সিলেট ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২২
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পথ চলতে চলতে হঠাৎ থমকে দাঁড়াতে হলো। সামনে দাঁড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের স্থপতি- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান! এ কী করে সম্ভব! ভড়কে যেতে হলো।
দৃষ্টিবিভ্রম কাটতে চলে গেলো বেশ কয়েক সেকেন্ড। পরক্ষণেই ‘বঙ্গবন্ধুকে’ ঘিরে সৃষ্টি হয়ে গেলো জটলা। পোশাক, চলন-বলন ও বেশভূষা অনেকটাই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মিলে যায়। তবে তিনি পুরো বাঙালি জাতির সেই অমর নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নন। জানা গেলো- বঙ্গবন্ধুর মতো দেখতে অবিকল ওই ব্যক্তির নাম আরুক মুন্সী। তাঁর বাড়ি গোপালগেঞ্জর কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের কামারোল গ্রামে।
সিলেটভিউ’র কাছে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি ও মন্তব্য তুলে ধরলেন সিলেটের জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহ মাদরাসার ছানাউয়্যাহ উলইয়ার (একাদশ শ্রেণি) শিক্ষার্থী শাহ এমদাদ উল্যাহ।
তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন- আজ (শুক্রবার) জুমআর নামাজের পর মাদরাসা ক্যাম্পাস থেকে বাইরে বের হয়েছি- ঠিক তখন রাস্তায় বঙ্গবন্ধুর মতো দেখতে অবিকল আরুক মুন্সীর হঠাৎ দেখা। প্রথমে থমকে দাঁড়িয়েছি। পরে জানতে পারলাম ওই ব্যক্তির বাড়িও গোপালগঞ্জ।
শাহ এমদাদ উল্যাহ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন- বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি। কিন্তু তাঁর মতো চেহারার ব্যক্তিকে দেখেই কেমন বুকের রক্ত ছলকে উঠলো। মুহুর্তেই যেন অনুভব করতে পারলাম- শেখ মুজিবুর রহমানের এক গর্জনে কীভাবে পুরো জাতি এক হয়ে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে কীভাবে লাখো বাঙালি লাল-সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনতে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলো হাসতে হাসতে।
এমদাদ উল্যাহ জানান- আমার জানামতে, গত ৩ দিন থেকে আরুক মুন্সী সিলেটের দরগাহ মাজার এলাকায় আছেন। হয়তো বেড়াতে এসেছেন, তবে এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি। তার সঙ্গে একা কথা বলাই মুশকিল। তাকে দেখামাত্র জটলা তৈরি হয়ে যায়। উৎসুক জনতা বঙ্গবন্ধুর মতো ভাষণ দেওয়ার বায়না ধরেন তাঁর কাছে। তখন তিনিও মানুষের আবদার পুরণ করেন।
জানা যায়, গোপালগেঞ্জর কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত কামারোল গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে ১৯৬৯ সালের ৬ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন আরুক মুন্সী। তিন ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন ঢাকার হাতিরপুল পাওয়ার হাউজ এলাকায়। ১৯৯৩ সাল থেকে গাড়ি চালক পদে চাকরি করেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে (ডিপিডিসি)। ৮ম শ্রেণি পাশ বলে নিয়মিত চাকরিতে পদোন্নতি পাননি তিনি।
তবে বঙ্গবন্ধুর চেহারার সঙ্গে তার মিল থাকায় তিনি যেখানেই যান, সব জায়গাতেই মানুষের ভালোবাসা পান। বঙ্গবন্ধু ভক্তদের আগ্রহ থাকে তাকে ঘিরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাকে দেখতে ছুটে যান বঙ্গবন্ধুভক্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন ভক্তরা। ছবি তোলেন তার সঙ্গে।
তবে নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করতে নারাজ আরুক মুন্সী। তিনি মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় আর কোনো বঙ্গবন্ধু জন্মাবে না। তাই নিজেকে তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলেই ভাবেন। বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে চলতে চান। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজের অবস্থান থেকে কাজ করতে চান।
আরুক মুন্সী স্বপ্ন দেখেন ও বিশ্বাস করেন- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd