সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক :: তিন মাসের ব্যবধানে দুই স্বামীকে হারালেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শারমিন বেগম। প্রায় তিন মাস আগে তার স্বামী হেলাল আহমদ মারা যান। এরপর দুই সন্তান নিয়ে মাসখানেক আগে পরিবারের লোকজন হেলালের স্ত্রী শারমিন বেগমকে (২৫) বিয়ে দেন ছোট ভাই দেবর দুলাল মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের দুই সপ্তাহ পর কাজের জন্য সিলেটে আসেন দুলাল। থাকতেন আম্বরখানা সাপ্লাই এলাকার ভাড়া বাসায়।
কিন্তু আজ বুধবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নাজিরবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুলাল মিয়া (২৬)। তিন মাসের ব্যবধানে দুই স্বামীকে হারিয়ে শারমিন এখন পাগল প্রায়।
দুপুরে লাশ হস্তান্তরকালে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আহত-নিহতদের স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। হাসপাতালের হিমঘরের পাশে স্বজনদের ভিড় লেগে আছে। মাটিতে গড়াগড়ি করে কাঁদছেন তাদের অনেকে। হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন নিহত দুলাল মিয়ার ফুপাতো ভাই মো. শাহীন। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন পাশে থাকা স্বজনরা।
মো. শাহীন জানান, দুলালের বড় ভাই হেলাল আহমদ প্রায় তিন মাস আগে দুর্ঘটনায় মারা যান। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে যান। মাসখানেক আগে পরিবারের লোকজন হেলালের স্ত্রী শারমিন বেগমকে (২৫) বিয়ে দেন দুলাল মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের দুই সপ্তাহ পর কাজের জন্য সিলেটে আসেন দুলাল। থাকতেন আম্বরখানা সাপ্লাই এলাকার ভাড়া বাসায়।
এদিকে হিমঘরের পাশে পাশে মাটিতে বসে আহাজহারি করছিলেন মেহের মিয়ার স্ত্রী চাঁদনী বেগম। আহাজারি করে তিনি বলেন, সকালে ডিম রান্না করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে না খেয়েই চলে যায়। এখন আমার বাচ্চাগুলো এতিম হয়ে গেলো। আমি টাকা চাই না। বাচ্চাদের বাবাকে চাই।
কাঁদতে কাঁদতেই চাঁদনী বলেন, গরমে কাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত দুইটার দিকে সে আমারে ডাক দেয়। বলে- তোর জন্য একটা ফ্যান কিনে দেবো। আমারে আ ফ্যান কিনে দিতে পারলো না।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত সাজেদুরের ভাই শের ইসলাম (৫৫)। ভাইকে হারিয়ে আহাজারি করছেন শের ইসলাম। তিনি বলেন, হঠাৎ করে বিপরীতমুখী একটি ট্রাক আমাদের দিকে ছুটে এসে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় আমাদের সবকিছু।
একই তথ্য জানিয়ে দুর্ঘটনা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিউল ইসলাম বলেন, হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রাক এসে আঘাত করলে আমাদের পিকআপ উল্টে যায়। ট্রাকটি সড়কে তার ডানে চলে এসেছিল। দুর্ঘটনায় আমি আর বাবা আহত হলেও প্রাণে বেঁচে আছি। তবে আমার বড় চাচা আর নেই।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd