মিন্নির পরকীয়ার বর্ণনা শুনে আদালতে মাথা নিচু করলেন বাবা ও শ্বশুর

প্রকাশিত: ৭:৫৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০১৯

মিন্নির পরকীয়ার বর্ণনা শুনে আদালতে মাথা নিচু করলেন বাবা ও শ্বশুর

Manual6 Ad Code

‘আমাদের কাছে ভিডিও রয়েছে, অনেক কিছুই রয়েছে। আপনাকে আমি জানাচ্ছি। আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ছিলেন রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের দীর্ঘ দিনের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। স্বামীর পাশাপাশি প্রেমিক নয়নের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক রাখতেন। মিন্নি রিফাত শরীফের আগে নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছেন। মিন্নি সেই বিয়ের কথা গোপন রেখে রিফাতের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। নয়ন বন্ড যখন জেলে থাকে তখন মিন্নি তথ্য গোপন করে রিফাতকে বিয়ে করেন। আমাদের কাছে সেই বিয়ের কাবিননামা আছে। এখানেই শেষ নয়, নয়ন বন্ড জেল থেকে মুক্তি পেলে একসঙ্গে দুই সম্পর্ক বজায় রাখেন মিন্নি। স্বামী রিফাতের পাশাপাশি নয়নের সঙ্গেও নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করে গেছেন। কলেজে যাওয়ার নামে নয়নের বাসায় গিয়ে মেলামেশা করতেন। মিন্নি নিজেই তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়গুলো স্বীকার করেছেন। নিম্ন আদালতে মিন্নির রিমান্ড আবেদনে এ বিষয়গুলোর সুনির্দিষ্ট তথ্য মিলেছে।’

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেফতার নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিনের বিরোধীতা করে হাইকোর্টে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির। এই আইজীবী পরকীয়া বর্ণনা করার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মিন্নির শ্বশুর অর্থ্যাৎ রিফাত শরীফের বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ এবং মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। আদালতে আইনজীবী মিন্নির পরকীয়ার বর্ণনা করার সময় মাথা নিচু করে তারা।

Manual6 Ad Code

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, দুইজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখায় এক পর্যায়ে রিফাত ও নয়নের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। পরে মিন্নি ও নয়ন মিলে রিফাতকে হত্যার ছক কষে। মিন্নি রিফাতকে হত্যার উদ্দেশে কলেজে নিয়ে যান। এরপর তার সামনে রিফাতকে ধরে নিয়ে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে নয়ন ও তার সঙ্গীরা কোপাতে শুরু করলে মিন্নি বাঁচানোর অভিনয় করেন।

বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানি হয়। এ সময় আদালতে আরও উপস্থিত ছিলেন- মিন্নির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী। বিকাল তিনটায় আদালত শুরু হলে প্রথমে জামিনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন মিন্নির আইনজীবী জেডআই খান পান্না। জামিনের বিরোধিতা করে যুক্তি উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির। এ সময় আদালত জানতে চান, আপনি কী বক্তব্য দিতে চান, আপনার কাছে কী রয়েছে? জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার আগে-পরে নয়নের সঙ্গে মিন্নির ফোনালাপের রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। সেই রেকর্ডে বলা আছে, তারা রিফাত শরীফকে হত্যার ছক কষেছিলেন। মিন্নি ও নয়নের ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে আলাপের রেকর্ডও আমাদের হাতে আছে।

এরপর আদালতে মিন্নির আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, এমন ডকুমেন্ট ও ভিডিও চাইলেই তৈরি করা সম্ভব। এগুলো ভেরিফায়েড কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। এগুলো তো মামলার মেরিটের অংশ নয়। আপনাকে মূল জায়গায় আসতে হবে। এ সময় মিন্নি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মাঝে বাদানুবাদ হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, আপনারা পত্রিকার সংবাদ উপস্থাপন করেছেন। তা কি মামলার নথি? প্লিজ, সাইড টক করবেন না। কোনো কিছু কি জোরপূর্বক আদায় করবেন?

এ সময় আদালত বলেন, কেউ কোনো কিছুই জোরপূর্বক আদায় করতে পারবে না। ফেসবুকের আইডি সঠিক কি না, তার তো সার্টিফায়েড লাগবে।

Manual7 Ad Code

বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

Manual5 Ad Code

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে দ্বিতীয় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হত্যায় মিন্নির সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

Manual7 Ad Code

২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনের নামে এবং চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2019
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..