জৈন্তাপুরে অভিযানের পরও চলছে পাহাড়-টিলা কাটা

প্রকাশিত: ৬:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০১৯

জৈন্তাপুরে অভিযানের পরও চলছে পাহাড়-টিলা কাটা

Manual3 Ad Code

সিলেট জেলার পাশে প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়-টিলা কাটার উৎসব চলছে। প্রশাসনের অভিযানের ফলে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের পরিবেশ ধ্বংস করার এ কাজে লিপ্ত হচ্ছে অসাধু লোকেরা।

ফতেপুর ইউনিয়নের হরিপুর, শিকারখাঁ গ্রাম, ৭নং গ্যাস কূপের (উৎলার পার) মসজিদের পাশে মড়া মিয়ার বাড়ি, হরিপুর দোবাইর মসজিদের পাশে বাহারের বাড়িসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি বড় বড় পাহাড় কাটার মহোৎসবে মেতেছে পাহাড়খেকোরা।

টিলা কাটা বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করছেন। একটি টিলায় অভিযান পরিচালনা করেই শেষ হয়ে যায় কিন্তু এর আড়ালে রয়ে যায় ৫ থেকে ৬টি টিলা। যার কারণে কোন অবস্থায় বন্ধ হচ্ছে না টিলা ও পরিবেশ ধ্বংসের কাজ। এমনকি এই উপজেলাজুড়ে টিলা কর্তন উৎসব চলছে নির্ভয়ে। দেখার যেন কেউ নেই!

ফলে টিলা কেটে পকেট ভারি করছে অসাধু পাহাড়খেকোরা। ট্রাক ও ফেলুটার দিয়ে বিশাল কয়েকটি পাহাড় কেটে সাবাড় করে উপজেলার ৫নং ফতেপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ৪-৫ জন নেতা।

Manual5 Ad Code

২ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গোপন সংবাদে ভিত্তিতে উপজেলার ফতেপুর (হরিপুর) ইউপির শিকারখাঁ গ্রামের মরহুম শাহেদ আলীর বাড়ীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল।

Manual6 Ad Code

এ সময় সাথে ছিলেন বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক সানোয়ার হোসেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় চতুর আব্দুল মুতলিব ও চিকনাগুল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম কৌশলে পালিয়ে যান।

অপরদিকে আব্দুল মুতলিবের বোন পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করলে প্রাথমিকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বজিৎ কুমার পাল ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে মিনারা বেগমকে সর্তক করে পাহাড় ও টিলা কর্তন না করার কড়া নির্দেশ জারি করেন। জরিমানা আর নির্দেশনা জারি করার পরও বন্ধ হচ্ছে না পাহাড়-টিলা কর্তন।

এদিকে ২৬ জুলাই থেকে পুনরায় পাহাড় কেটে প্রতি ঘনফুট মাটি ৩ টাকা দরে বিক্রয় শুরু করা হয়। ফলে উপজেলার সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।

সূত্র জানায়, তারা প্রশাসনের লোকদের সাথে ‘আলোচনার মাধ্যমে একটি সমন্বয় করে’ রাতের পরিবর্তে এখন দিনে দুপুরে সিলেট গ্যাস ফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় পাহাড় কর্তন করছেন মুহিবুর রহমান (মেম), আলকাছ, বাবলু, বাহার, চিকনাগুল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, সুনা মিয়ার ছেলে নূরুল হকসহ পাহাড় খেকোচক্র, যেন প্রশাসন ও আইন তাদের কাছে কিছুই না।

এছাড়া পাহাড় কর্তনকারী চক্রের সদস্যরা সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড সংলগ্ন বিভিন্ন টিলা কেটে সাবাড় করছে। তাই দ্রুত পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা পালন না করলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Manual6 Ad Code

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তারা ‘মন্ত্রীর লোক দাবি’ করে দিবালোকে পাহাড় কেটে চললেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণে হরিপুর, শিকার খাঁ, উৎলার পারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। এতে প্রতি বছর বেড়ে চলছে পাহাড় ধসে প্রাণহানিসহ ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনা।
এছাড়াও প্রতিদিন ব্যাপকহারে পাহাড় কাটার ফলে উপজেলার পাহাড়গুলো প্রায় বিলীনের পথে রয়েছে।

Manual1 Ad Code

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পালের সাথে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফতেপুর ও চিকনাগুল এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটার বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি। খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..