পড়ে আছে ফুলসজ্জা, এই ফুলগুলো ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের..

প্রকাশিত: ৮:৫১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯

পড়ে আছে ফুলসজ্জা, এই ফুলগুলো ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের..

Manual5 Ad Code

এই ফুল সজ্জিত বাসর ঘরটি আজ মুখর থাকার কথা ছিল। কথা ছিল আজ এখানকার মধ্যমণি হয়ে থাকবেন তারা দুজনে। সবাই মেতে থাকবে তাদের নিয়ে। কিন্তু এসবের কিছুই আর হয়ে ওঠেনি। মধ্যমণিরা এখন বহু দূরে, আর এ দুনিয়াতে নেই। ট্রেন দুর্ঘটনায় বর-কনেকে বহন করা মাইক্রোবাস চুর্ণ বিচুর্ণ হয়ে যায়। ওই গাড়িতে বরযাত্রী হিসেবে থাকা ১১ আদম সন্তানের কেউ আর বেঁচে নেই এখন। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিজ নিজ বাড়িতে তাদের লাশ দাফন হয়েছে।

কিন্তু বরের বাড়িতে ফুলসজ্জাটি এখনও ওভাবেই আছে। মুখর হয়ে থাকার বদলে বাসর ঘরটি এখন এক নির্জন স্থান। ফুলগুলো আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি তারা দুজনার।

Manual2 Ad Code

গতকাল সোমবার ঘটা দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বর ও কনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বর আযম হোসেন (২৫) সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের কান্দাপাড়া গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে এবং কনে সুমাইয়া খাতুনের (২০) বাড়ি উল্লাপাড়ার চরঘাটিনায়। নিহতদের মধ্যে একজন বরের বোন জামাই সুমন শেখ, বরযাত্রী একই গ্রামের টুটুল শেখ, খোকন মিয়া, শরিফুল ইসলাম শরিফ, ভাষান আলী, আব্দুস সামাদ ও বায়োজিদ হোসেন।

Manual1 Ad Code

এদিকে, দুর্ঘটনার খবর শুনে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ছেলে সুমনের লাশ দেখে স্ট্রোক করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বাবা মুছা শেখ।

স্থানীয়রা জানান, বরযাত্রীসহ মাইক্রোবাসটি উল্লাপাড়ার ঘাটিনা থেকে সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের কান্দাপাড়ায় যাচ্ছিল। সলপ স্টেশনের উত্তরে পঞ্চক্রোশী আলী আহম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে উন্মুক্ত লেভেল ক্রসিং পারাপারের সময় মাইক্রোবাসটির সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা লাগে। এতে ১০ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জিআরপি থানার ওসি হারুন মজুমদার।

Manual6 Ad Code

বরের বাড়িতে বাসরঘর সাজানো হয়। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস সেই ঘর সেভাবেই পড়ে ছিল। আসেননি নববধূ, বর।

অরক্ষিত রেলওয়ে লেভেল ক্রসিং-এর কারণেই এ দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন উল্লাপাড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. গোলাম মোস্তফা। তিনি জানান, উন্মুক্ত লেভেল ক্রসিং পারাপার হওয়ার সময় বিয়ের গাড়িবহরের একটি মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকজন মারা যান। রেলওয়ে লেভেল ক্রসিং-এ কোনও ব্যারিয়ার বা বার্জ ছিল না। এমনকি সেখানে রেল বিভাগের কোনও পাহারাও ছিল না। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।

পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের পাকশীর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মিজানুর রহমান জানান, এটা রেল বিভাগের নির্ধারিত কোনও লেভেল ক্রসিং নয়। স্থানীয় লোকজন নিজেদের স্বার্থে চলাচলের জন্য সেখানে উন্মুক্ত রেখেছে। দুর্ঘটনার পর দেড়ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি ছেড়ে ঢাকার দিকে গেছে।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..