সুদখোর মিলনের প্রতারণা, সহযোগীতায় সিলেট বিআরটিএ

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২২

সুদখোর মিলনের প্রতারণা, সহযোগীতায় সিলেট বিআরটিএ

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: সিলেটে বিনা লোকসানে রাতারাতি কোটিপতি বনে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ পরিচয়দানকারি প্রতারক সুদখোর মিলন ও তার পরিবার। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই নিজের খেয়াল খুশি মতো উচ্চ মাত্রার লাভে নগরীর লন্ডনী রোডস্থ হাজী পাড়া এলাকায় সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মিলন ও তার মাতা সুফিয়া বেগম। স্বর্ণ বা যানবাহন বন্ধক রেখে সুদ গ্রহিতার কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও ফাঁকা চেক নিয়ে জিম্মি করছে সাধারণ মানুষদের। মিলনের পরিবারের খপ্পরে পড়ে অনেক মানুষ আজ সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। সম্প্রতি তাদের কাছে নগরীর কাজিটুলার এলাকার এক সিএনজি অটোরিকশা চালক প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানায় এবং সিলেট বিআরটিএ অফিসে। আব্দুস ছোবহান মিলন। নগরীর লন্ডনী রোডস্থ হাজী পাড়ার নিলাচল-২৩ নং বাসার মৃত রইছ মিয়ার ছেলে। তার মাতা সুফিয়া বেগম। মা-ছেলে দুজনেই সুদী ব্যবসায়ী। মিলনের আরো এক পরিচয় রয়েছে। সে মহানগরের ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। সাবেক এই পদ ব্যবহার করে গরীব,অসহায় মানুষদের করছেন নিঃষ, দিচ্ছেন হুমকি! অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর কাজিটুলার এলাকার এক সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির তার বিশেষ প্রয়োজনে মিলনের তার মাতা সুফিয়া বেগমের কাছ থেকে গত ২৬ জানুয়ারী ১০ দিনের জন্য ২০ হাজার টাকা লাভে তার নিজ নামিয়ও সিলেট-থ-১২-৮৫৩১ নাম্বার সিএনজি অটোরিকশা বন্ধক রেখে ৬৫ হাজার টাকা এনেছিলেন। ১০ দিন পরে ৫ ফেব্রুয়ারী তাদের ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে তার সিএনজি অটোরিকশা ছাড়িয়ে আনবেন। এ সময় মিলন ও তার মাতা সাব্বিরের সাথে একটি অঙ্গীকারনামা স্টাম্পও করেন। যথারিতি ৫ ফেব্রুয়ারী নিজের গাড়ি ছাড়িয়ে আনতে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির যায় তাদের বাড়িতে। কিন্তু ৫ হাজার টাকা কম থাকায় মিলন ও তার মাতা সুফিয়া বেগম ১ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন ৬ ফেব্রুয়ারী সাব্বির অনেক কষ্টে ৫ হাজার টাকা যোগার করে মোট ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে গেলে মা ছেলে মিলে সাব্বিরকে হুমকি দেয় এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও তার সিএনজি অটোরিকশাটি (সিলেট-থ-১২-৮৫৩১) তাদের বাড়ি থেকে সরিয়ে নেয়। পরে এলাকার স্থানীয় মুরুব্বীদের কাছে বিচার প্রার্থী হয় সাব্বির। এতেও সারা দেয়নি মিলন ও তার মা সুফিয়া বেগম। মূলত তাদের উদ্দেশ্য ছিলো সাব্বিরের সিএনজি অটোরিকশাটি হজম করার। স্থানীয় মুরুব্বীরাও ব্যর্থ হন তাদের কাছে। পরে সে গত ৭ মার্চ সোমবার এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করে সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির। পরে ৯ মার্চ বুধবার এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ নিয়ে রাতে মিলনের বাড়িতে গেলে মিলন জানায়, সাব্বির তার সিএনজি অটোরিকশা সিলেট-থ-১২-৮৫৩১ মিলনের কাছে বিক্রি করেছে। এবং আজ বুধবার ৯ মার্চ বিকেলে সিলেট বিআরটিএ-তে মিলনের নামে মালিকানা বদলী হয়েছে। পরদিন ১০ মার্চ বৃহস্পতিবার সিলেট বিআরটিএ অফিসে গিয়ে সাব্বির অভিযোগ মালিকানা বদলীর বিষয়ে অভিযোগ করে। সাব্বিরের এমন অভিযোগে নড়েচরে বসে সিলেট বিআরটিএ- কর্তৃপক্ষ। নিজেদের দায় এড়াতে বিআরটিএ’র রের্কড কিপার দিলোয়ার সাব্বিরকে সাথে নিয়ে কুদরত উল্লাহ্ মার্কেটের একটি ফটোস্ট্যাটের দোকানে নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করান। সেই অভিযোগে তিনি উল্ল্যেখ করান এ বিষয়ে সিলেট বিআরটিএ অফিসের কোনো কর্মচারী বা কর্মকর্তার কোনো হাত নেই! পরে বিআরটিএ- কর্তৃপক্ষ মিলনকে ডেকে এনে গাড়ির সেল রিসিট এবং বিআরটিএ অফিসে বসে মালিকের স্বাক্ষর দেয়ার ছবি চাইলে সে কিছুই দেখাতে পারেনি। মালিকানা বদলীর নথি এবং সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ দেখেন গত বুধবার ৯ মার্চ সাব্বির বিআরটিএ অফিসে উপস্থিথ হয়নি। এবং ছবিতে যে ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছে সে সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির নন! সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির জানান, মিলন ও তার মাতা সুফিয়া বেগম প্রতারণা করে আমার স্বাক্ষর জাল করে গাড়ির সেল রিসিট তৈরি করে সিলেট বিআরটিএ কিছু অসাধু কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার গাড়ির মালিকানা বদলি করেছে। মিলন ও তার মায়ের পিছনে ঘুড়তে ঘুড়তে আমি আজ নিঃষ হবার পথে। তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমি শুধু আমার গাড়িটির মালিকানা বদলী কাগজ বাতিলের দাবি জানাই সিলেট বিআরটিএ’র কাছে আর আমার গাড়িটি ফেরত চাই। বিষয়টি জানতে সিলেট বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক সানাউল হককে তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। সুদুরিতো সুদুরি, সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারেন না। তাদের অবহেলায় গরীব অসহায় সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির আজ নিঃষ হতে চলেছে। মালিকানা বদলীতে প্রকৃত মালিক এসে বিআরটিএ অফিসে স্বাক্ষর করবে এটাই নিয়ম। সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করেছে সে বিআরটি এডি’র কক্ষে এসে স্বাক্ষর করেনি এবং তার গাড়িও বিক্রি করেনি। সিলেট বিআরটিএ’র বিরুদ্ধে অনেকের অভিযোগ ঘুষের বিনিময়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগীতায় মালিকানা বদলী হচ্ছে। এ কারনেই সাব্বিরের মত অনেক গরীব আজ ধ্বংষের পথে। তবে কি সেই অভিযোগ আজ প্রমাণিত হল। টাকার বিনিময়ে মালিক ছাড়া যে কারো গাড়ির মালিকানা বদলী হয় সিলেট বিআরটিএ’তে ?

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

March 2022
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..