সিলেট ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:০৩ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২২
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা :: সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। নিম্নাঞ্চলে বাড়ছে পানির চাপ। খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর সেনিটেশনের অভাবে মানেবতর জীবন কাটছে জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, ধর্মাপাশা উপজেলার লাখো মানুষের। উজান থেকে আসা পানি জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এসব এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শশ্মানসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ের যাওয়ার সংবাদ পাওয়াগেছে।
শুক্রবার দিনে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যার স্থায়িত্ব বাড়ার শঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে টানা সময় ধরে পানিবন্দী অবস্থায় থাকায় বন্যা কবলিত অনেকের বাড়িতে ডুবেগেছে রান্নাঘর,বাথরুম, টিউবওয়েলসহ থাকার জায়গা।
এসব এলাকায় তীব্র খাবার, বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উপায় না পেয়ে পানির মধ্যেই প্রাকৃতিক কাজ সারছেন অনেকেই। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বন্যা কবলিত পরিবারের শিশু ও বয়স্করা। বন্যার্ত এলাকায় ত্রাণ সহযোগিতা পৌঁছে দেয়ার কথা বলা হলেও এখনো অনেক জায়গায় কোনো ত্রাণ সহযোগিতা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই কোনো সময় শুকনো খাবার বা কোনো সময় না খেয়ে সময় পার করতে হচ্ছে বানবাসীদের।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম তেঘরিয়ার বাসিন্দা স্বপ্না বেগম বলেন, ঘরে চারদিন হলো পানি। আশেপাশে আশ্রয়ের কোনো জায়গা না থাকায় নিরুপায় হয়ে খাটের উপরে নির্ঘুম রাত কাটছে। চুলা ডুবেগেছে। স্বামী কাজ করতে না পারায় খাবারও কিনতেও পারছি না। এখনো কেউ আমাদের খবর নেয়নি। আমাদের মতো গরিবের চোখের জল দেখার কেউ নেই।
আছিয়া বেগম নামের আরেক বন্যার্ত নারী বলেন, ঘরে ৩টি ছোট ছোট ছেলে মেয়ে। স্বামী নেই। মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই। বন্যার কারনে কাজে যেতে পানি। ঘরে হাটুর উপরে পানি। টেবিলের উপরে অস্থায়ি চুলায় একবেলা রান্না করি। বাথরুম ডুবেগেছে। মহা এক বিপদে আছি। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে ঘর ছেড়ে স্কুলে উঠতে হবে। তিনি বলেন, সরকার এতো সাহায্য দেয় যা আমাদের ভাগ্যে জুটে না।
এদিকে সদর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ নিতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছোটে আসেন শত শত মানুষ। পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে অনেকেই ফিরেগেছেন কোনো ধরণের সহযোগিতা ছাড়াই।
অপরদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বন্যার্ত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সহযোগিতা ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যার্তদের আশ্রয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলে দেয়া হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বানবাসীদের পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd