গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি টাকার জরিমানা বৈধ: হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ২:২৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০১৯

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি টাকার জরিমানা বৈধ: হাইকোর্ট

Manual1 Ad Code

দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ওপর আরোপ করা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ৩০ কোটি টাকার জরিমানা বৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আইন ও চুক্তি ভেঙে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেয়ায় ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর এ জরিমানা করা হয়েছিল।

Manual2 Ad Code

পরবর্তী সময়ে জরিমানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে গ্রামীণফোন। সেই রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের বেঞ্চ রোববার এ রায় দিয়েছেন।

Manual8 Ad Code

তবে ওই অর্থ পরিশোধে গ্রামীণফোনকে নতুন করে চিঠি দিতে হবে বিটিআরসিকে। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার চার মাসের মধ্যে এ চিঠি দিতে হবে বিটিআরটিসিকে।

এ ছাড়া অপটিক্যাল ফাইবারের (তার) মাধ্যমে গ্রাহকদের ‘গো ব্রডব্যান্ড’ ইন্টারনেট সেবা দেয়ায় রাষ্ট্রের কী ক্ষতি হয়েছে, তা মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের মাধ্যমে নিরূপণ করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

Manual6 Ad Code

রায়ের পর বিটিআরসির আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, গো ব্রডব্যান্ড নামে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের ট্রান্সমিশন সংযোগ দিয়েছে। এটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার নীতিমালার ৪ দশমিক ৭ এবং ৪ দশমিক ৮ নম্বর শর্তানুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ।

Manual7 Ad Code

এ সংক্রান্ত আইন তুলে ধরে তিনি বলেন, মোবাইল ফোন অপারেটররা অপটিক্যাল ব্যাকবোন ট্রান্সমিশন স্থাপন করতে পারে না।

‘এর অনুমোদন রয়েছে, শুধু অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন সেবাদানকারী নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) প্রতিষ্ঠানগুলোর,’ বলেন এ আইনজীবী।

‘ফলে এ সার্ভিসটি চালু রাখা আইনসিদ্ধ নয় বলে রায় দিয়েছেন আদালত।’

আর টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স নীতিমালা অনুযায়ী, মোবাইল অপারেটরগুলো কেবল মোবাইল ডিভাইস এবং মডেমের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে।

রেজা-ই-রাকিব বলেন, এ সার্ভিস চালু রাখার মাধ্যমে রাষ্ট্রের কী ক্ষতি হয়েছে, তা অডিটর জেনারেলের মাধ্যমে নিরূপণের জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জরিমানা আরোপ নিয়ে বিটিআরসি এর আগে বলেছে, নিজস্ব ফাইবার ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৫৫১টি শাখায় ‘গো ব্রডব্যান্ড’ ব্র্যান্ডের অধীন ইন্টারনেট সংযোগ দিয়েছিল গ্রামীণফোন। এর মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরটি লাইসেন্সের শর্ত লঙ্ঘন করেছে।

ফাইবার অপটিকের মাধ্যমে পুরোপুরি ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার জন্য ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই করে গ্রামীণফোন।

বিটিআরসির আইন অনুসারে, নিজস্ব ফাইবার ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে কেবল ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক অপারেটর ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে।

২০১৪ সালের এপ্রিলে আইএসপি অপারেটর এডিএন টেলিকম লিমিটেড ও এজিএনআই সিস্টেমস লিমিটেডের অংশীদারিত্বে গো ব্রডব্যান্ড সেবা চালু করে গ্রামীণফোন।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিটিআরসিতে বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ দাখিল করলে গো ব্রডব্যান্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় টেলিকম নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।

আইএসপিএবি বলছে, কিছু ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানকে ফাইবার অপটিক সংযোগ দিচ্ছে গো ব্রডব্যান্ড। এতে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এর পর মার্চের শেষ দিকে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয় বিটিআরসি। টেলিযোগাযোগ আইন ভঙ্গ করে কেন সোনালী ব্যাংককে ‘গো ব্রডব্যান্ড’ সেবা দেয়া হয়েছে, চিঠিতে তা জানতে চাওয়া হয়।

কিন্তু সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে গ্রামীণফোনকে জরিমানার সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি।

এর পর ৩০ কোটি টাকা জরিমানা করে তা পরিশোধ করতে ওই বছরের ৬ ও ২৯ নভেম্বর এবং ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তিনটি চিঠি দেয় বিটিআরসি।

এ চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে রিট আবেদন করে গ্রামীণফোন। ওই আবেদনে ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ওই তিনটি চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সেই রুল নিষ্পত্তি করে রোববার রায় হলো।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2019
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..