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, পুলিশ ও বিজিবির নামে লাইনের টাকা আদায় করা হতো সড়কের বাজারের গরুর হাট থেকে, তাহলে কেন মামলায় বিজিবি কোন সদস্যকে আসামী করা হলোনা। সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, সিমান্তটা পাহারা দেওয়া কাজ বিজিপি’র। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতা চাইলে প্রতিটি থানার পুলিশ তাদের সহযোগীতা দিতে বাধ্য। প্রশ্ন হচ্ছে সিমান্ত এলাকা পাহারা দেওয়া যাদের দায়িত্ব তাদের কাউকে কেন মামলায় আসামী করা হলোনা। অপরদিকে উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভাপতি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি। রয়েছেন আইনশৃংখলা কমিটির আরো অনেক সদস্য। মামলায় কেন সদ্য বদলী হওয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া সুলতানা কিংবা স্থানীয় এসিল্যান্ড আসামী হবেন না। নিজ উপজেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির দায়তো সভাপতি এড়িয়ে যেতে পারেন না।উক্ত মামলায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য ওসিকে আসামী করা হলে কেন অপর দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তাদের নাম বাদ দেওয়া হলো।

তবে একাধিক আইনজীবি নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, যদি কোন লোক পুলিশ কিংবা বিজিবির নামে টাকা আদায় করে, এর দায় কিন্তু তাকেই নিতে হবে যে টাকা আদায় করেছে। আদায়কৃত টাকা তিনি পুলিশ কিংবা জিবির কাউকে দিয়েছেন এ সংক্রান্ত স্পষ্ট প্রমান থাকলে যাকে দিছেন তিনি অভিযোগ হতে পারনে। পুলিশের কোন সদস্য সরাসরি টাকায় আদায়ের সাথে জড়িত থাকলে তিনি সেই মামলায় আসামী হবেন এটাই স্পষ্ট। একজনের দূষ উপর জনের উপরে পড়বেনা নিশ্চই। মামলায় ওসিকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে আসামী করা হয়েছে। মুখের কথায় আদালত চলেনা, আদালত চায় প্রমান। তবে মামলাটি পিছনের কলকাঠি নাড়ছেন এলাকার কিছু রাজনৈতিক রাগব বোয়াল। যাদেরকে আইন বর্হিভ‚ত কাজে কানাইঘাটে ওসি থাকাবস্থায় বাধা হয়ে ছিলেন ওসি, এ থেকেই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে হয়তো।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..