সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৩
মহানগর সংবাদদাতা: বিশিষ্টজনের দাবি, সিলেট নগরীর পরিধি বাড়ায় টিলা কাটায় নতুন মাত্রা পেয়েছে। শীত, বর্ষা সব মৌসুমেই চলছে টিলা কাটা। দেখা গিয়েছে মাটি কাটার পর টিলা যখন অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যায়, তখন অভিযান চালায় পরিবেশ অধিদপ্তর। অন্যদিকে পরিবেশবাদীরা বলছেন, দিন দিন মানবসৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট। গত বর্ষা মৌসুমে এ ধরনের সংকট মোকাবেলা করতে হয়েছে সিলেটবাসীকে। যেখানে এক মাসে পৃথক টিলা ধসে প্রাণহানি ঘটেছিল অনেকের।
এদিকে জালালাবাদ থানাধীন আখালিয়া টিলার গাঁও মুক্তিযোদ্ধা টিলা পাশে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির শেল্টারে চলছে টিলা কেটে মাটি স্থানান্তর ও রাস্তা নিমার্ণের মহা-তান্ডব। এদিকে স্থানীয় অনেকের অভিযোগ এই টিলা কাটার সঙ্গে স্থানীয় থানা পুলিশের রয়েছে গভীর সংখ্যাতা যার ফলস্বরূপ তারা এসব দেখেও দেখছেন না।
সরজমিনে দেখা গেছে- আখালিয়া টিলার গাঁয়ে অবস্থিত হাজী আব্দুল গনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে মুক্তিযোদ্ধা পল্লী ২১৪০ নং দাগের জায়গার টিলা কয়েক দিন যাবৎ কাটা হচ্ছে এমনকি যাহার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে সরজমিনেও। টিলা কাটতে দেখা গেছে শ্রমিকদের তবে তারা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তারা শুধু দফায় দফায় একটা কথাই বলছেন যে আমরা শ্রমিক মানুষ আমরা টাকার বিনিময়ে এখানে মাটি কাটার কাজ করতে আসছি দয়া করে আমাদের কোন বিপদে ফলবেন না বলে তারা কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান- এই বিশাল টিলাটি কেটে মাটি স্থানান্তর ও রাস্তা নিমার্ণের মহা-তান্ডব চালাচ্ছেন জালালাবাদ থানাধীন বড়গুল এলাকার আব্দুল মান্নানের পুত্র ফয়জুল আলম। আর এই জায়গাটি অজ্ঞাতনামা একজন প্রবাসীর। ফয়জুল আলম এই প্রবাসীর জায়গার টিলা কেটে সমতল করার জন্য ৩ লাখ টাকার চুক্তিতে এই টিলা কাটার কাজ করছেন।
তারা আরোও বলেন- সম্প্রতি নগরীর পরিধি বেড়েছে। এতে বাসযোগ্য জায়গার দাম ও চাহিদা বেড়েছে। ফলে সেসব এলাকায় ব্যাপক টিলা কাটা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। না হয় সামনের বর্ষায় আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে পাহাড় টিলা। ধস ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে।
এব্যাপারে ফয়জুল আলম এর সাথে আলাপকালে তিনি টিলা কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- টিলার গাঁও হইতে বড়গুল পর্যন্ত রাস্তা না থাকায় রাস্তা নিমার্ণের জন্য আমি টিলাটা কাটছি। টিলা কাটার বৈধ কোন অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি সাফ জানান এসব কোন কিছু নেই।
‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো প্রয়োজনেই কোনো ধরনের পাহাড়-টিলা কাটা যাবে না। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে টিলা কাটা যেতে পারে। এ আইনের পরিপ্রেক্ষিতেও সিলেটে টিলা কাটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১১ সালের নভেম্বরে উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করে বেলা। ২০১২ সালে সেই রিটের রায়ে সিলেটে সব ধরনের টিলা কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন উচ্চ আদালত। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনো বলবৎ রয়েছে। তবে বন্ধ হয়নি টিলা কাটা, কেউ কারো কথা যেন শুনছে না।’
এব্যাপারে জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম রুকন -এর সরকারি সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট জেলার সহকারী পরিচালক বদরুল হুদার ব্যবহৃত সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- বিষয়টি আমার জানা নেই তবে অবিলম্বে এই বিষয়ে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd