তাহিরপুরে হাজার হাজার শ্রমিকের হাহাকার: দেখার কেউ নেই

প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০১৯

তাহিরপুরে হাজার হাজার শ্রমিকের হাহাকার: দেখার কেউ নেই

Manual7 Ad Code

যাদুকাটা নদীর বুক থেকে বেলছা,টুকড়ি ও দেশীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করে যুগযুগ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে সীমান্তবর্তী গ্রাম ও আশ পাশের অর্ধশাতাধিক গ্রামে ৫০হাজারের বেশি নারী ও পুরুষ শ্রমিক। কিন্তু দু-সাপ্তাহ ধরে বিশাল এখন জনশূন্য এ নদীতে নেই শ্রমিকদের হইহুল্লু আর র্কমযজ্ঞ ব্যস্থতার ছাপ,শুনসান নিরাবতা বিরাজ করছে চারদিকে। একমাত্র উপার্জনের প্রধান অবলম্বন জাদুকাটা নদীতে কাজ করতে না পারায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে মানবেত জীবন যাপন করছে। শ্রমিকদের মাঝে হাহাকার বিরাজ করছে। নদীতে চারদিকে বারকি নৌকাসহ বিভিন্ন নৌকা ঘাটে লাগানো আছে।

Manual8 Ad Code

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমানন্তবর্তী যাদুকাটানদীতে সরজমিনে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয় কিছু সংঘবদ্ধ লোক নানান ভাবে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বালু ও পাথর উত্তোলণ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা যেমন দূবিসহ জীবন যাপন করছে,তেমনি সরকারও হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। কারন এখানকার বালু ও পাথরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। নদীর বুক থেকে বালু ও পাথর উত্তোলনের কাজ আবার চালু হবে এমনটাই আশা করছেন সবাই।

Manual5 Ad Code

নদীতে বালু ও পাথর বন্ধ থাকার কারন হিসাবে বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি গ্রামের বালু ও পাথর উত্তোলনের কাজে দিন মুজুর শ্রমিক মুজিবুর রহমান জানান,গত এক মাস পূর্বে নদীর পাড়কাটা,চাঁদাবাজিসহ মিথ্যা ও নানান কল্পকাহিনী উল্লেখ্য করে সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসন নদীতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর স্থানীয় এমপি,পুলিশ সুপারসহ সবাই এসে এর কোন সত্যতা পায় নি এরপরও বন্ধ রয়েছে। ফলে ৬সদস্যের পরিবার নিয়ে না খেয়ে বসবাস করছি। বার বার নদীতে শকুনের চোখ যে না পরে নদীতে কাজ করে যেন খেতে পারি তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি। না হলে না খেয়ে বৌ,ছেলে মেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে।

গড়কাটি গ্রামের আরেক নারী শ্রমিক হাছিনি বেগম(৩৬)। পরিবারের একমাত্র উপার্যনশীল ব্যক্তি। স্বামী থেকেও নেই। ৬জনের মুখ তার দিকেই তাকিয়ে থাকে খাবারের আশায়। কিন্তু একমাস ধরে নদীতে কাজ করতে না পারায় ঘরে থাকা টাকা ও খাবার সব শেষ হয়েছে। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন তিনি। তার দাবী দ্রুত যাদুকাটা নদীতে কাজ চালু করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য,জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

Manual6 Ad Code

জামবাগ(জয়পুর)গ্রামের মাকসুদা বেগম(৪০)নারী শ্রমিক জানান,কাজ নাই তাই ৫জনের সংসারে বোঝা মাথায় নিয়ে বাড়িতে বসে আছি। নদীতে কাজ নেই ঘরে জমানো টাকাও শেষ কি ভাবে চলব বোঝতে পারছি না। আমরা নদীতে কাজ করে সারাদিন ৫-৬শতটাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে জীবন বাচেঁ সংসার চলে। কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। এখন কাজ নাই কোথায় কাজ পাব। নদীতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া দাবী জানাই।

বালু ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সমিতির সভাপতি আব্দুস শাহিদ জানান,প্রাকৃতিকভাবে জেগে ওঠা এনদীর বুক থেকে যুগযুগ ধরে শ্রমিকরা বালি ও পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। পাথর উত্তোলনের কাজে ড্রেজার বা বোমা মেশিন ব্যবহার হচ্ছে না,যাতে পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। শুধু ছোট সেইভ মেশিন(নদীর বুক থেকে মাটি সরিয়ে বালি ও পাথর উত্তোলন কাজে সহায়ক যন্ত্র)ব্যবহার হচ্ছে। তা বন্ধ করায় এখন বালু ও পাথর উত্তোলন করা যাচ্ছে না। ফলে কাজ বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীরাও মারাতœক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। এলাকায় হাজার হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপারসহ সবার সুদৃষ্টি কামনা করছি।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান,নদীতে কোন প্রকার চাঁদাবাজি ও নদীর পাড় কাটা হয় না। সব কিছুই পূর্বেও বন্ধ ছির এখনও আছে। নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে যাদুকাটা নদীতে শ্রমিকদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আর কোন প্রকার অন্যায় আর অনিয়ম ছাড় দেওয়া হবে না। কঠোর হাতে দমন করা হবে।

Manual8 Ad Code

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন,হাজার শ্রমিক নদীতে কাজ করতে না পারলে মানবেতর জীবন যাপন করবে। কাজ কবে তবে সরকারী নীতিমালা মধ্যে থেকে এতে কোন বাধা নেই। সবাইকে নদীর পাড় কাটা ও ড্রেজার বন্ধে নজরদারী রাখতে হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..