রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ১০ বছর পর মুক্তি পেলেন শিক্ষক আজমত আলী

প্রকাশিত: ৭:০৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ১০ বছর পর মুক্তি পেলেন শিক্ষক আজমত আলী

Manual2 Ad Code

রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার পরেও বিনাদোষে আইনি জটিলতায় ১০ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেলেন বৃদ্ধ শিক্ষক আজমত আলী। হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের নির্দেশের কপি হাতে পেয়ে জেল সুপার মকলেছুর রহমান মঙ্গলবার (১৬ জুন) বেলা ১১টায় তাকে মুক্তি দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

Manual5 Ad Code

সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত আজমত আলীকে পেয়ে বাবা-মেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামের ইজ্জতউল্লাহ সর্দারের ছেলে আজমত আলী টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরের ভেঙ্গুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন তিনি।

Manual2 Ad Code

১৯৮৭ সালে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একটি হত্যা মামলায় ১৯৮৯ সালে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজমত আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

Manual5 Ad Code

এই আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল এর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে সাধারণ ক্ষমার প্রার্থনা করে আজমত আলীর পরিবার। সেই আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১ আগস্ট জামালপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান আজমত আলী।

পরে ২০০৫ সালের ২ মার্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামি আজমত আলীকে নিন্ম আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। হাজির না হলে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমত আলীকে গ্রেফতার করে নিন্ম আদালতে সোর্পদ করে পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করছে।

Manual1 Ad Code

২০১৮ সালের অক্টোবরে আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন তার বাবার মুক্তি চেয়ে আইনি সহায়তা পেতে সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইডে আবেদন করেন। পরে সে আবেদন পর্যালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশে আপিল বিভাগের রায় পুর্ণবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাকে নি:শর্ত মুক্তি দেওয়ার নিদের্শ দেন। আপিল বিভাগের নিদের্শে সোমবার বেলা ১১ টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেন।

আজমত আলীর কন্যা বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশের পর আইনী জটিলতায় বিনা দোষে তার বাবা ১০ বছর কারাভোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এখন আমার বাবা জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া দশ বছর কি আমরা ফিরে পাবো? এই বলে বাবাকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সদ্যমুক্তি পাওয়া আজমত আলী বলেন, আইনি জটিলতায় বিনাদোষে আমি বৃদ্ধ বয়সে কারাগারে ১০ বছর মানবেতর জীবন অতিবাহিত করেছি। কারো জীবনে যেন এমন ঘটনা না ঘটে।

জামালপুর কারাগারের জেল সুপার মকলেছুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নিদের্শের কপি পাওয়ার মাত্রই তাকে মুক্তি দেয়া হলো। তার মুক্তিতে কারা কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..