ধলাই ব্রীজ রক্ষায় সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক মিলনের বাড়িতে পাথরখেকোদের হামলা

প্রকাশিত: ১:২০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২৩

ধলাই ব্রীজ রক্ষায় সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক মিলনের বাড়িতে পাথরখেকোদের হামলা

Manual3 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ’র কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিন মিলনের বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষে অন্তত ১৫/১৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এরমধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার কলাবাড়ী গ্রামে সাংবাদিক মঈন উদ্দিন মিলনের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ধলাই সেতু ধ্বংসকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফয়জুল, তারা মিয়া ও তজই হাজীসহ তাদের ১৫-২০ জনের একটি বাহিনী অতর্কিত এ হামলা চালায়। আহতরা হলেন- করিম মিয়া(৫৫), রফিক মিয়া(৪৭), মঈন উদ্দিন মিলন(৪২), আমির মিয়া(৩৭), হোসেন আহমদ(২৯), ফজিরুন নেছা(৩২), রুমেনা বেগম(১৭), রাহেনা বেগম, আসমা আক্তার ও দুলভি বেগম।

Manual7 Ad Code

স্থানীয়রা জানান, দিনের শেষের দিকে সবাই যখন ইফতারের প্রস্তুতি গ্রহণে ব্যস্ত। ঠিক তখনই মঈন উদ্দিন মিলনের বাড়ির সীমানা ঘেঁষা বাঁশের বেড়া তুলতে শুরু করেন প্রতিবেশী ফয়জুল আলী, তেরা মিয়া, তজই হাজী ও জৈনউদ্দিন গং।

এসময় মিলনের বড় ভাই রফিক উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে বেড়া তোলার কারণ জানতে চাইলে আগে থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ উৎপেতে থাকা ফয়জুল বাহিনী তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তাকে রক্ষার্থে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালানো হয়। এতে গুরুতর আহত হোন সাংবাদিক মিলন, তার বড় ভাই, ভাবী, ভাতিজাসহ একই বাড়ির ১০ জন। স্থানীয়রা আরও বলেন, হামলাকারীরা সাংবাদিক মিলনের প্রতিবেশী। দীর্ঘদিন থেকে তাদের মধ্যে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর আগেও একাধিকবার ফয়জুল বাহিনী হামলা করে বিরোধীয় জায়গাটি তাদের জবর দখলে রেখেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানান, ধলাই সেতুর নিচ থেকে অবৈধভাবে পাথর লুটপাটকারীদের সাথে হামলাকারীদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা তিনজনই ওই চক্রের সক্রিয় সদস্য। সাম্প্রতিক সময়ে ধলাই সেতু রক্ষায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় চাঁদাবাজ চক্র বিভিন্ন সময় হুমকি প্রদর্শন করেন। চাঁদাবাজদের ভয়ে গত তিনদিন ভয়ে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি সাংবাদিক মঈন উদ্দিন মিলন। হামলার আশঙ্কায় সিলেটের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেন মঈন উদ্দিন মিলন। ঘটনার দিন মঈন উদ্দিন মিলন বাড়িতে ফিরে আসলে পুরোনো জমি বিরোধের সূত্র ধরে পরিবারের সবাইকে অতর্কিত হামলা করে জখম করেন প্রতিপক্ষরা।

Manual3 Ad Code

স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধলাই সেতুর নিচ থেকে বালু-পাথর উত্তোলন করছে একটি চক্র। পুলিশ ও সাংবাদিকের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠে একই প্রেসক্লাবের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। উল্লেখিত সংবাদ প্রকাশের পরপরই উপজেলা জুড়ে সমলোচনার ঝড় উঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এরই জের ধরে হামলা করা হয় বলে জানান আহত সাংবাদিক মঈন উদ্দিন মিলন। মঈন উদ্দিন মিলন প্রতিবেদককে জানান, তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি একজন পাথর ব্যবসায়ী।

Manual1 Ad Code

সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাংবাদিক পরিচয় দানকারী আব্দুল আলীম আমার কাছে চাঁদা দাবী করেন। বিভিন্ন সময় আমি তাকে মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড ও চাঁদা দিয়েছি। চাঁদা পেয়েও ক্ষান্ত হয়নি আব্দুল আলীম। সে আমার দুই লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। মঈন উদ্দিন মিলন আরও জানান, ওই কথিত সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে অনুরোধ জানান। কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিবো-নিচ্ছি বলে ২৫দিন কাল ক্ষেপণ করলে বুধবার (০৫ এপ্রিল) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে একটি স্ট্যাটাস দেই। পরদিন বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) সিলেটের দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ’র অনলাইন ভার্সনে ‘বালু-পাথর খেকোদের তাণ্ডবে ধ্বংসের পথে ধলাই সেতু’ শিরোনামে এবং দৈনিক জাগ্রত সিলেট পত্রিকায় ‘ব্রিজের নিচ থেকে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন, শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছেন প্রভাবশালীরা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।

একই দিনে সিলেটের সর্বাধিক পঠিত অনলাইন গণমাধ্যম ক্রাইম সিলেট ডট কমে ‘ধলাই সেতু কি ধ্বংস করেই ছাড়বে বালু-পাথরখেকোরা?’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রিয় নিউজ পোর্টালে পাথর খেকো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ওই নামধারী সাংবাদিকের স্বার্থে বড় ধরনের আঘাত আসলে সে ফয়জুল বাহনীকে হামলার কাজে ব্যবহার করে। মঈন উদ্দিন মিলন সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক মিলন পরিবারের সাথে প্রতিবেশীর বিরোধটাকে পুঁজি করে ফয়জুল, তারা মিয়া ও তজই হাজীকে হাত করেন আব্দুল আলীম।তাদেরকে খুব সহজে জায়গা পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়েছে। জোরপূর্বক জায়গার দখল নিতে পরামর্শ দিয়েছে। হামলা-মামলা সব সে নিজ দায়িত্বে ও অর্থে মোকাবেলা করবে এমন আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে হামলায় জড়িয়েছেন। তিনি আরও জানান, হামলার পর থেকে সাংবাদিকের ইন্ধনের বিষয়টি এলাকায় চাউর হয়। কারণ, হামলার আগে ফয়জুল দু-এক জায়গায় এমন গল্প করেছেন যে, ‘খুব শীঘ্রই তারা জায়গাটির দখল নিচ্ছেন, তাদের সাথে একজন বড় মাপের সাংবাদিক আছে, এখন হামলা করলে আইনী ঝামেলা নেই ইত্যাদি।’ ঘটনার বিষয়ে শুক্রবার রাতে আব্দুল আলীমের ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও ফোনকলটি ব্যাস্ত থাকায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। হামলার ঘটনা নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিল্লোল রায় জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেয়েছি। দায়িদের বিরুদ্ধে অবশ্যই তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

April 2023
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

সর্বশেষ খবর

………………………..