সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০১৯
সিলেটের খাদিমনগরে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বিআরডিটিআই) এখন এক কর্তা ব্যক্তির মর্জিমাফিক পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ফারুক আহমেদ জোয়ার্দ্দারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারনে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। মুখ থুবড়ে পড়ে আছে প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রা। অভিযোগ আছে ফারুক আহমদ জোয়ার্দ্দার তার ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে ধবংস করে দিচ্ছেন রাষ্ট্রের উন্নয়ন ধারায় সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটিকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরডিটিআই সিলেটের কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, পরিচালক ফারুক আহমদ জোয়ার্দ্দারের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম সীমালঙ্ঘন করে চলেছে। প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক কোন বিধি বিধান তিনি অনুসরণ করছেন না। নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে মর্জিমাফিক চালাচ্ছেন বিআরডিটিআই এর কার্যক্রম। তেমনি তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার কারনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত চলে গেছে। অপরদিকে বিআরডিটিআই এর ২নং হোস্টেলের কক্ষগুলোতে এ্যাটাচড বাথরুম নির্মাণের জন্য ৯লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। যথারীতি বিআরডিটিআই নির্মাণ শাখা থেকে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি করে দেওয়া হলেও ফারুক আহমদ জোয়ার্দ্দার তার ব্যক্তি স্বার্থের জন্য কাজটি নিজের মাধ্যমে করার চেষ্টা করেন। যে কারনে কম্পিউটার ল্যাবের মতো বাথরুম নির্মাণের বরাদ্দকৃত টাকাগুলোও ফেরত চলে যায়।
ফারুক আহমদ জোয়ার্দ্দারের কবল থেকে রক্ষা পায়নি বিআরডিটিআই এর গাছগুলো। তিনি কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকে প্রায় ২৬০টি গাছ কেটে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া তিনি বিআরডিটিআই এর আদর্শ উদ্দেশ্যেকে পাস কাটিয়ে নিজের স্বার্থে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব প্রশিক্ষণ তিনি টাকার বিনিময়ে সমন্বয়কারীদের মধ্যে বণ্টন করেন। এভাবে প্রায় ৯ লাখ টাকা তিনি হাতিয়ে নেন।
ফারুক আহমেদ জোয়ার্দ্দার প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে নি¤œমানের খাবার পরিবেশন করে থাকেন। খাবার থেকে তিনি বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাত করেন। এজন্য তিনি প্রথমে ইনস্টিটিউটের সবচেয়ে সিনিয়র একজন দক্ষ অফিসার এবং সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ক্যাফেটেরিয়ার ম্যানেজারকে দায়িত্ব হতে সরিয়ে দেন। এছাড়া ক্যাফেটেরিয়া ম্যানেজম্যান্ট কমিটির অনুমোদন ছাড়াই প্রশিক্ষণের ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মূল্য নিজের ইচ্ছেমত কাগজে-কলমে বৃদ্ধি করে থাকেন। তাছাড়া জিনিসপত্রের মূল্য বেশি দেখিয়ে এবং মাছ-মাংস কম পরিমাণ কিনে বেশি ওজন দেখিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যয় বৃদ্ধি দেখিয়ে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ টাকা তিনি আত্মসাত করে নিচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে- বিআরডিটিআই-এর পরিচালকের বাংলো যা তিনি প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়াই কোন প্রকার দরপত্র আহ্বান না করেই মেরামত ও সংস্কার কাজ করে বসবাস করছেন। বিধি লঙ্ঘন করে তিনি বাংলোতে বসবাস করছেন এবং বাসাভাড়া কম কর্তনের মাধ্যমে সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠানের একটি ল্যান্ড রোভার ও একটি বাস মেরামতের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তিনি তা মেরামত না করায় টাকাগুলো ফেরত চলে যাচ্ছে। তিনি ব্যক্তিগত কাজে প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ব্যবহার করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে।
সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয় একটি প্রকল্প একটি বাড়ি একটি খামার। এই প্রকল্পের প্রশিক্ষণ প্রদানেও তিনি অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যার ফলে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রকল্পের উপকারভোগীদের ৩দিন ব্যাপী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছেন। যেকারনে অনেক খামারীরা প্রকল্প সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারছেন না। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রতিটি কোর্সের উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার নিয়ম থাকলেও তিনি উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের সম্মানী গ্রহণের লোভে তা না করে নিজেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন ও সমাপ্ত করে থাকেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
তবে ফারুক আহমদ জোয়ার্দ্দার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির উন্নতিকল্পে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কেউ শত্র“তাবশত তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ক্রাইমসিলেট/আশা
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd