সিলেট ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৯ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:০২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০১৯
ঢাকায় ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে সবশেষ গ্রেফতার করা হল যুবলীগের আলোচিত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে। তার সঙ্গে তার অন্যতম সহযোগী এনামুল হক আরমানকেও গ্রেফতার করেছে র্যাব।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। রোববার দুপুরে র্যাব প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সম্রাটের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তবে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার অভিযোগেই তাকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে মাদক-ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে এ নিয়ে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে সবাইকে।
সম্রাটকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার বিরুদ্ধেও রিমান্ড চাওয়া হবে।
ক্যাসিনো কাণ্ডে এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা জি কে শামীম, কৃষক লীগ নেতা শফিকুল আলম, মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, গেন্ডারিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু, রুপম ভুঁইয়া এবং অনলাইন ক্যাসিনো এর মূল হোতা সেলিম প্রধান।
গ্রেফতার অভিযানে প্রায় সবার কাছে থেকে মোটা অংকের নগদ টাকা, অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ, মাদক জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী। তবে সম্রাটের কাছ থেকে কী পাওয়া গেছে তা এখনও জানা যায়নি।
এ পর্যন্ত ৮ ক্যাসিনো হোতা আটক হলেও অধরা রয়ে গেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার ও কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ। এরা দুজন সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসার দেখভাল করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে সাঈদ অভিযান শুরুর পর থেকে সিঙ্গাপুরে পলাতক। আর আবু কাওসার কিছুদিন দেশের বাইরে থেকে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
মাদক-সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর ১৮ অক্টোবর থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৪০ টির মতো অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় মোহামেডান, আরামবাগ, দিলকুশা, ওয়ান্ডারার্স, ভিক্টোরিয়া ও ফকিরেরপুল ইয়াংমেনস ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনোর ছড়াছড়ি। এর মধ্যে ইয়াংমেনস ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্রাটের শিষ্য খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। বাকি পাঁচটি ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন সম্রাটের লোকজন।
সম্রাটের ক্যাসিনোর দেখাশোনা করতেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। তারা এক বছর আগে পল্টনের প্রীতম–জামান টাওয়ারে ক্যাসিনো চালু করেছিলেন। অভিযান শুরু হওয়ার পর মমিনুল সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ সেপ্টেম্বর দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি যুবলীগের কয়েকজন নেতার কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে।
আরেকজন এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন। সদলবলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরেন। এসব বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেণ, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরও দমন করা হবে।
এর পরই শুদ্ধি অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতার করা হয় একে একে খালিদ, শামীমসহ যুবলীগ নেতাদের। আজ গ্রেফতার করা হল ক্যাসিনো সম্রাট ও এনামুল হক আরমানকে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd