দোয়ারাবাজারে নারীসহ মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য আটক

প্রকাশিত: ১১:২০ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২৩

দোয়ারাবাজারে নারীসহ মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য আটক

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : লিবিয়ায় মানব পাচারকারী চক্রের নারীসহ তিন সদস্যকে শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বড়খাল গ্রামের লিবিয়া প্রবাসী আব্দুল বারেকের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন (৪২), উরুরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র শাহজাহান মিয়া (৬৫) ও ভাওয়ালীপাড়া গ্রামের মৃত চান মিয়ার পুত্র আবুল কাশেম (৫২)।

Manual8 Ad Code

শনিবার (১৭ জুন) বিকালে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুহাম্মদ আসলাম হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদপূর্বক তথ্য সংগ্রহ এবং মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। শনিবার বিকালে আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Manual5 Ad Code

উল্লেখ্য, ওই চক্রের লিবিয়া অংশের অন্যতম প্রধান মানবপাচারকারী উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বড়খাল গ্রামের আব্দুল বারেক দীর্ঘদিন যাবৎ লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। তার নেতৃত্বে চক্রটি লিবিয়ার বন্দিশালায় পাচারকৃত বাংলাদেশি যুবকদেরকে অর্ধাহারে-অনাহারে রেখে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে বাংলাদেশে অবস্থানরত দালালদের মাধ্যমে। অন্য আসামিরা দেশে ও বিদেশে মানবপাচার চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে।

উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ছনুগাঁও গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে মাহমুদুল হাছান সৌরভ (২২), ভিখারগাঁও গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে সুমন মিয়া (১৯) ও কুশিউড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে নোমান মিয়া (২২) দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রত্যেকে ৪ লক্ষ টাকার চুক্তিতে বিভিন্ন তারিখে লিবিয়া পাঠান।

Manual1 Ad Code

দালালচক্র ওই তিন যুবককে প্রথমে দুবাই, তারপর মিশর হয়ে লিবিয়া পাঠায়। লিবিয়ায় বেকার অবস্থায় অত্যন্ত দুর্বিসহ জীবনযাপন করতে থাকলে দালাল আব্দুল বারেক তাদেরকে লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠাতে তাদের অভিভাবকদের প্রস্তাব দিয়ে জনপ্রতি সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা খরচ পড়বে বলে জানায়।

লিবিয়ায় বন্দি ওই তিন যুবকের অভিভাবকরা আব্দুল বারেকের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন ও ছেলে আসামি রেজাউল করিমের হাতে মুরব্বিদের উপস্থিতিতে ৩শ’ টাকার নন জুডিসিয়াল স্টাম্পে লিখিতভাবে তিনজনের জন্য সর্বমোট ৩০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নগদ বুঝিয়ে দেন। সম্পূর্ন টাকা হস্তান্তরের পর দালাল আব্দুল বারেক তিন যুবককে লিবিয়া রাষ্ট্রের অজ্ঞাত স্থানে নিজের কাছে রাখে। পরে দালালচক্র ওই তিন যুবককে ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ায় মানবপাচারকারীর কাছে বিক্রি করে দেয়। আব্দুল বারেকের সহযোগী অজ্ঞাতনামা মানবপাচারকারী চক্র তাদেরকে লিবিয়ার কোনো অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।

গ্রেফতারকৃত আসামিসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ মোতাবেক উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ছনোগাও গ্রামের কোরবান আলী বাদী হয়ে একই ইউনিয়নের বড়খাল গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর পুত্র লিবিয়া প্রবাসী আব্দুল বারেক (৫৪), উরুরগাঁও গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া (৩০), বড়খাল গ্রামের দালাল আব্দুল বারেকের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন (৪২) ও পুত্র রেজাউল করিম (৩৩), উরুরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র শাহজাহান মিয়া (৬৫), ভাওয়ালীপাড়া গ্রামের মৃত চান মিয়ার পুত্র আবুল কাশেম (৫২), ডালিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র আব্দুল হামিদ (৩৫) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।

মানবপাচারকারী চক্রের বাকিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান ওসি দেবদুলাল ধর।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2023
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930

সর্বশেষ খবর

………………………..