যাদুকাটায় মঞ্জু চক্রের ধ্বংস লীলা বন্ধের দাবি সংসদে : তবু্ও নিরব প্রশাসন!

প্রকাশিত: ৭:৩৪ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৩

যাদুকাটায় মঞ্জু চক্রের ধ্বংস লীলা বন্ধের দাবি সংসদে : তবু্ও নিরব প্রশাসন!

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে চলছে অবৈধ ড্রেজার-বোমা মেশিন দিয়ে পাথর লুট ও জমজমাট চাঁদাবাজি। খন্দকার মঞ্জুর চক্রের এই ধ্বংস লীলা বন্ধে মহান সংসদে উপস্থাপন করেন সুনামগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. শামীমা শাহরিয়ার। তিনি এই অবৈধ ড্রেজার-বোমা মেশিন ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান। কিন্তু কিছুতেই তাদের এই ধ্বংস লীলা বন্ধ হচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব না দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের চাঁদাবাজি। বালুমহাল ইজারা নামে চাঁবাজির রাম রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে খন্দকার মঞ্জুর চক্র। তবে তাদের ইজারাটি সম্পূর্ণ রূপে নিয়ম বর্হিভূত। এখনো দিচ্ছে না খাজনা। কোথায় এদের খোঁটির জোর?

অবৈধ ইজারাদার খন্দকার মঞ্জুর স্থানীয় থানা পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ের তোলেছেন। তিনি প্রতিনিয়ত তাদের সাথে বৈঠক করেন। যার ফলে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যুরো’র (বিএমডি) গেজেটভুক্ত ওই এলাকা ও যাদুকাটা নদীতে চলছে অবৈধ ড্রেজার-বোমা মেশিন দিয়ে পাথর লুট করেছে এবং প্রত্যহ লাখ লাখ টাকা বখরা (চাঁদা) আদায় করছে এ সিন্ডিকেট। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয়ভাবে। কিন্তু তারা এই অবৈধ ইজারাকে পুঁজি করে আদায় করছে লাখ লাখ টাকা। খন্দকার মঞ্জুর চক্র স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে এই ধ্বংস লীলা চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বিলীন হচ্ছে মানুষের বসত বাড়ি ও ফসলী জমি।

খন্দকার মঞ্জুর চক্রের এই ধ্বংস লীলা বন্ধে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাটের কোনাট গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে গোলাপ মিয়া সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

Manual3 Ad Code

সম্প্রতি যাদুকাটা নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও বারকি নৌকা থেকে চাঁদাবাজি বন্ধে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হলেও অজ্ঞাতকারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী বাজারের মৃত মফিদুল হোসেনের পুত্র মো. ফেরদৌস আলম এ অভিযোগ দাখিল করেন।

অভিযোগে প্রকাশ : উপজেলার যাদুকাটা নদী থেকে বালু তোলার জন্য ইজারা গ্রহণ করে মেসার্স আরাফ ট্রেড কর্পোরেশন। যার পোপ্রাইটর খন্দকার মঞ্জুর আহমদ। কিন্তু বালু উত্তোলনের পাশপাশি যাদুকাটা নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে পাথর। ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। প্রত্যহ দিনে এবং রাতে হাজার হাজার নৌকা দিয়ে বার্কি শ্রমিকরা পাথর উত্তোলন করে। পাথরখেকোরা অবৈধভাবে উত্তোলিত শত শত ট্রাক যোগে রাতের আধাঁরে সুনামগঞ্জ জেলাধীন সুরমা নদীঘাটে নিয়ে যায়। পরে বাল্বহেড -কার্গো ভর্তি হয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে।

Manual7 Ad Code

সূত্রমতে যাদুকাটা নদীতে পাথর বহনকারী নৌকা প্রতি ৫শ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে খন্দকার মঞ্জুর আহমদ ও তার চক্রের সদস্যরা। পাথরবাহী বারকি নৌকা থেকে দৈনিক ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়ে থাকে। অথচ খন্দকার মঞ্জুরের ইজারা শুধু বালু উত্তোলন থেকে টোল আদায়ের। পাথর উত্তোলন বা পাথরবাহী বারকি নৌকা থেকে টাকা আদায়ের কোনো অনুমতি তার নেই।

সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় সমগ্র বাংলাদেশে বালুমিশ্রিত পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে যাদুকাটা থেকে হাজার হাজার ঘনফুট পাথর উত্তোলন করছে খন্দকার মঞ্জুর চক্র এবং আদায় করছে দৈনিক লাখ লাখ টাকার চাঁদা।

অভিযোগে আরোও প্রকাশ, খন্দকার মঞ্জুর আহমদ ও তার সহযোগী রতন মিয়া স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসন ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে পাথর লুটপাট ও বখরাবাজি করছেন। তাদের সাথে রয়েছে রইস মিয়া নামের আরেক রাজনৈতিক ক্যাডার। রইস মিয়া তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নৌকা ও ট্রাক থেকে টাকা উত্তোলনসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ ও ম্যানেজে করে থাকে। আর এ কারণে খন্দকার মঞ্জুর চক্রের পাথর লুট ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চালানো হয় রকমফের অত্যাচার ও আইনী নিপীড়ন।

Manual6 Ad Code

স্থানীয় সূত্রে আরা জানা যায়, এই পাথর-বালু খেকো মঞ্জুর সিন্ডিকেট’র সাথে রয়েছেন জেলা-উপজেলার শাসকদলীয় নেতা ও হোতারা। আর এ কারণেই যাদুকাটা নদীতে মঞ্জুর, রতন ও রইসরা লুটপাট ও বখরাবাজির রাম রাজত্বকায়েম করে রেখেছেন।

এ বিষয়ে- সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্রাইম সিলেট’কে বলেন, পাথর উত্তোলন ও পাথরবাহী নৌকা থেকে টাকা আদায় সম্পূর্ণ বেআইনী ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। আইনত এর কোনো অনুমোদন বা ইজারা নেই। এ ব্যাপারে খোজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তাহিরপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইফতেখার হোসেন ক্রাইম সিলেট’কে জানান, চাঁদাবাজি ও অবৈধ পাথর উত্তোলন বিষয়ে থানা পুলিশ অবগত নয়। খোজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2023
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..