সিলেট ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রতিটি খাল, বিল, হাওরে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, পেটফুলা জাল দিয়ে অবাদে দেশীয় মাছ এবং মাছের পোনা ধরা হচ্ছে এতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর রয়েছে নির্বিকার। হাওর-বাওর নদী বিল বেষ্টিত গোয়াইনঘাট উপজেলায় মৎস্য সম্পদে ভরপুর থাকার কথা থাকলেও মৎস্য আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকার কারনে এ উপজেলায় দেশীও মৎস্য সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলায় প্রতিটি হাওর বিলে নিষিদ্ব কারেন্ট জাল, পেটফুলা জালের ব্যবহারে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ ধরার কারণে মৎস্য সম্পদের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এ উপজেলার সরকারী জলমহাল গুলোতে প্রতি বছর মৎস্য আইন লঙ্গন করে বিল শুকিয়ে মাছ ধারার কারণে দিনদিন দেশীয় মাছের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এছাড়াও শুষ্ক মৌওসুমেও সরকারের ইজারাকৃত বিলগুলো মৎস্য আইনের তোয়াক্কা না করে প্রতিটি বিলে সম্পুর্ন পানি শুকিয়ে মাছ ধরা হয়। এমনকি কোন কোন বিল বছরে একাধিকবার ফিশিং করা হয়। তখনও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও চোখ বুঝে থাকেন। প্রতিটি বিল যদি ৩/৫ বছর পর পর ফিশিং করা হত তা হলে দেশীয় মৎস্যের এমন ঘাটতি দেখা দিতনা। মৎস্য সম্পদ রক্ষার দ্বায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের কার্যক্রম শুধু কোন সপ্তাহ বা পক্ষ পালনে সীমাবব্ধ না রেখে সারা বছরই সচেষ্ট থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল। বিল ফিশিং’র ব্যাপারে মৎস্য আইনের বাস্থবায়নে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ একান্তই প্রয়োজন। দেশীয় মৎস্য রক্ষায় কারেন্ট জাল,পেটফুলা জাল বিক্রি,ব্যাবহার বন্ধে উদ্দ্যেগও নিতে হবে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্বির প্রয়োজনও রয়েছে। উপজেলার অনেক খাল-বিল,হাওর ভারাট হয়ে যাওয়ার কারনে মৎস্য সম্পদ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে জরুরী উদ্দ্যেগ গ্রহন করা একান্ত প্রয়াজন। হাওর বেষ্টিত এ উপজেলায় আধুনিক মৎস্য চাছে মৎস্য অধিদপ্তর গোয়াইনঘাট’র কোন কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মৎস্য অধিদপ্তর দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাছ চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখলেও দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গোয়াইনঘাট উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর রয়েছে উদাসিন। সরেজমিনে সোমবার (১৮আগষ্ঠ) দুপুর ১টায় মৎস্য অধিদপ্তর গোয়াইনঘাট উপজেলা অফিস থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে উপজেলার ৪নং লেঙ্গুড়া গ্রামের শেষ প্রান্তে গিয়ে দেখাযায়, দুটি কাঠের নৌকা দিয়ে ৭/১০জনের একটি টিম পেটফুলা জাল দিয়ে দেশীয় মাছ ধরতে ব্যস্থ রয়েছেন। কিন্তু মৎস্য কর্মকর্তা নিজেই জানেন না বিষয়টি। স্থানীয় ইব্রাহিম আলী বলেন, প্রতিদিন এলাকার লোকজন বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে দেশীয় মাছ ধরে থাকেন৷ কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তর গোয়াইনঘাটের কোন তদারকি কখনো চুখে পড়েনি। উল্লেখ্য,গতকাল সোমবার জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপজেলার ৩জনকে শ্রেষ্ঠ খামারি ঘোষণা করলেও অনুষ্ঠানে কেউ উপস্থিত ছিলেননা। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারী বলেন, একটি অনুষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী র্যালী পরবর্তী আলোচনা সভার শেষ পর্যায়ে উপজেলার শ্রেষ্ঠ খামারিদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা সম্মাননা পুরস্কার তুলে দিতে পারিনি। কোন না কোন কারণে এদের কেউ অনুষ্ঠানে ছিলেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আমিনুর রহমান জানান, অন্যান্য বছরের মতো এইবছর বন্যা না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পানি নেই। এরপরও নিচু অঞ্চলে কিছুটা পানি থাকায় অনেকে মাছ ধরে থাকে। আমরা ইতিপূর্বে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জাল আটক করেছি। মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কিছুটা দূরে দেশীয় মাছ ধরার বিষয়ে আলাপ করলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, লোক দেখিয়ে জাল জব্দ বা অভিযান করা সম্ভব নয়, আমরা আমাদের প্রসেস মতো কাজ করবো বলে ফোন রেখে দেন। মৎস্য আইন লংঘনকারীদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রসাশন’র সার্বক্ষনিক তৎপরতার পাশাপাশি দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও বৃদ্বিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী উদ্দ্যেগ গ্রহন করা একান্ত প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করেন।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd